২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৫:৫৬:৩৮ অপরাহ্ন


সেন্টমার্টিনে মিলছে প্লাস্টিকের বিনিময়ে চাল-ডাল-তেল
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-১২-২০২২
সেন্টমার্টিনে মিলছে প্লাস্টিকের বিনিময়ে চাল-ডাল-তেল সেন্টমার্টিনে মিলছে প্লাস্টিকের বিনিময়ে চাল-ডাল-তেল


সেন্টমার্টিন হলো বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। যার চারপাশে সাগর আর আকাশের নীল মিলেমিশে একাকার। প্রকৃতি দুই হাত মেলে যেন সৌন্দর্য ঢেলে দিয়েছে এখানে। দেশ বিদেশের ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে পরম আরাধ্য একটি পর্যটন গন্তব্য হচ্ছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ। কিন্তু প্রতিনিয়ত এই দ্বীপে ও সমুদ্রের পানিতে প্লাস্টিক ফেলার কারণে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে দূষণ; হুমকির মুখে পড়ছে সামুদ্রিক জীব ও মানবজীবন। ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকসামগ্রীর বিনিময়ে চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য দিচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের এই প্লাস্টিক দূষণ কমানোর জন্য বিদ্যানন্দের একদল স্বেচ্ছাসেবী গ্রহণ করেছে একটি নতুন উদ্যোগ। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এই উদ্যোগের আওতায় সেন্টমার্টিন দ্বীপে স্থাপন করা হয়েছে ‘প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোর’। যেখানে মানুষ তাদের ব্যবহৃত প্লাস্টিকপণ্যের খালি পাত্র, বোতল বা পলিথিন এক্সচেঞ্জ করে নিতে পারবেন চাল, ডাল, তেল, চিনি ও লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি। এতে স্থানীয়দের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের চাহিদা যেমন পূরণ হবে, ঠিক তেমনই কমবে পরিবেশ দূষণ। এই ‘প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোর’ প্রতি মাসে দুইবার করে চালু করা হবে। ফলে মানুষ তাদের জমানো প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ করে প্রয়োজন অনুযায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি নিতে পারবেন।

বিদ্যানন্দ জানায়, এক কেজি প্লাস্টিক বর্জ্যের বিনিময়ে একজন এক কেজি চাল পাবে, এক কেজি প্লাস্টিকের বিনিময়ে পাবে এক কেজি সুজি, এক কেজি প্লাস্টিকের বিনিময়ে পাবে এক কেজি বুটের ডাল, এক কেজি প্লাস্টিকের বিনিময়ে পাবে দুই প্যাকেট নুডুলস এবং এক কেজি প্লাস্টিকের বিনিময়ে পাবে ১০টি ডিম। দুই কেজি প্লাস্টিকের বিনিময়ে পাবে এক কেজি আটা। তিন কেজি প্লাস্টিকের বিনিময়ে পাবে এক কেজি মসুর ডাল। তিন কেজি প্লাস্টিকের বিনিময়ে পাবে এক লিটার সয়াবিন তেল। এবং ছয় কেজি প্লাস্টিকের বিনিময়ে পাবে একটি লুঙ্গি। 
ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকসামগ্রীর বিনিময়ে চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পাওয়ায় স্থানীয় মানুষরা প্লাস্টিকসামগ্রীর একত্রে করে প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ শপ থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি নিতে লাইন ধরেছে। ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকসামগ্রীর বিনিময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পাওয়া তারা খুবই খুশি। 

স্থানীয়রা জানায়, সেন্টমার্টিনের পরিত্যক্ত প্লাস্টিককে সবাই অবমূল্যায়ন করলেও এবার সেই প্লাস্টিক মূল্যবান করে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে সেখানে আর টাকার প্রয়োজন হবে না। পরিত্যক্ত প্লাস্টিক জমা দিয়েই সেন্টমার্টিনের অধিবাসীরা ব্যাগভর্তি বাজার বাসায় নিয়ে যেতে পারবেন।

এদিকে, মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) বিদ্যানন্দের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া ভিন্ন ভিন্ন পোস্টে বলা হয়েছে, সেন্ট মার্টিনে প্লাস্টিক এখন ফেলনা নয়, বরং টাকার মতো মূল্যবান। গল্প নয়, সত্যিই তাই। সেন্ট মার্টিন প্লাস্টিক ময়লায় ডুবে যাচ্ছে দিন দিন। কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী দিয়ে পুরো দ্বীপ তো পরিষ্কার করতে পারব না, তাই সবাইকে সংযুক্ত করতে চাচ্ছি এই কার্যক্রমে। পুরো সেন্টমার্টিনের প্লাস্টিক বর্জ্য রাতারাতি জড়ো করে রিসাইকেলের উদ্যোগের স্বপ্ন আমাদের।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন একটি শিক্ষা অনুকূল বাংলাদেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। অনাথ ও বঞ্চিত শিশুদের মৌলিক চাহিদা মেটানোর জন্য বিদ্যানন্দ এক টাকায় আহার, শীতকালীন ও ঈদে নতুন কাপড় বিতরণ, বিনামূল্যে শিক্ষা কর্মসূচি এবং এক টাকায় চিকিৎসাসহ বেশ কয়েকটি নিয়মিত কর্মসূচি পরিচালনা করছে।