২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০২:৪৬:৪৯ অপরাহ্ন


অর্থনীতি, খাদ্য ও জ্বালানি নিয়ে বিশেষ নির্দেশনা আসতে পারে
অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-১১-২০২২
অর্থনীতি, খাদ্য ও জ্বালানি নিয়ে বিশেষ নির্দেশনা আসতে পারে অর্থনীতি, খাদ্য ও জ্বালানি নিয়ে বিশেষ নির্দেশনা আসতে পারে


আসন্ন সচিব সভায় দেশের চলমান পরিস্থিতি এবং খাদ্য, অর্থনীতি, জ্বালানি ও কৃষি গুরুত্ব পাবে। ২৭ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় এই সভায় দীর্ঘ পাঁচ বছর চার মাস ১৮ দিন পর সরাসরি থাকছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশনা আসতে পারে।

সচিবালয়ে অনুষ্ঠেয় বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে ১১টি এজেন্ডা রয়েছে।

এ ছাড়া সভায় উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার বিষয়েও পরিকল্পনা গ্রহণ করার কথা রয়েছে।

গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সব সচিবের কাছে এসংক্রান্ত এক চিঠি পাঠানো হয়। এরপর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাচ্ছেন।  

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় অনুবিভাগ প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিবেদনগুলো সমন্বয় করছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিবেদনগুলো উপস্থাপন করা হবে বৈঠকে। এরপর দেশের বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বিক পরিস্থতি নিয়ে বিশেষ নির্দেশনা দিতে পারেন। সচিব সভা সংক্রান্ত এক কার্যপত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

সচিবদের নিয়ে প্রতিবছর একটি বিশেষ সভা করেন সরকারপ্রধান। সচিব সভা করার এই রীতি প্রতিবছরই পালিত হয়। কোনো বছর সরকারপ্রধান উপস্থিত না থাকলেও সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং সভায় সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদসচিব।

আগামী ২৭ নভেম্বর বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে রয়েছে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশের অর্থনীতিকে সুসংহত রাখা, জ্বালানি নিরাপত্তা, প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা, কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সারের জোগান নিশ্চিত করা এবং পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনা, সরকারি কাজে আর্থিক বিধি-বিধান অনুসরণ, সরকারি সেবা প্রদানে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারবিষয়ক পরিকল্পনা এবং ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ড, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতি, সুশাসন ও শুদ্ধাচার এবং বিবিধ প্রশাসনিক বিষয়ে আলোচনা।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে সবিচ সভা অনুষ্ঠিত হবে। তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় অনুবিভাগ সচিব সভার কার্যক্রম সমন্বয় করছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমন্বয় অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব রাহাত আনোয়ার গতকাল রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, আগামী সপ্তাহে সচিব সভা অনুষ্ঠিত হবে। তবে সভার সার্বিক কার্যক্রম দেখভাল করছেন উপসচিব জাকির হোসেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব (প্রশাসনিক উন্নয়ন ও সমন্ব্বয়-২ অধিশাখা) জাকির হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, আগামী রবিবার দুপুর ১টায় সচিব সভা অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। সভায় ১১টি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হবে। এজেন্ডাগুলো প্রধানমন্ত্রী নিজেই অনুমোদন করেছেন। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা প্রতিবেদন পাঠাচ্ছেন। তাঁদের প্রতিবেদনগুলো একসঙ্গে করে বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।

সরকারপ্রধানের উপস্থিতিতে সর্বশেষ সচিব সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৭ সালের ২ জুলাই। এরপর ২০২১ সালের ৪ জুলাই চার বছর পর সরকারপ্রধানের উপস্থিতিতে সচিব সভা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে ওই দিনের সভা স্থগিত করা হয়। এরপর লকডাউন তুলে দেওয়ার পর গত বছরের ১৮ আগস্ট সচিব সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন ভার্চুয়ালি।

গুরুত্ব পাবে বর্তমান পরিস্থিতি ও জাতীয় নির্বাচন : মন্ত্রিসভা বিভাগ সূত্র জানায়, এবার প্রধানমন্ত্রী সভায় সশরীরে উপস্থিত থাকার সম্মতি দেওয়ায় সভার গুরুত্ব বাড়ছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অনেকে উদ্বিগ্ন। এমন পরিস্থিতিতে সব সচিব প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একসঙ্গে আলোচনার সুযোগ পেলে পরিস্থিতি মোকাবেলা সহজ হবে। আবার আগামী বছরের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ফলে এ সচিব সভার গুরুত্ব আরো অনেক বেশি। জাতীয় নির্বাচনের আগের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর পর সচিবরা সশরীরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন।

একাধিক সাবেক সচিব কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে দেশের সার্বিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা, দুর্যোগ, স্বাস্থ্য পরিস্থিতিসহ জনসম্পৃক্ত বিষয়গুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায়। তবে নির্বাচনের আগের বছরগুলোতে জাতীয় নির্বাচনসংক্রান্ত ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়। এবারের সভায়ও তেমনটিই হতে পারে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দেশের অবস্থার সঙ্গে প্রশাসনিক অনেক বিষয়ও আলোচনায় আসে। সচিবরা নিজেদের কিছু দাবিদাওয়াও এই সুযোগে সরকারের প্রধানের কাছে করে থাকেন। দীর্ঘদিন পর এই সভায় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত হবেন বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগও বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে।