২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০২:৩৩:৫২ অপরাহ্ন


বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, প্রেমিকসহ গ্রেপ্তার ২
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০১-২০২৩
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, প্রেমিকসহ গ্রেপ্তার ২ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, প্রেমিকসহ গ্রেপ্তার ২


বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কলেজছাত্রীকে তার প্রেমিক, তিন বন্ধুসহ সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার ছয় মাস পর পুলিশ মামলা নিয়ে শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) ভোররাতে প্রেমিকসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায়।

জানা যায়, ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর বিয়ের দাবি নিয়ে ওই ছাত্রী তার প্রেমিকের বাড়িতে সাত দিন অবস্থান করেন। পরে গ্রাম সালিসে পাঁচ কাঠা জমি ও বিয়ে দেওয়ার কথা দিয়ে তাকে ওই বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হয়। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত না মেনে প্রেমিক বাড়ি ছেড়ে লাপাত্তা হয়ে যান এবং সালিসের লোকদের টাকা দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেন। পরে ওই কলেজছাত্রী আইনি ব্যবস্থা নিতে চাইলে ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করা হয়েছে বলে তাকে ভয় দেখান প্রেমিক। এই অবস্থায় একজন পুলিশ কর্মকর্তা ওই ছাত্রীর কথা শুনে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পান এবং ছয় মাস পর পুলিশ মামলা নিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করে।

ওই কলেজছাত্রী জানান, উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের চামারউল্লাহ গ্রামের মো. আলিউল (২৮) নামে এক  যুবকের সঙ্গে তার  মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে আলিউল তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। গত ৩০ জুন বিয়ের কথা বলে আলিউল মোবাইলে মেয়েটিকে গ্রামের বাড়ি থেকে  নান্দাইল শহরে ডেকে নিয়ে যান। তাকে একটি নির্মাণাধীন বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আলিউল ধর্ষণ করেন। এর কিছুক্ষণ পর আলিউলের তিন বন্ধু হারিছ উল্লাহ, রোমান এবং ওই বাড়ির মালিকের ছেলে এহতেশামুল তাকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনা প্রকাশ করলে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দিয়ে ওই ছাত্রীকে বাসা থেকে জোরপূর্বক তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

মেয়েটি জানান, এ ঘটনার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। কোনোমতে বাড়ি পৌঁছে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার পথ খুঁজতে থাকেন। একটু সুস্থ হওয়ার পর তিনি আলিউলের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেন। ওই সময় তার ভিডিও ধারণ করে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেন। পরে এলাকার মাতবররা আলিউলের সঙ্গে বিয়ে হবে বলে সিদ্ধান্ত দিলে তিনি নিজ বাড়িতে ফিরে যান। কিছুদিন পর জানতে পারেন, আলিউল ও তার পরিবার বাড়িঘর তালা দিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। অন্যদিকে যারা তাকে বিচারের আশ্বাস দিয়েছিলেন তারাও আগের অবস্থান পরিবর্তন করে টাকার বিনিময়ে ধর্ষণের ঘটনাটি মিটমাট করার পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।

এই অবস্থায় মেয়েটি ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) মো. সুমন মিয়ার কাছে অভিযোগ জানান। তিনি মেয়েটির কথা শুনে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পান। পরে তিনি নান্দাইল থানাকে মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত মো. উবায়দুর রহমান জানান, এ ঘটনায় চারজনেকে অভিযুক্ত করে ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।