হজরত আবুদ দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলতেন, ‘আমি আল্লাহর কাছে নিফাকমার্কা একাগ্রতা থেকে আশ্রয় চাই।’ তাকে প্রশ্ন করা হলো, ‘নিফাকমার্কা একাগ্রতা কী?’ তিনি জবাব দিলেন, ‘তুমি দেখবে বাহ্যিকভাবে শরীর একাগ্র ও বিনম্র কিন্তু অন্তর থাকবে আল্লাহ থেকে অনেক দূরে।’
হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু এক ব্যক্তিকে দেখলেন যে তার গর্দানকে নিচু করে রেখেছে। তখন তিনি তাকে বললেন, ‘ওহে গর্দানওয়ালা, গর্দান উঁচু করো, একাগ্রতা গর্দানের মধ্যে নেই, একাগ্রতা রয়েছে অন্তরে।’
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা দেখেন কয়েকজন যুবক খুব আস্তে আস্তে অসুস্থদের মতো হাঁটছে। তখন তিনি তার শাগরেদদের জিজ্ঞাসা করেন, ‘এরা কারা?’ তারা উত্তর দেন, ‘ইবাদারগুজার একটি দল।’ প্রতিউত্তরে তিনি বলেন, ‘ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন হাঁটতেন খুব দ্রুত হাঁটতেন, যখন কথা বলতেন সবাইকে শুনিয়ে বলতেন, যখন আঘাত করতেন ব্যথা পাইয়ে দিতেন আর যখন খাবার খাওয়াতেন পরিতৃপ্ত করতেন। আসলে তিনি ছিলেন প্রকৃত ইবাদাতগুজার।’
হজরত ফুযাইল ইবনু ইয়ায রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন, ‘এটা অতি অপছন্দনীয় যে, কেউ তার অন্তরে যতটুকু খুশুখুজু রয়েছে বাইরে তার চেয়েও বেশি প্রকাশ করে।’
হুযায়ফা (রদিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন, ‘তোমাদের দ্বীন থেকে সর্বপ্রথম তোমরা যা হারিয়েছ তা হলো একাগ্রতা। আর সর্বশেষ যা হারাবে তা হলো নামাজ। অনেক নামাজ আদায়কারী রয়েছে যার মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। অবস্থা এ রকম দাঁড়িয়েছে যে, তুমি জামাতওয়ালা একটি মাসজিদে প্রবেশ করবে, কিন্তু তাদের মধ্যে একজনকেও একাগ্র ও খুশুখুজুওয়ালা পাবে না।’
ইবাদত কবুলের জন্য ইবাদতে একাগ্রতার বিকল্প নেই। অথচ দিন দিন মানুষ এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় একাগ্রতা হারাতে বসেছে। সুতরাং উল্লেখিত দৃষ্টান্তগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে প্রতিটি ইবাদতে একনিষ্ঠতা ও একাগ্রতার প্রতি খেয়াল রাখা জরুরি। তবেই ইবাদত কবুল হবে। ইবাদতে একাগ্রতা থাকলে অল্প আমলই নাজাতের জন্য যথেষ্ট হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব ইবাদতে একনিষ্ঠ হওয়ার তাওফিক দান করুন। লোক দেখানো ইবাদতগুজার হওয়া থকে হেফাজত রাখুন। আমিন।