২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৩:০৫:৩২ পূর্বাহ্ন


রাজশাহীর স্কুলগুলোতে এখনো পৌঁছায়নি ৭০ ভাগ বই
আবু হেনা:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-১২-২০২২
রাজশাহীর স্কুলগুলোতে এখনো পৌঁছায়নি ৭০ ভাগ বই রাজশাহীর স্কুলগুলোতে এখনো পৌঁছায়নি ৭০ ভাগ বই


প্রতিবারের মতো এবারও আসছে বছরের প্রথমদিনই নতুন পাঠ্যবই স্কুলের শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা। সে অনুযায়ী চলছে প্রস্তুতি। সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আসতে খুব বেশি আর দেরি নেই। হাতেগোনা কয়েকটি দিন বাকি। নতুন বইয়ের সেই ঘ্রাণ নেওয়ার অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা। নতুন বই হাতে নিয়ে শুঁকে দেখার মজাটাই যেন আলাদা।

কিন্তু খানিকটা মন খারাপের খবর হলো- এখনো আশানুরূপ বই স্কুলে স্কুলে পৌঁছায়নি। রাজশাহীতে মাধ্যমিক ও সমান পর্যায়ে বইয়ের চাহিদা ৪৫ লাখ ২১ হাজার। তবে এ পর্যন্ত বই এসেছে মাত্র ৩০ ভাগ। গত বছর বই উৎসবের আগে (ডিসেম্বরের মধ্যে) মাধ্যমিক পর্যায়ে বই এসেছিল চাহিদার অর্ধেক। এবারও পুরোপুরি আসবে কিনা- তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ কাগজের দাম বাড়ায় বই ছাপানোর কাজও পিছিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

রাজশাহী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পর্যায়ে জেলায় সম্ভাব্য শিক্ষার্থী ধরা হয়েছে মোট তিন লাখ ৩১ হাজার ১৮০ জন। এর মধ্যে মাধ্যমিক অর্থাৎ ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে দুই লাখ ২৬ হাজার ৪৭০ জন, মাদ্রাসার দাখিল পর্যায়ের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে ৪০ হাজার ৯৬০ জন, এবতেদায়িতে (প্রথম-পঞ্চম শ্রেণি) ৪৮ হাজার ৮৭০ জন, এসএসসি ভোকেশনালে ১৪ হাজার ৪০ জন এবং ইংরেজি ভার্সনে ৮৪০ জন শিক্ষার্থী।

এর বিপরীতে ৪৫ লাখ ২১ হাজার ৪৩টি পাঠ্যবইয়ের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে মাধ্যমিকে (ষষ্ঠ থেকে নবম) ৩২ লাখ ৭০ হাজার ৬৮০, মাদ্রাসায় (ষষ্ঠ থেকে নবম) ছয় লাখ ৩২ হাজার ৯৪৫, এবতেদায়িতে (প্রথম-পঞ্চম শ্রেণি) তিন লাখ ৫৩ হাজার ২৯০, এসএসসি ভোকেশনালে দুই লাখ ৫২ হাজার ৮৪৮ এবং ইংরেজি ভার্সনের জন্য ১১ হাজার ২৮০টি বই চাওয়া হয়েছে।

তবে এই বিশাল চাহিদার বিপরীতে রোববার পর্যন্ত মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বই পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাঃ নাসির উদ্দিন। তবে ডিসেম্বরের মধ্যেই শতভাগ বই চলে আসবে বলেও আশা করছেন তিনি।

জানা গেছে, এবার প্রচলিত পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসতে ঢালাওভাবে সাজানো হচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থা। এর জন্য সম্পূর্ণ নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পাঠ্যবইয়ের বিষয় নির্বাচনেও এসেছে বেশ পরিবর্তন। প্রত্যেক ধর্মের জন্য আলাদা বই ছাপানো হয়েছে। প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়ে জানতে অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত আছে আলাদা অধ্যায়। চাপে নয়, বরং আনন্দে শিক্ষার জন্যই নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। নতুন শিক্ষাক্রমে ‘চারুকলা’র নাম দেওয়া হয়েছে ‘শিল্প ও সংস্কৃতি’।

শিক্ষা কর্মকর্তারা আরও জানান, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে মানুষের জীবন-জীবিকার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। যেখানে প্রচলিত পেশার ৩ ভাগের ২ ভাগ ২০৩০ সালের মধ্যে অবলুপ্ত হয়ে যাবে এবং ৬৫ ভাগ শিক্ষার্থী যারা এখন প্রাথমিক শিক্ষায় আছে তারা কর্মজগতে প্রবেশ করে যে কাজ করবে তা এখনো অজানা।

ভবিষ্যতের জীবন ও জীবিকার জন্য প্রচলিত পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করা সম্ভব নয় বরং রূপান্তরযোগ্য দক্ষতা ও যোগ্যতায় শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলাই হচ্ছে লক্ষ্য। নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের ক্লাসের চেয়ে কাজকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শিখবে। ক্লাসের পড়া ক্লাসেই তৈরি করবে।