২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ১০:০২:৩০ অপরাহ্ন


শক্তিশালী বায়ার্নের বিপক্ষে টিকে থাকার লড়াই পিএসজির
ক্রীড়া ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০৩-২০২৩
শক্তিশালী বায়ার্নের বিপক্ষে টিকে থাকার লড়াই পিএসজির ছবি: সংগৃহীত


চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলর দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে বুধবার (৮ মার্চ) পিএসজিকে আতিথ্য দিবে বায়ার্ন মিউনিখ। দলীয় শক্তি বিচারে প্রথমবারের মত সাদিও মানে ও মাথিস ডি লিটের মত তারকার অন্তর্ভুক্তি নিঃসন্দেহে বায়ার্নকে কিছুই হলেও এগিয়ে রাখবে।  

বুন্দেসলিগায় টানা ১০টি শিরোপা জয় করা বায়ার্ন গত গ্রীষ্মে ইউরোপিয়ান সাফল্যকে মাথায় রেখেই এই দুই তারকাকে দলে নিয়েছিল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলর প্রথম লেগে পার্ক ডি প্রিন্সেসে দ্বিতীয়ার্ধে সাবেক পিএসজি ফরোয়ার্ড কিংসলে কোম্যানের করা গোলে জয় পায় বায়ার্ন মিউনিখ। ২০১৯-২০ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে এই একই স্কোরলাইন ও একই গোলদাতার মাধ্যমে শিরোপা জয় করেছিল বায়ার্ন। কোয়ার্টার ফাইনালে পথে এখন শুধুমাত্র বায়ার্নকে হার এড়াতে হবে। 

কিন্তু পিএসজি বস ক্রিস্টোফে গাল্টিয়ারের মত বায়ার্নের ম্যানেজার জুলিয়ান নাগলসম্যানও জানেন ইউরোপিয়ান আসর থেকে বিদায়ের অর্থ হলো ঘরোয়া মৌসুমের সব ফলাফলই ম্লান হয়ে যাওয়া। নাগলসম্যান বলেছেন শনিবার স্টুটগার্টের বিপক্ষে দলের কষ্টার্জিত জয়টা তাদের প্রকৃত চেহারা নয়। পিএসজির বিরুদ্ধে তার দল যে ধরনের মানসিকতা দেখিয়েছে সেটাই তারা পুরো মৌসুমে বারবার করে দেখাতে চায়। 

ইউরোপ থেকে একটু আগে ভাগে বিদায় কোনভাবেই বায়ার্ন এবার আর মেনে নিবে না। যদিও প্রতিপক্ষ হিসেবে পিএসজির সক্ষমতায় বিবেচনায় আনতে হচ্ছে। গত ১০ বছরে মাত্র একবারই কোয়ার্টার ফাইনালে আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নিয়েছিল বায়ার্ন। এক দশকের মধ্যে তারা দুইবার ইউরোপিয়ান কাপ ঘরে নিয়েছে। ২০১৮-১৯ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলের বিরুদ্ধে তাদের সেই একমাত্র বিদায়টি ঘটেছিল। ঐ একই মৌসুমে বায়ার্ন লিগ ও কাপ শিরোপা জয় করেছিল। কিন্তু তৎকালীন ম্যানেজার নিকো কোভাচের অধীনে ইউরোপে সাফল্য না পাওয়ায় ঘরোয়া দুই আসরের শিরোপার আনন্দ ম্লান হয়ে গিয়েছিল। 

স্টুটগার্টের সঙ্গে ২-১ গোলের জয়েল পর নাগলেসম্যান ড্রেসিং রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে শিষ্যদের একটাই বার্তা দিয়েছিলেন প্যারিসের জায়ান্টদেও বিপক্ষে তাদের জয়ের বিকল্প নেই। ৩৫ বছর বয়সি নাগলেসম্যান এ সম্পর্কে স্কাই স্পোর্টসকে বলেছেন, ‘আমি তাদের বলেছিলাম বুধবার আমাদের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচ আছে। আমাদের নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। তারা এমন একটি দল যাদের পরাজিত করা কঠিন। ইউরোপে অন্যতম সেরা দল পিএসজি।’

এই মুহূর্তে দলের সব নজর রয়েছে মানের উপর। ইউরোপিয়ান আসরে যার নিয়মিত পারফর্ম করার অভ্যাস রয়েছে। লিভারপুলের হয়ে তার গোলে বায়ার্নের বিদায় নিশ্চিত হয়েছিল। ২০২২ সালের গ্রীষ্মে লিভারপুল থেকে মিউনিখে এসেছিলেন মানে। আগের পাঁচটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে তিনটিতেই তিনি খেলেছেন। এর মধ্যে একটিতে জয়ী হয়েছে, আরেকটিতে গোল পেয়েছেন। গত চার মাসের মধ্যে প্রথমবারের মত বুধবারের ম্যাচে তার মূল একাদশে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। পায়ের ইনজুরির কারণে তিনি দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে ছিলেন, সেনেগালের হয়ে বিশ্বকাপেও খেলতে পারেননি। ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরার পর দুটি লিগ ম্যাচে বদলি বেঞ্চে থেকে খেলেছেন। নিজের সেরা ফর্ম ফিরে পেতে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। শনিবারের ম্যাচে বদলি বেঞ্চ থেকে উঠে এসে ৩০ মিনিট মানে মাঠে ছিলেন। নাগলসম্যান বলেন, স্বাভাবিক ছন্দ ফিরে পেতে তাকে আরও কিছুটা সময় দিতে হবে। আশা করা হচ্ছে কাল তিনি মূল দলেই খেলবেন। 

এদিকে মানের পিছনে রক্ষণভাগের কেন্দ্রবিন্দুতে ডি লিটের উপরই মুল ভরসা করে আছেন নাগলসম্যান। পিএসজির লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপ্পেকে আটকাতে ডি লিটের বাড়তি নজর সবসময়ই থাকবে। জুভেন্টাস থেকে জার্মানীতে আসার পর মানের থেকে কিছুটা বেশি ম্যাচ খেলেনে ডি লিট। যদিও প্রথমদিকে বদলি বেঞ্চেই বেশি সময় কাটিয়েছেন। ফরাসি তারকা লুকাস হার্নান্দেজ কাতারে পেশীর ইনজুরিতে পড়ায় ডি লিটের দরজা খুলে যায়। শনিবার ডি লিটও বায়ার্নের হয়ে এবারের মৌসুমের সেরা ম্যাচ খেলেছেন। লাইনের উপর থেকে গোল ক্লিয়ার করেছেন। ইনজুরির কারণে নেইমার কালকের ম্যাচে খেলতে না পারলেও ডাচ এই ডিফেন্ডার প্যারিসের বাকি দুই বিপদজনক স্ট্রাইকার এমবাপ্পে ও মেসির দিকে বাড়তি নজর রাখার প্রতি সতর্ক করেছেন।