১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৬:৩০:৫৪ পূর্বাহ্ন


মাশরাফীকে মাঠ থেকে বিদায় বলার সুযোগ দিতে চায় বিসিবি: পাপন
ক্রীড়া ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-০১-২০২৩
মাশরাফীকে মাঠ থেকে বিদায় বলার সুযোগ দিতে চায় বিসিবি: পাপন মাশরাফীকে মাঠ থেকে বিদায় বলার সুযোগ দিতে চায় বিসিবি: পাপন


বাংলাদেশের ক্রিকেটে মাঠ থেকে ক্রিকেটারের বিদায় খুবই বিরল ঘটনা। খুব কম খেলোয়াড়ই জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ম্যাচ খেলে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানিয়েছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা জাতীয় দলের বাইরে থাকলেও এখনো অবসরের ঘোষণা দেননি। ক্যারিয়ার সায়াহ্নে থাকা নড়াইল এক্সপ্রেস জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপিয়ে আনুষ্ঠানিক বিদায় নিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের।

২০২০ সালের মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষবার বাংলাদেশের লাল সবুজ জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলেন মাশরাফী। এরপর জাতীয় দল থেকে অবসর না নিলেও আছেন দলের বাইরে। ঘরোয়া ক্রিকেটে এখনো নিয়মিত দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মাঠ। চলতি বিপিএলেও বল হাতে দারুণ করছেন ৩৯ বছর বয়সী নড়াইল এক্সপ্রেস।

আর ভক্তরা আশায় বুক বেঁধে আছেন আরও একবার মাশরাফীকে জাতীয় দলের জার্সিতে দেখতে। লাল সবুজ জার্সি চাপিয়ে সতীর্থদের কাঁধে চেপে শেষবারের মতো ছাড়ছেন মাঠ। মাঠে ম্যাচ খেলে আনুষ্ঠানিক অবসরের ঘোষণা দিক মাশরাফী এমনটা চাওয়া কমবেশি সবার। জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেলও সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছিল। বোর্ড সম্মতি দিলে তারাও চান, মাশরাফীসহ অন্যরাও যেন মাঠ থেকেই দিতে পারেন বিদায়ের ঘোষণা।

২০১৭ সালে জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ইতি টানেন মাশরাফী। টেস্ট থেকে অবসরের আনুষ্ঠানিক অবসরের ঘোষণা না দিলেও সবশেষ ২০০৭ সালে খেলেছেন টেস্ট। ইনজুরি জর্জরিত ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে এসে ফের টেস্ট খেলবেন তিনি, এমনটা ভাবাই বাড়াবাড়ি। ওয়ানডে ক্রিকেটেও সবশেষ জাতীয় দলের জার্সি চাপিয়েছেন প্রায় তিন বছর। তাই ক্রমেই ফিকে হয়ে আসছে মাঠ থেকে মাশরাফীর বিদায় বলার সম্ভাবনা।

তবু ভক্ত সমর্থকদের প্রত্যাশা, একটা সিরিজ আয়োজন করে মাঠ থেকে মাশরাফীকে অবসর নেয়ার সুযোগ করে দেয়া হবে। দেশের ক্রিকেটের এই কিংবদন্তির বিদায়টা যেন স্মরণীয় হয়ে থাকে; সমর্থকরা এমনটা চাইলেও স্বয়ং মাশরাফী নাকি এ বিষয়ে একদম নিশ্চুপ। এমন দাবি করেছেন স্বয়ং বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

বিপিএলের সিলেট পর্বের খেলা দেখতে সোমবার (৩০ জানুয়ারি) হুট করে স্টেডিয়ামে হাজির হন বিসিবি সভাপতি পাপন। খেলা দেখা শেষে সন্ধ্যাবেলা তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন গণমাধ্যমের।

গণমাধ্যমের সামনে অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি তিনি কথা বলেছেন মাশরাফীর অবসরের বিষয়টি নিয়েও। সেখানে তিনি দাবি করেন, বিসিবি মাশরাফীকে ম্যাচ খেলে মাঠ থেকে বিদায় দিতে চাইলেও জাতীয় দলের এই সাবেক অধিনায়ক এখন পর্যন্ত সেই প্রস্তাবে সম্মতি জানাননি।

পাপন বলেন, 'এখানে (মাশরাফীকে ম্যাচ খেলে বিদায় নেয়ার সুযোগ দেয়া) বোর্ডের কোনো ইস্যু নেই। মাশরাফীকে আমি পরিষ্কারভাবেই প্রস্তাব করেছি এটার (ম্যাচ খেলে বিদায়)। আপনারা জানেন না? ও তো আপনাদেরকেই আমার পাশে দাঁড়িয়ে বলল যে, না, আমি এসব চাই না। ওর জন্য তো আমরা একটা বিদেশি দলই নিয়ে আসতে চাচ্ছিলাম। যে ও ওখানে করবে (অবসরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা )। কিন্তু ও তো অবসর নিচ্ছে না। তাহলে কি বলব?

তিনি যোগ করেন, 'এখানে খেলে কি বলবে আমি অবসর নিচ্ছি? ও তো অবসর নেয়নি এখনো। আপনাদের ব্যাপারটা আমি এখনো বুঝি না। ও অধিনায়কত্ব ছেড়েছে। এখনো তো ও অবসর নেয়নি। এখন আমি কি জোর করে বলতে পারি যে, তুমি অবসর নাও। ও যখন অবসর নেবে, আমরা এক পায়ে খাড়া (বোর্ডের পক্ষ থেকে আড়ম্বরপূর্ণ বিদায় আয়োজন)।

পাপন জানান, বিসিবি চায় সব ক্রিকেটারই মাঠ থেকেই বিদায় নিতে পারে যেন। তিনি বলেন, 'এটা সব খেলোয়াড়ের জন্য, শুধু মাশরাফীর জন্যই যে এমন, তা নয়। আমরা চাই সবাইকে খেলার মাধ্যমে ভালোভাবে বিদায় দিতে। আগে থেকে সবাই জানুক যে, এটাই তার শেষ ম্যাচ হতে যাচ্ছে। যাতে সবাই তাকে সেভাবে বিদায় জানাতে পারে।'

এর আগে ২০২০ সালে মাশরাফীকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ খেলে বিদায় জানানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিসিবি সভাপতি পাপন। তবে, তখন তিনি আরও কিছুদিন খেলা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।

পাপন বলেন, 'ওকে একবার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। বিশ্বকাপের পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি ওয়ানডে খেলে শেষ করার কথা ছিল। এমন কথাই ওর সঙ্গে হয়েছিল লন্ডনে। পরে তো বলল এই বিপিএল (২০২০) পর্যন্ত দেখতে চায়। তারপর সিদ্ধান্ত নেবে। এখন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে যা জেনেছি, তার ঘটা করে অবসরের ইচ্ছেই নেই।'

তিনি যোগ করেন, 'আমরা তো চাইব তাকে ভালোভাবে, খুব ভালোভাবে বিদায় দিতে, যেটা বাংলাদেশে আর কেউ পায়নি। এটা আমাদের ইচ্ছা। ও যদি এটা চায় তো ভালো কথা, না চাইলে কিছু করার নেই।'