সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে কোটিপতি হওয়ার লোভে আইডিএ (আইডিএ) অ্যাপে টাকা বিনিয়োগ করছেন হাজারো মানুষ। বাংলাদেশে এর কোনো অফিস কিংবা ঠিকানা না থাকলেও অনলাইনের মাধ্যমে টাকা বিনিয়োগ করলেই লাভ হবে এই আশায় ঝুঁকছেন অনেকেই। বর্তমানে এই উপজেলায় অ্যাপটির গ্রাহক কয়েক হাজার।
বলা হয়ে থাকে, এসব সাইটের অধিকাংশ পরিচালিত হয় রাশিয়া, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশ থেকে। বিদেশ থেকে পরিচালিত এসব সাইট বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেয় এজেন্টরা। কিন্তু বাস্তবতা পুরোটাই ভিন্ন। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, কতিপয় অসাধু চক্র মিলে এসব সাইট শুরু কর মূলত বাংলাদেশে বসেই৷ এরপর বিভিন্ন দেশের নাম করে এজেন্ট পরিচয় দিয়ে নিজেরাই ছড়িয়ে দেয় সাধারণ মানুষের মধ্যে। এভাবে নির্দিষ্ট অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে এক সময় লাপাত্তা হয়ে যায়, প্রতারণার শিকার হয় হাজারো মানুষ।
আইডিএ অ্যাপসে সর্বনিম্ন ১৪ হাজার থেকে শুরু করে ইচ্ছে মতো বিনিয়োগ করা যায়। প্রতিদিন সর্বনিম্ন ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে বিনিয়োগের টাকার ওপর ভিত্তি করে অ্যাকাউন্টে লাভের টাকা যোগ হচ্ছে।উপজেলার খাষপুখুরিয়া ইউনিয়ন, সদর ইউনিয়ন, বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চর নাকালিয়া, বিনানই, রেহাই পুখুরিয়াসহ আশপাশের এলাকায় অ্যাপটি ছড়িয়ে পড়েছে। এসব এলাকার শিশু-কিশোর থেকে বয়োঃবৃদ্ধ সবাই এই অ্যাপে আসক্ত হয়ে পড়ছেন।কেউ কেউ গরু-ছাগল বিক্রি করে সুদের টাকা নিয়ে এবং বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে নতুন ফোন কিনে এই অ্যাপে বিনিয়োগ করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ উপজেলার সর্বপ্রথম মো. ফরিদ হোসেন নামের এক যুবক বিনিয়োগ শুরু করেন। তার মাধ্যমেই সারা উপজেলা ছড়িয়ে পড়ে। নিজে আইডি খোলার পর ১০ জনকে রেফার করলে তিনি টিম লিডার হবেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই অ্যাপ ব্যবহারকারী অনেকেই জানান, ফরিদের মাধ্যমেই তারা এই অ্যাপের সন্ধান পান। এই অ্যাপে বিনিয়োগ করলে কয়েকগুণ লাভ পাওয়া যাবে, এই আশায় তারা বিনিয়োগ করেছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে অনেকেই বেশি রেফার করায় আইফোনসহ দামি উপহার পেয়েছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে ফরিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। চৌহালী থানার ওসি হারুন অর রশিদ বলেন, মানুষকে প্রথমত সচেতন হতে হবে এবং আপনারা মানুষকে সচেতন করবেন। এ উপজেলায় যদি কেউ অবৈধ অ্যাপ ব্যবহার করে থাকে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য যে, এর আগেও কয়েকটি অসাধু চক্র মিলে সিরাজগঞ্জে ভিউ ক্যাশ, টাচ আর্ন প্রভৃতি নামে অনলাইন সাইট খুলে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা, প্রতারিত হয়েছে হাজার হাজার গ্রাহক। সকল লেনদেন অনলাইনে হওয়ায় আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া যায়নি, যার দরুন কোনও ভাবেই থামছে না এই অনলাইন প্রতারণার ফাঁদ।