২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ১২:৩২:০৯ পূর্বাহ্ন


সত্য গোপন করা মারাত্মক অপরাধ
ধর্ম ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-১২-২০২২
সত্য গোপন করা মারাত্মক অপরাধ ফাইল ফটো


কোরআনুল কারিমের বাণী ও ইসলামি শরিয়তের বিধানাবলি গোপন করা মারাত্মক অভিশপ্ত কাজ। আল্লাহ তাআলা যে সব কথা তথা বিধান কোরআনে অবতীর্ণ করেছেন; তা গোপন করা এত বড় অন্যায় যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়াও ওই সব সত্যবাণী গোপনকারীদের প্রতি অন্য অভিশাপকারীরাও অভিশাপ দিতে থাকে।

যারা দুনিয়ায় মহান প্রভূর বাণী সত্য দিকনির্দেশনা জেনে শুনে ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন করে এবং বোকা ও বধির হওয়ার ভান করে তাদের প্রতি শুধু আল্লাহ পাকই অভিশাপ দেন না বরং প্রত্যেক জিনিসই তাদের অভিশাপ দিয়ে থাকে। (নাউজুবিল্লাহ)

পক্ষান্তরে দুনিয়ার প্রতিটি জিনিস ওই আলেমের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে যারা দ্বীনের কল্যাণে মানুষের মাঝে আল্লাহর বাণী বা কথাসমূহ প্রচার করে থাকেন। এমনকি পানির মাছ এবং বাতাসের পক্ষীকূলও দ্বীনে ইলাহির প্রতি আহ্বানকারীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকেন।

কোরআনের মহা সত্য বাণীর তথ্য গোপনকারীদের ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কঠোর ভাষায় ইরশাদ করেন-

اِنَّ الَّذِیۡنَ یَکۡتُمُوۡنَ مَاۤ اَنۡزَلۡنَا مِنَ الۡبَیِّنٰتِ وَ الۡهُدٰی مِنۡۢ بَعۡدِ مَا بَیَّنّٰهُ لِلنَّاسِ فِی الۡکِتٰبِ ۙ اُولٰٓئِکَ یَلۡعَنُهُمُ اللّٰهُ وَ یَلۡعَنُهُمُ اللّٰعِنُوۡنَ

‘যারা আমার অবতীর্ণ উজ্জল শিক্ষাবলী ও বিধানসমূহ গোপন করে অথচ বিশ্ব মানবতাকে (সঠিক) পথের সন্ধান দেবার জন্য আমি সে (নিদর্শন তথা আয়াত)গুলো আমার কিতাবে বর্ণনা করেছি। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ, আল্লাহ তাদের (সত্য গোপনকারীদের) ওপর অভিশাপ বর্ষণ করেন এবং সব অভিশাপ বর্ষণকারীরাও তাদের ওপর অভিশাপ বর্ষণ করে।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৫৯)

মনে রাখতে হবে

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি সত্যবাণীর ব্যাপারে যারা সন্দেহ পোষণ করবে বা কুরআনের সত্যবাণী বা বিধানকে গোপন করবে; তাদের পরিণতি আগের সব নবি-রাসুলদের অনুসারী তথা ইহুদি, খ্রিস্টান, নাসারাসহ সব আসমানি কিতাবের তথ্য গোপনকারী সে সব অনুসারীদের ভয়াবহ পরিণতির ভাগ্য বহন করতে হবে।

আল্লাহ তা্আলা কুরআনুল কারিমে এ আয়াত উল্লেখ করে মুসলিম উম্মাহকে সত্য জ্ঞানের তথ্য কোরআনের সঠিক দিক-নির্দেশনা গোপন করার বিষয়ে সতর্কতা প্রদানে ধমক প্রদান করেছেন। কেননা কোরআনে বলা হয়েছে-‘যারা সত্যকে গোপন করে তারা অভিশপ্ত।’

কোরআনের অন্য আয়াতে সত্য গোপনকারীদেরকে অভিশপ্ত করে আল্লাহ তাআলা কঠোর ভাষায় আরো ঘোষণা করেন-

اِنَّ الَّذِیۡنَ یَکۡتُمُوۡنَ مَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰهُ مِنَ الۡکِتٰبِ وَ یَشۡتَرُوۡنَ بِهٖ ثَمَنًا قَلِیۡلًا ۙ اُولٰٓئِکَ مَا یَاۡکُلُوۡنَ فِیۡ بُطُوۡنِهِمۡ اِلَّا النَّارَ وَ لَا یُکَلِّمُهُمُ اللّٰهُ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ وَ لَا یُزَکِّیۡهِمۡ وَ لَهُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ

‘আল্লাহ যে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, যারা তা গোপন করে এবং তার বিনিময়ে স্বল্প মূল্য গ্রহণ করে, তারা কেবল আগুন দিয়ে নিজেদের পেট পূর্ণ করে। শেষ বিচারের দিন আল্লাহ তাআলা তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না এবং তাদেরকে (পাপ-পংকিলতা থেকে) পবিত্রও করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৭৪)

হাদিসে পাকে এসেছে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সত্য তথ্য গোপনকারীদের বিষয়ে কঠিন আজাবের কথা বর্ণনা করেছেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

‘যে ব্যক্তি ইসলামি শরিয়তের কোনো জিনিস সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হয় এবং উত্তর প্রদানে সে তা (সত্য) গোপন করে; কেয়ামতের দিন তাকে (সত্য গোপনকারীকে) আগুনের লাগাম পরানো হবে। (নাউজুবিল্লাহ)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরআনের বিধানসহ সব সত্যবাণী প্রকাশের তাওফিক দান করুন। ছোট হোক বা বড় হোক ইসলামি শরিয়তের যে কোনো সত্য গোপন করা থেকে হেফাজত করুন। কোরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। সত্য তথ্য গোপনের ভয়াবহ অভিশাপ থেকে হেফাজত করুন। আমিন।