২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৯:২৬:২৮ অপরাহ্ন


বঙ্গোপসাগরের গভীরে ভূমিকম্প, কম্পন ছড়াল বাংলাদেশেও
সুমাইয়া তাবাসুম:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-১২-২০২২
বঙ্গোপসাগরের গভীরে ভূমিকম্প, কম্পন ছড়াল বাংলাদেশেও বঙ্গোপসাগরের গভীরে ভূমিকম্প, কম্পন ছড়াল বাংলাদেশেও


সমুদ্রের গভীরে ভূমিকম্প। সোমবার সকালে বঙ্গোপসাগরের গভীরে কম্পন টের পাওয়া গেছে। সিসমোগ্রাফ যন্ত্রে কম্পনের তীব্রতা ধরা পড়েছে ৫.১। 

ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি জানাচ্ছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল বঙ্গোপসাগরের ১০ কিলোমিটার গভীরে। সমুদ্রগর্ভে ছড়িয়ে পড়া কম্পনের তীব্রতা অনুভব করা গেছে অন্যান্য জায়গাতেও। অরুণাচলে কম্পন টের পাওয়া গেছে। এদিকে বাংলাদেশের ঢাকা সহ কয়েকটি এলাকায় কম্পন বোঝা গেছে। জানা যাচ্ছে, বঙ্গোপসাগরের যেখানে ভূমিকম্প হয়েছে, সেখান থেকে পুরী ও ভূবনেশ্বরের দূরত্ব প্রায় ৪২১ কিলোমিটার ও ৪৩৪ কিলোমিটার।

সমুদ্রগর্ভে কেন ভূমিকম্প হয়?

এর আগে আন্দামানে সমুদ্রগর্ভে তীব্র ভূমিকম্প হয়েছিল। আন্দামান-সুমাত্রা অঞ্চলে মাটি ও সমুদ্রের নীচের ভূস্তর কতটা অস্থির হয়ে রয়েছে, লাগাতার কম্পনই (Earthquake) তার ইঙ্গিত দিয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন ভূপদার্থবিজ্ঞানীরা। সমুদ্রের গভীরে কেন ভূমিকম্প হয় সে নিয়ে গবেষণা চলছে। 

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর কেন্দ্রে রয়েছে এমন একটি কাঠানো যা আকারে, আয়তনে বিশাল। যার পরিধি প্রায় ১০০০ কিলোমিটার এবং ২৫ কিলোমিটারের মতো পুরু। ওই এলাকার নাম হল ‘আলট্রা-লো ভেলোসিটি জ়োন’। যে ভূকম্পন তরঙ্গ বা ভূ-তরঙ্গ বয়ে চলেছে ওই এলাকার মধ্যে দিয়ে তার গতিবেগ খুবই কম। কীভাবে ওই ভূ-তরঙ্গ তৈরি হল সেটা এখনও রহস্য। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ওই এলাকার রাসায়নিক গঠন ও তাপমাত্রাও অনেকটাই আলাদা।

পৃথিবীর ভেতরটা অনেকটা পেঁয়াজের খোঁসার মতো। পরতে পরতে জড়িয়ে আছে বিভিন্ন স্তর। তাদের রাসায়নিক ও ভৌত গঠন, বৈশিষ্ট্য আলাদা। সবচেয়ে বাইরের স্তরটি রাসায়নিক গঠনগতভাবে ভিন্ন, নিরেট সিলিকেট ভূত্বক যার নীচে রয়েছে ম্যান্টল। একে বলে গুরুমণ্ডল। ভূত্বক এবং গুরুমণ্ডলের উপরের অংশকে একসঙ্গে বলে লিথোস্ফিয়ার। এই অংশেই টেকটনিক প্লেটগুলো সংকুচিত অবস্থায় থাকে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, উপগ্রহ চিত্রে পৃথিবীর যে রূপ এখন আমরা দেখতে পাই তার সঙ্গে কোটি কোটি বছর আগের পৃথিবীর মিল নেই। একটু একটু করে রূপ বদলাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই বদলের অন্যতম কারণ হচ্ছে এই টেকটনিক প্লেট ও তার নীচে পৃথিবীর গভীরে থাকা ম্যান্টল স্তরের চলাফেরা। গলিত ম্যান্টলের প্রবাহের ফলে তার উপরের টেকটনিক প্লেটগুলোর একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। কখনও মৃদু ধাক্কা আবার কখনও জোরদার ঠোকাঠুকি হয়ে প্লেটগুলো একে অপরের থেকে দূরে সরে যায়। কখনও বা একটি প্লেট অন্যটার ঘাড়ে উঠে যায়। এই ধাক্কাধাক্কির ফলেই ভূত্বকের পরিবর্তন হয়। আর এই পরিবর্তনের সঙ্গী হয় ভূমিকম্প, অগ্ন্যুৎপাত বা কখনও সুনামি।