২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৯:৪২:৩৩ অপরাহ্ন


খুলছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার
অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-১২-২০২২
খুলছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার ফাইল ফটো


দেশের অগ্রাধিকার ও সরকারের প্রতিশ্রম্নত অন্যতম মেগা প্রকল্প স্বপ্নের থার্ড টার্মিনাল ও বিশ্বমানের কক্সবাজার বিমানবন্দরের কাজ অর্ধেকেরও বেশি শেষ হয়েছে। জাপানের ঋণদাতা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এগিয়ে চলছে অভ্যন্তরীণ ডেকোরেশনসহ অন্যান্য কাজ। ২০২৩ সালের অক্টোবরে থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধনের পরপরই নতুন এই টার্মিনালটি খুলে দেওয়া হবে যাত্রীদের জন্য। বছরে এই টার্মিনাল দিয়ে ভ্রমণসেবা পাবেন প্রায় দুই কোটির বেশি যাত্রী। আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী উড়োজাহাজগুলোর জন্য শাহজালাল বিমানবন্দর হয়ে উঠবে একটি 'হাব'। সব মিলিয়ে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিমানবন্দরের সব সুযোগ-সুবিধা থাকবে থার্ড টার্মিনালে। জানা গেছে, প্রায় ৩৫০ একর জমির ওপর নির্মিত বিশ্বমানের এই টার্মিনাল ভবনটি হবে ২ লাখ ৭২ হাজার বর্গমিটার।

এক্সপোর্ট ও ইমপোর্ট কার্গো কমপেস্নক্স থাকবে ৬৩ হাজার বর্গ মিটার। টার্মিনালের মূল ভিত্তিতে ৩ হাজার ৪৯টি পিলার থাকবে। নির্মাণাধীন থার্ড টার্মিনালে একসঙ্গে থাকবে কেবিন এক্সরে মেশিন ৪০টি, ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ, ১৬টি কনভেয়ার বেল্ট, ১১টি বডি স্ক্যানার ও টানেল। থাকবে ৫৪ হাজার বর্গমিটারের বহুতলবিশিষ্ট কার পার্কিং, নতুন ইমপোর্ট কার্গো কমপেস্নক্স ও ৬৩ হাজার বর্গমিটারের এক্সপোর্ট কার্গো কমপেস্নক্স। এছাড়াও রেসকিউ ও ফায়ার ফাইটিং স্টেশন এবং ৪ হাজার বর্গমিটার ইকুইপমেন্ট স্টেশন। ইতোমধ্যে টার্মিনালের মূল ভিত্তির আন্ডারগ্রাউন্ড অংশের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ, যা কাজের ৬০ শতাংশের বেশি। এখন প্রতিদিনই দৃশ্যমান হচ্ছে মূল ভবন। নতুন টার্মিনালটি চালু হলে বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর কাতারে চলে যাবে। রাজশাহীর সময়, পুরো বিমানবন্দর হবে কম্পিউটারাইজড। এর ফলে বিমানবন্দর এলাকায় কোনো যানজট থাকবে না এবং যাত্রী হয়রানি বন্ধ হবে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের যাত্রী হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি বর্তমানের ১০ মিলিয়ন হতে ২২ মিলিয়নে এবং কার্গো হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি বর্তমানের ২ লাখ ২০ হাজার টন হতে ৭ লাখ টনে উন্নিত করণসহ বিমান বন্দরের যাত্রী সুবিধাদি বৃদ্ধির লক্ষে ৩য় টার্মিনাল ভবন ও কার্গো ভবনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। টার্মিনালের চারদিকে থাকবে নিশ্ছিদ্র বাউন্ডারি ওয়াল। থাকবে সিকিউরিটি গেট, গার্ড রুম ও ওয়াচ টাওয়ার। বাইরে থাকবে সার্ভিস রোডসহ এলিভেটেড রোড, ওয়াটার সাপস্নাই সিস্টেম, সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট পস্ন্যান্ট, ইনটেক পাওয়ার পস্ন্যান্ট ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম। কার্গো কমপেস্নক্স ও এয়ারফিল্ড গ্রাউন্ড লাইটিং সিস্টেম, হাইড্রেন্ট ফুয়েল সিস্টেমসহ আনুষঙ্গিক সব সুবিধা থাকবে। এছাড়া অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে ফানেল টানেল থাকবে। ৫ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারের অ্যাপ্রোনে একসঙ্গে রাখা যাবে ৩৭টি উড়োজাহাজ। এছাড়া থাকবে ১ হাজার ২৩০টি গাড়ি রাখার ব্যবস্থা। ৬৩ হাজার বর্গফুট জায়গায় আমদানি-রপ্তানি কার্গো কমপেস্নক্স নির্মাণ করা হবে। থাকবে ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার। নতুন টার্মিনাল চালু হলে যাত্রীদের দুর্ভোগ আর থাকবে না। পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এটি। এ ব্যাপারে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, শাহজালালের থার্ড টার্মিনালটি দেশের অন্যতম অগ্রাধিকার প্রকল্প। এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের প্রকল্প। নির্ধারিত সময়ের ৬ মাস আগেই প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শেষ হবে। ইতোমধ্যে ৫২ শতাংশ কাজ শেষ। ২০২৩ সালের অক্টোবরে উদ্বোধনের সময় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

মহামারি করোনাকালেও টার্মিনালের কাজ বন্ধ হয়নি। এ ছাড়া ওই সময় দফায় দফায় লকডাউন আর মাটিতে পুঁতে থাকা একাধিক শক্তিশালী বোমা উদ্ধারের পরও নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়নি। এদিকে সাগর ছুঁয়ে কক্সবাজারে নামবে বিমান। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই ওঠানামা করবে বিমান। দেশে প্রথমবারের মতো সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপর নির্মিতব্য এ রানওয়ে হবে দেশের সবচেয়ে বড়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় উড়োজাহাজ এখানে নামতে পারবে। এটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হলে কক্সবাজারের পর্যটন ও অর্থনৈতিক বিকাশে বৈপস্নবিক পরিবর্তন ঘটবে। এদিকে, সমুদ্র থেকে শুরু হবে বিমান বন্দরের রানওয়ে। যার এক হাজার ৩শ' ফুট থাকবে সমুদ্রে। সমুদ্রের নীল জলের ঠিক ওপরেই উড়োজাহাজটি অবতরণের প্রস্তুতি নেবে। রানওয়ে স্পর্শ করার তিন সেকেন্ড আগে-সেটি বিমানবন্দরে প্রবেশ করবে। উপকূলীয় শহরে অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে অন্যতম হবে এই বিমানবন্দর। কক্সবাজার বিমানবন্দর বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান বলেন, কাজ শেষ হলে বিশ্বের দৃষ্টিনন্দন বিমানবন্দরগুলোর তালিকায় স্থান পাবে কক্সবাজার বিমানবন্দর। এখানে বর্ণিল আলোয় সমুদ্র ছুঁয়ে ওঠানামা করবে নতুন প্রজন্মের বড় বড় উড়োজাহাজ। আন্তর্জাতিকমানের এই বিমানবন্দরটির টার্মিনাল ভবনও সাজানো হচ্ছে আকর্ষণীয় ঝিনুক আকৃতিতে। নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণ, শক্তি বৃদ্ধি, এয়ারফিল্ড গ্রাউন্ড লাইটিং সিস্টেম স্থাপনসহ অন্যান্য কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। উদ্বোধন করা হবে আগামী বছরের অক্টোবরে।