২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০১:২৯:১০ অপরাহ্ন


নেতিবাচক চিন্তা দূর করতে দেখেনিন কিছু তথ্য
ফারহানা জেরিন:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৩-২০২৩
নেতিবাচক চিন্তা দূর করতে দেখেনিন কিছু তথ্য ফাইল ফটো


দুঃখ ছাড়া কোনো জীবন হয়না। প্রতিটি মানুষের জীবনেই কিছু অপূর্ণতা থাকে। অধিকাংশ মানুষকে বাইরে থেকে হাসি-খুশি মনে হলেও সবাই শতভাগ সুখি কেউ নয়। একেকজন মানুষের রয়েছে একেক রকম না পাওয়া। আমাদের চেষ্টা করতে হবে, এই না পাওয়াগুলোকে ভুলে, আমরা কিভাবে সামনে এগিয়ে যেতে পারবো সেই চেষ্টা করতে হবে। মন ভালো রাখার জন্য সব সময় ইতবাচক চিন্তা করতে হবে। আমাদের মন যতো বেশি ভালো থাকবে, আমরা মানসিকভাবে হব ততোটাই শক্তিশালী। মানসিক শক্তি বাড়ানোর জন্য আমাদের প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকা ভীষণ জরুরি।

মানসিক প্রশান্তি পেতে
ধর্ম, কর্ম, ইয়োগা, ধ্যান, মেডিটেশন, সৃজনশীল কাজ, নিজেকে জনকল্যাণমূলক কাজে নিয়োজিত রাখতে পারলে আমরা ভালো থাকবো। এই ধরণের কাজগুলো বাড়িয়ে তোলে আমাদের মানসিক শক্তি। চেষ্টা করতে হবে জীবিকার পাশাপাশি সৃজনশীল কাজ বা আত্মউন্নয়নমূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখার জন্য। তাহলে নেতিবাচক চিন্তা, হতাশা, দুঃখ, কষ্ট সহজে মনকে দুর্বল করতে পারবে না। আপনি যে ধর্মেরই হোন না কেন; নিয়মিত ধর্মকর্ম, মেডিটেশন, ধ্যান আপনাকে দিবে মানসিক প্রশান্তি। প্রতিটি ধর্মের প্রার্থনায় ধ্যান বিষয়টা কিছুটা হলেও চলে আসে। তাই নিয়মিত ধর্মকর্ম করলে মস্তিষ্কের বিশ্রাম হয়। মস্তিষ্কের বিশ্রাম হলে মানুষের মস্তিষ্ক দ্বিগুণ কর্মক্ষম হয়ে ওঠে। আমাদের মাথার মধ্যে রয়েছে অগণিত শিরা-উপশিরা ও স্নায়ু। আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি তখনও এই শিরা, উপশিরা ও স্নায়ু কাজ করতে থাকে। তবে জেগে থাকা অবস্থায় মস্তিষ্কের স্নায়ুগুলো কাজ করে তুলনামূলকভাবে বেশি।

কর্মতৎপর স্নায়ু
মাতৃগর্ভে থাকাকালীন একটি শিশুর মস্তিষ্ক তৈরি হতে থাকে। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত চলতে থাকে মস্তিষ্কের বিরামহীন যাত্রা। আমরা যখন প্রার্থনা, ধ্যান বা মেডিটেশান করি তখন আমাদের মস্তিষ্কের শিরা-উপশিরা ও স্নায়ুগুলোর বিশ্রাম হয়। অনেক কাজ করার পরে মানুষের যেমন বিশ্রাম প্রয়োজন, ঠিক তেমনই আমাদের মস্তিষ্কেরও বিশ্রাম প্রয়োজন। আমাদের মস্তিষ্কে রয়েছে মাকড়শার জালের মতো অসংখ্য স্নায়ু। এই স্নায়ুগুলো মাথা থেকে পায়ের আঙুল পর্যন্ত বিস্তৃত। স্নায়ুগুলো যতো বেশি কর্মতৎপর হবে, আমরা ততো বেশি কর্মক্ষম হয়ে উঠবো। সেজন্য ইতিবাচক চিন্তা, ধর্মকর্ম, ভালোলাগার কাজগুলো ভীষণ জরুরি। আমাদের রক্তে হরমোন নামে ভীষণ জরুরি এক উপাদান রয়েছে। হরমোনগুলো সংখ্যায় একাধিক এবং প্রতিটি হরমোন দেহের জন্য পালন করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। সৃজনশীল কাজ, ধর্মকর্ম, ইয়োগা, মেডিটেশন আমাদের রক্তে সেরোটোনিন নামের এক ধরণের হরমোন লেভেলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এই হরমোনের মাত্রা রক্তে বৃদ্ধি পেলে, মানুষ কাজে উৎসাহ পায়। মানুষের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়।

ঘুরে দাঁড়ান
জীবনে ব্যর্থতা থাকবেই। আমাদের চেষ্টা করতে হবে, বারবার ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য। জীবনের ধ্বংসস্তুপের মাঝেও ইতিবাচক চিন্তা আমাদের দেবে মানসিক শক্তি। জোর করে মন ভালো করার চেষ্টা করতে হবে। যতো বেশি হতাশা বা বিষণ্নতা আমাদের গ্রাস করবে, আমরা ততোটাই এগিয়ে যাবো ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপের দিকে। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশসহ বর্তমানে বাংলাদেশেও অসংখ্য তরুণ তরুণী ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত। এর অন্যতম প্রধান কারণ দুঃখ, কষ্ট, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, হতাশা, বিষণ্নতা। বছরের পর বছর হতাশায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে আমাদের সমাজে অনেকেই মানসিক রেগের শিকার হয়। যা অনেক সময় ধরা পড়েনা। মানসিক রোগ অনেক সময় চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে ধরা পড়ে। এই ধরণের পরিণতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আমাদের নিজেকে ভালোবাসতে হবে। নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ রাখার জন্য সব সময় ইতিবাচক চিন্তা করতে হবে।

সৃজনশীল কাজ
আপনার সৃজনশীল কোনো কাজের প্রতি ভালোবাসা থাকলে সেই কাজগুলো করার চেষ্টা করবেন। ইউটিউবে বিভিন্ন ধরণের আত্মউন্নয়নমূলক ভিডিও আছে। এই ধরণের ভিডিওগুলো বাড়িয়ে তুলবে আমাদের মানসিক শক্তি। বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তি বিভিন্ন সময়ে বক্তৃতা দিয়েছেন বা তাদের সাক্ষাৎকারগুলো দেখলেই আমরা উপলব্ধি করতে পারবো যে, তারা কতোটা দুঃখ, কষ্টকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে গেছেন। পৃথিবীর অসংখ্য মনীষী সীমাহীন যুদ্ধ করে, অনেকেই চরম অভাব ও দারিদ্র্য জয় করে সফল হয়েছেন। ইতিহাসের পাতায় লিখিয়েছেন তাদের নাম। তাদের জীবনী পর্যালোচনা করলেই দেখা যাবে, তারা প্রায় সবাই ছিলেন ইতিবাচক চিন্তার মানুষ। ইতিবাচক চিন্তা মানুষের আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে তোলে কয়েক গুণ। আমরা চোখের জল লুকিয়ে ইতিবাচক চিন্তা করবো। জীবনযুদ্ধে আমাদের সফল হতেই হবে।