২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৭:০৩:৫৯ অপরাহ্ন


নামাজের জন্য অজু যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ
ইসলামীক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০২-২০২২
নামাজের জন্য অজু যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ফটো


ইসলামে প্রথম এবং প্রধান ইবাদত নামাজ। ঈমান গ্রহণের পর প্রথম কাজই হচ্ছে নামাজ পড়া। এ নামাজের জন্য অজু করার আবশ্যকতা কী? এ সম্পর্কে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কী বলেছেন?

হ্যাঁ, নামাজের জন্য অজু আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা নামাজের জন্য অজু করাকে ফরজ করেছেন। কমপক্ষে ৪টি অঙ্গ ধোয়ার মাধ্যমে এ ফরজ আদায় করতে হবে। কেননা নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

‘পবিত্রতা (অজু) ছাড়া নামাজ কবুল হয় না। আর হারাম উপায়ে প্রাপ্ত মালের (দান) সাদকাও কবুল হয় না।’ (তিরমিজি)

অজু ছাড়া কোনোভাবেই নামাজ হবে না। আল্লাহ তাআলা ঈমানদার মানুষের নামাজের জন্য অজু করার নির্দেশ দিয়েছেন এভাবে-

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا قُمۡتُمۡ اِلَی الصَّلٰوۃِ فَاغۡسِلُوۡا وُجُوۡهَکُمۡ وَ اَیۡدِیَکُمۡ اِلَی الۡمَرَافِقِ وَ امۡسَحُوۡا بِرُءُوۡسِکُمۡ وَ اَرۡجُلَکُمۡ اِلَی الۡکَعۡبَیۡنِ

‘হে মুমিনগণ! যখন তোমরা নামাজে দাঁড়াতে চাও; তখন তোমাদের মুখমণ্ডল ধোও, আর উভয়হাত কনুই পর্যন্ত ধোও, মাথা মাসেহ কর এবং উভয় পা টাখনু পর্যন্ত ধোও।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত ৬)

কোরআন-সুন্নাহর ঘোষণায় প্রমাণিত যে, অজু ছাড়া নামাজ হবে না। আর নামাজের জন্য অজু করার নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। এ নির্দেশ অমান্য করা হরাম ও কবিরা গুনাহ।

এমনিতেও নামাজের জন্য অজু করায় চমৎকার ফজিলত বর্ণনা করেছেন নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন কোনো মুমিন অথবা মুসলিম বান্দা অজু করে এবং মুখমণ্ডল ধোয়- তার মুখমণ্ডল থেকে তার চোখের দ্বারা কৃত সব গুনাহ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে দূর হয়ে যায়। যখন সে তার দুই হাত ধোয়- তার দুই হাতের দ্বারা কৃত সব গুনাহ তার হাত থেকে পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে দূরীভূত হয়ে যায়। এরপর সে সব গুনাহ থেকে পবিত্র হয়ে যায়।’ (তিরমিজি)

এ হাদিস থেকে প্রমাণিত অজু মানুষকে গুনাহ থেকে পবিত্রকারী। গুনাহমুক্ত জীবন পেতে অজু কার্যকরী আমলও বটে। সুতরাং অজুর মাধ্যমে গুনাহমুক্ত হয়ে মহান আল্লাহর জন্য নামাজ আদায় করলে বান্দাহ হবে মহান আল্লাহর একান্ত প্রিয় ও নৈকট্য অর্জনকারী বান্দা।

অজুর মাধ্যমে তো মানুষের বিভিন্ন অঙ্গে গুনাহগুলো ঝড়ে যায়; কিন্তু যদি কেউ অজুর পর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে তবে তাদের আগের জীবনের গুনাহ থেকেও মুক্তি পায় বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বনবি-

হজরত ওসমান ইবনে আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার অজুর মতো অজু করে (একাগ্রতার সঙ্গে) দুই রাকাত নামাজ পড়বে এবং এ সময় অন্তরে অন্য কোনো ধারণা বা চিন্তা হবে না অথবা কোনো কথা বলবে না। তাহলে তার আগের জীবনের গুনাহসমূহও ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ, নাসাঈ, বাইহাকি, ইবনে হিব্বান)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, নামাজ কবুল হওয়ার জন্য অজু করা। নামাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত করতে গুনাহ থেকে পরিচ্ছন্ন হওয়ার জন্য অজু করা। অজুর মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন হয়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে নামাজ পড়া। তবেই নামাজ কবুল হবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নামাজের জন্য অজুর আবশ্যকতা মেনে নেওয়ার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। অজুর ফরজ আদায় করে গুনাহমুক্ত জীবন ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

রাজশাহীর সময় / এফ কে