২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ১২:৩১:০৭ পূর্বাহ্ন


আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে মানত করা শিরক
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-১২-২০২২
আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে মানত করা শিরক ফাইল ফটো


নজর বা মানত করা ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত হবে, যদি তা একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে হয়। আর আল্লাহর নামে মানত করলে তা আদায় করা ওয়াজিব। আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে মানত করলে তা হবে শিরক। বিধায় গায়রুল্লাহর নামে মানত পূর্ণ করা হারাম। এরূপ মান্নতের নিয়ত করে থাকলে তা ত্যাগ করতে হবে এবং তওবা করতে হবে। (ফাতহুল মাজিদ, পৃষ্ঠা ১৩৬)

আল্লাহ ছাড়া মৃত বা জীবিত কারো নামে মানত করা শিরক। গায়রুল্লাহর নামে মানত করলে ঐ মানত পূর্ণ করা যাবে না। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

مَنْ نَذَرَ أَنْ يُطِيْعَ اللهَ فَلْيُطِعْهُ وَمَنْ نَذَرَ أَنْ يَعْصِىَ اللهَ فَلاَ يَعْصِهِ

‘যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্যের কাজে মানত করে, সে যেন তা পূর্ণ করার মাধ্যমে তার আনুগত্য করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর নাফরমানীমূলক কাজে মানত করে, সে যেন তার নাফরমানী না করে। অর্থাৎ মানত পূরা না করে।’ (বুখারি ৬৬৯৬)

অনেককে দেখা যায়, রোগ থেকে মুক্তির জন্য, হারানো জিনিস ফিরে পাওয়ার জন্য কিংবা সন্তান হওয়ার জন্য বড় বটবৃক্ষ, মাজার, মসজিদ ইত্যাদি জায়গায় মোমবাতি, তেল, আগরবাতি, টাকা-পয়সা, গরু-খাসি, মোরগ-মুরগী, কবুতর ইত্যাদি মানত করে। তারা মনে করে এর মাধ্যমে তাদের উদ্দেশ্য হাছিল হবে, রোগমুক্তি হবে, হারানো ব্যক্তিকে ফিরে পাবে, মালের নিরাপত্তা লাভ হবে, নিঃসন্তান দম্পতির সন্তান হবে ইত্যাদি। এসবই শিরক-এর অন্তর্ভুক্ত।

নবীগণ সবচেয়ে সম্মানী ও মর্যাদাপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের কবরসমূহে কোনো নজরানা, মানত দেওয়া হয় না। এ ধরনের মানত, নজরানা তারা কবরবাসীর সম্মান ও বরকতের জন্যই করে থাকে এবং তাদের ধারণা এর দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য হাছিল হবে। মক্কার মুশরিকদের ধারণাও ছিল এমন। তাইতো তারা বলতো-

مَا نَعْبُدُهُمْ إِلَّا لِيُقَرِّبُونَا إِلَى اللهِ زُلْفَى

‘তারা (এসব কবর ও মাজার ইত্যাদি) আমাদের আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছে দেবে বলেই আমরা তাদের ইবাদত করি।’ (সুরা যুমার : আয়াত ৩)

মনে রাখতে হবে

যেখানে আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উপাসনা করা হতো সেখানেও আল্লাহর নামে মানত করা হারাম। চাই সেখানে পূজা চলুক বা না চলুক। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত ছাবিত বিন আয-যাহহাক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘এক ব্যক্তি রাসুলের যুগে ‘বুয়ানা’ নামক স্থানে একটি উট কোরবানি করার মানত করলো। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘সে স্থানে এমন কোনো মূর্তি ছিল কি, জাহেলি যুগে যার পূজা করা হতো? ছাহাবায়ে কেরাম বললেন, ‘না’। তিনি বললেন ‘সে স্থানে কি তাদের কোনো উৎসব বা মেলা অনুষ্ঠিত হতো? তাঁরা বললেন, ‘না’। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তুমি তোমার মানত পূর্ণ করো। কেননা আল্লাহর নাফরমানীমূলক কাজে মানত পূর্ণ করা যাবে না। আদম সন্তান যা করতে সক্ষম নয়, এমন মানতও পুরা করা যাবে না। (আবু দাউদ ৩৩১৫; ইবনু মাজাহ ২১৩০)