২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০১:৫৭:৫৫ অপরাহ্ন


'মর্গের দানবের' কাহিনি শুনে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মেয়ে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-১২-২০২২
'মর্গের দানবের' কাহিনি শুনে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মেয়ে ফাইল ফটো


চার ছেলেমেয়ের বাবা, পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান। বয়স বর্তমানে ৬৮। বাইরে থেকে দেখলে বোঝার উপায় নেই, এই আপাত নিরিহ ব্যক্তির মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে এক 'দানব'। 'মর্গের দানব', ডেভিড ফুলারকে এই নামেই ডাকে অনেকে। ইতিমধ্যেই দুই মহিলাকে হত্যা এবং লাশ কাটা ঘরে ১০০টিরও বেশি মৃতদেহের সঙ্গে সঙ্গমের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল তাকে।

সম্প্রতি এই বিকৃতকামী ব্যক্তি, আরও ১৬টি নতুন অভিযোগ স্বীকার করেছেন। ১২টি মৃতদেহের সঙ্গে যৌনতা সম্পর্কিত, বাকি চারটি বিকৃতকামী পর্নোগ্রাফি সংগ্রহে রাখার অপরাধ। এর জন্য, তাকে আরও চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

২০০৫ থেকে ২০২০ – ১৫ বছরে ফুলার কাজ করত ইংল্যান্ডের কেন্ট এবং সাসেক্সের দুটি মর্গে। পুলিশের দাবি, সেই সময় সে কমপক্ষে ১০১টি মৃতদেহের সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছিল। সবগুলিই ছিল মহিলাদের, এমনকি শিশুকন্যাদের দেহকেও অপবিত্র করতে সে ছাড়েনি। পরিকল্পিতভাবে সে বারবার মৃত মহিলা ও মেয়েদের দেহের অপব্যবহার করেছে বলেই জানিয়েছে পুলিশ। মর্গে মৃতদেহ আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মৃতদেহগুলিকে সে তার লালসা মেটানোর কাজে ব্যবহার করত। মৃতদেহর সঙ্গে সঙ্গমের ভিডিয়ো রেকর্ডও করেছিল। এছাড়া, ১৯৮৭ সালে ওয়েন্ডি নেল (২৫) এবং ক্যারোলিন পিয়ার্স (২০) নামে দুই তরুণীকে হত্যা করার অভিযোগেও সে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে।

গত ডিসেম্বরে মেইডস্টোন ক্রাউন কোর্টে তার অপরাধের কথা স্বীকার করেছে ফুলার। ওই দুই তরুণীর হত্যার মামলায় ডিএনএ পরীক্ষার প্রমাণও তার বিরুদ্ধে গিয়েছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে তাকে ওল্ড বেইলি কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার সাজা হলেও, যে মৃতদেহগুলির সে অপব্যবহার করেছে, তাঁদের আত্মীয় স্বজনদের বেদনা এবং মানসিক বিপর্যয় এখনও দূর হয়নি। তাদের প্রিয়জনদের মৃত্যুর অসহায়তার সুযোগ নিয়েছিল ফুলার বলে মনে করছেন তাঁরা। প্রিয়জনদের মৃতদেহকে রক্ষা না করতে পারার আক্ষেপ যাচ্ছে না।

এমনই এক মহিলা জানিয়েছেন, মৃত মাকে শেষ বিদায় জানাতে তিনি চুমু খেয়েছিলেন। এটিই তাঁর মায়ের দেহে শেষ মানব স্পর্শ হওয়া উচিত ছিল। যে স্পর্শ ছিল ভালবাসা এবং শ্রদ্ধায় ভরা। বদলে, এক দানবের কুত্‍সিত ছোঁয়া পেতে হয়েছে তাঁর মাকে। আরেকজন জানিয়েছেন, প্রিয়জনকে বিদায় জানানোর কোনও শান্তিপূর্ণ স্মৃতিই আর তাঁর নেই। ফুলার তা চুরি করে নিয়েছে। তাঁর প্রিয়জনের স্মৃতিকে ক্ষুন্ন করেছে সে। ফুলারের জন্যই আজও তিনি এক গভীর লজ্জা বহন করে চলেছেন।