চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমু (৩৫) হত্যা মামলায় তার স্বামী সাখাওয়াত আলী নোবেল ও গাড়িচালক এসএম ফরহাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৩ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের আদালতে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন কোনো সাক্ষী না আসায় রাষ্ট্রপক্ষ সময়ের আবেদন করে। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৩ মে দিন ধার্য করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডিশনাল পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আনোয়ার সরদার বিষয়টি জানিয়েছেন। এখন পর্যন্ত মামলাটিতে ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
গত বছরের ১৭ জানুয়ারি ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারের পর প্রথম দিকে তার পরিচয় পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ওইদিন রাতে ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে তার নাম-পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নোবেল ও তার গাড়িচালকের বিরুদ্ধে মামলা করেন শিমুর ভাই হারুনুর রশীদ। এ ছাড়া মামলায় বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
এদিকে শিমুকে হত্যার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে দায় স্বীকার করেন তার স্বামী নোবেল। পারিবারিক ও দাম্পত্যকলহের জেরে শিমুকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ঘটনার পরদিন ১৮ জানুয়ারি ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন সরদার। এসপি মারুফ বলেন, ‘এ ঘটনার পর আমরা শিমুর স্বামী নোবেল ও বন্ধু ফরহাদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনি। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সংশ্লিষ্টতা প্রতীয়মান হওয়ায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।’
হত্যার কারণ জানতে চাইলে জেলার পুলিশ সুপার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক ও দাম্পত্যজীবনে কলহ থাকায় তাকে (শিমু) হত্যা করা হয়েছে বলে জানায় নোবেল। আর হত্যার পর লাশ গুমে সে বন্ধু ফরহাদের সহযোগিতা নেয়। চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধারের পর তার স্বামী সাখাওয়াত আলী নোবেল ও ফরহাদকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাবের একটি সূত্র জানায়, গাড়িচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে র্যাবের কাছে তিনি কিছু তথ্য দেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় স্বামী নোবেল এ খুনের দায় স্বীকার করেছেন। তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া খুনের আলামত প্রাইভেটকারের ব্যাকডালায় দেখা যায়। প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়।
মামলার তদন্ত শেষে গত ২৯ আগস্ট শিমুর স্বামী সাখাওয়াত আলী নোবেল ও এস এম ফরহাদের বিরুদ্ধে তদন্তকারী কর্মকর্তা কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
পরে ২৯ নভেম্বর শিমুর স্বামী সাখাওয়াত আলী নোবেল ও এস এম ফরহাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এদিন দুই আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
শিমু সিনেমায় আত্মপ্রকাশ করেছিলেন ১৯৯৮ সালে। ২০০৪ সাল পর্যন্ত নিয়মিত বড় পর্দায় দেখা গেছে তাকে। প্রথম সারির পরিচালকদের সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন শিমু। এরপর কয়েক বছর ধরে তিনি নাটকের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।