২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:১০:৪১ অপরাহ্ন


ময়মনসিংহে কিডনির পাথর অপারেশনে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর মৃত্যু
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০২-২০২৩
ময়মনসিংহে কিডনির পাথর অপারেশনে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর মৃত্যু ফাইল ফটো


ময়মনসিংহে কিডনির পাথর অপারেশন করার পর রেখা আক্তার (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে নগরীর চর ব্রাহ্মপল্লী এলাকার পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

রেখা আক্তার ত্রিশাল উপজেলার বালিপাড়া এলাকার মাহবুল আলমের স্ত্রী। তিনি ১৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তার যমজ সন্তান হওয়ার কথা ছিল।

রেখার স্বামী মাহবুল আলম বলেন, আমার স্ত্রীর গর্ভে যমজ সন্তান ছিল। সম্প্রতি পরীক্ষা করে তার কিডনিতে পাথর আছে বলে জানতে পারি। এমতাবস্থায় একজনের পরামর্শে পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরে ক্লিনিকে আনার পর সেখান থেকে জানায় পেটে বাচ্চা রেখেই পাথরের অপারেশন করা যাবে এবং কোনো সমস্যা হবে না।

তিনি আরও বলেন, পরে বৃহস্পতিবার রাতে রেখাকে পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করি। প্রথমে রাত ৮টায় অপারেশন করার কথা ছিল। পরে ১০টায় অপারেশন করবে বলে জানায়। কিন্তু রাত ১০টায় অপারেশন না করে ১টার দিকে অপারেশন করে। অপারেশন শুরুর পর ওটির ভেতরে থেকে চিৎকার করার শব্দ শুনতে পাই। চিৎকার করার কারণ একজন নার্সের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অজ্ঞান করার ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। তাই এমন চিৎকার করছে। এরপরও বহুবার আমরা ওটির ভেতর থেকে চিৎকার করার শব্দ শুনতে পাই। অপারেশন শেষে পোস্ট অপারেটিভ রুমে রেখে সবাই চলে যায়। 

মাহবুল আলম বলেন, পরে রাত ৩টার দিকে আমি পোস্ট অপারেটিভ রুমে গিয়ে রেখার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে নার্সকে বিষয়টি জানাই। নার্স এসে দেখে দৌঁড়ে অন্য আরেকজনকে ডেকে আনেন। তিনি এসে দেখেই বলেন, ‘রোগীকে মেরে ফেলছিস।’ পরে তারা তড়িঘড়ি করে অ্যাম্বুলেন্স করে চুরখাই সিবিএমসিবি হাসপাতালে পাঠায়। সেখান নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আবারও অ্যাম্বুলেন্সে করে পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানে ভোর হলে চিকিৎসকরা হাসপাতাল থেকে আমাদের রোগী নিয়ে চলে যেতে বলেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতালের চারপাশে লোকজন জড়ো হয়। এ সময় হাসপাতালের মালিক ও অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীরা হাসপাতালে তালা দিয়ে চলে যায়। এরপর পুলিশ এসে মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, অপারেশন কোন ডাক্তার করেছেন তা আমার জানা নেই। রোগীর লোকজন বিষয়টি বলতে পারবেন। আমি ঢাকায় আছি, সেখান থেকে ফিরে বিস্তারিত জানানো যাবে। 

এ ব্যাপারে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক হোসেন বলেন, পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে অন্তঃসত্ত্বা নারীর কিডনিতে পাথর অপারেশন করার পর মারা গেছে বলে জানতে পেরেছি। পরিবারের লোকজন জানিয়েছে- ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা ছিল এবং উনার গর্ভে যমজ সন্তান ছিল। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

১৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কোনো অপারেশন করা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্তঃসত্ত্বা নারীর অবস্থা যদি খারাপ হয়, তাহলে অপারেশন করা যাবে। তা না হলে অপারেশন করার কোনো সুযোগ নেই।