২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৭:৫৫:০৪ অপরাহ্ন


আল্লাহ যেভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করতে বলেছেন
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-১১-২০২২
আল্লাহ যেভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করতে বলেছেন ফাইল ফটো


পাপের সঙ্গে নেয়ামাত দান আল্লাহর অনুগ্রহ। বান্দা গুনাহ করা সত্বেও আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতি নেয়ামাত দান করেন। আল্লাহ তার বান্দাকে আহার-রিজিক, আলো-বাতাস দিয়ে লালন-পালন করেন। এটা আল্লাহর অনুগ্রহ। আবার তিনি বান্দাকে নেয়ামত দিতে ক্ষমা প্রার্থনার উপায়ও শিখিয়ে দেন। আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল এবং ক্ষমাকে ভালোবাসেন। তাইতো আল্লাহ তাআলা বান্দার গোনাহ মাফের কৌশল শিখিয়ে দিয়ে বলেন-

وَ اِذۡ قُلۡنَا ادۡخُلُوۡا هٰذِهِ الۡقَرۡیَۃَ فَکُلُوۡا مِنۡهَا حَیۡثُ شِئۡتُمۡ رَغَدًا وَّ ادۡخُلُوا الۡبَابَ سُجَّدًا وَّ قُوۡلُوۡا حِطَّۃٌ نَّغۡفِرۡ لَکُمۡ خَطٰیٰکُمۡ ؕ وَ سَنَزِیۡدُ الۡمُحۡسِنِیۡنَ

এবং (স্মরণ কর সে সময়কে) যখন আমি তোমাদেরকে বলেছিলাম যে, তোমরা এ নগরে প্রবেশ কর, অতপর তা থেকে যা ইচ্ছা স্বাচ্ছন্দে খাও এবং দরজার ভেতরে প্রবেশ করার সময় সেজদা করে প্রবেশ কর। আর এ কথা বল যে, আমরা ক্ষমা প্রার্থনা করছি, তাহলে আমি তোমাদের দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করবো, আর অনতিবিলম্বেই নেককার লোকদেরকে অধিকতর (প্রতিদান) দান করবো। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ৫৮)

আয়াতে তিনটি বিষয় ওঠে এসেছে-

১. এ জনপদ বা শহর বলতে অধিকাংশ মুফাসসিরগণের কাছে (ফিলিস্তিনের জেরুজালেম) বায়তুল মাক্বদিস।

২. এই সিজদার অর্থ- কারো কাছে নতশিরে প্রবেশ করা। আবার কেউ এর অর্থ নিয়েছেন, কৃতজ্ঞতার সেজদা। অর্থাৎ আল্লাহর দরবারে নম্রতা ও বিনয়ের প্রকাশসহ কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে প্রবেশ কর।

৩. আয়াতে উল্লেখিত حِطَّة এর অর্থ হল, আমাদের গুনাহ ক্ষমা করে দাও।

আল্লাহ বলেন, স্মরণ কর সে সময়ের কথা যখন আমি বলেছিলাম, এ নগরে প্রবেশ কর। এখানে নগর বলতে মতভেদ রয়েছে, কেউ কেউ বলেছে বায়তুল মুক্বাদ্দাস, আবার কেউ বলেছেন আরীহা নামক স্থান, কেউ কেউ মিসরকেও বুঝিয়েছেন। আর তাতে যেখানে ইচ্ছা স্বচ্ছন্দে আহার কর, সেজদারত হয়ে (বিনয়ী ভাব নিয়ে) ঐ শহরে প্রবেশ কর (যেমনি ভাবে মক্কা বিজয়ের সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিনয় এবং অবনত মস্তকে প্রবেশ করেছিলেন এবং শুকরিয়া প্রকাশে আট রাকাত নামাজ আদায় করেছিলেন) আর তখন মুখে থাকবে তোমাদের একটি কথা। তা হলো-

‘হে আল্লাহ! আমাদেরকে ক্ষমা কর, তওবা তওবা! (যদি তা কর) তবে আমি তোমাদের গুনাহসমূহ মাফ করে দেব। আর যারা আন্তরিকতার সঙ্গে সৎ কাজ করে তাদের প্রতিদান আরও বাড়িয়ে দেব।’

আল্লাহ তাআলা বনি ইসরাইলকে ক্ষমার এ কৌশল শিখিয়েছিলেন। এ কৌশল শুধু বনি ইসরাইলদের জন্যই খাস নয়। উম্মাতে মুহাম্মাদির জন্য এটা শিক্ষা। আসুন আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চাই। তার ঘর মসজিদে সেজদায় লুটিয়ে পড়ি। গড়ে তুলি আমলি জিন্দেগি। লাভ করি আল্লাহর ক্ষমা ও অগণিত অসংখ্য রহমত ও বরকত। আর বেশি বেশি বলি-

اَللَّهُمَّ أِسْتَغْفِرُ اللهَ و أَتُوْبُ اِلَيْهِ فَاغْفِرْلِىْ

‘আল্লাহুম্মা আসতাগফিরুল্লাহ ওয়া আতুবু ইলাইহি ফাগফিরলি।’

‘হে আল্লাহ! আপনার কাছে ক্ষমা চাই; আপনার কাছেই ফিরে আসি। সুতরাং আপনি ক্ষমা করে দিন।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর কাছে ক্ষমা পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।