২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৪:৩৭:০৯ পূর্বাহ্ন


সিংড়ায় বিনা চাষে সরিষার বাম্পার ফলন
সৌরভ সোহরাব,সিংড়া(নাটোর) প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০২-২০২২
সিংড়ায় বিনা চাষে সরিষার বাম্পার ফলন সিংড়ায় বিনা চাষে সরিষার বাম্পার ফলন


শস্য ভান্ডার নমে খ্যাত নাটোরের সিংড়ার চলনবিল অঞ্চলে বিনা চাষে রসুনের পাশাপাশি বিনাচাষে সরিষার আবাদেও আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। হাল চাষের খরচ না থাকায় অল্প খরচে অধিক লাভবান হচ্ছেন কৃষক। এছাড়া বন্যা কবলিত এই অঞ্চলে  বন্যার পানি নামতে সময় লাগায় বছরে দুইবার ফসল উৎপাদন করা যেত। এখন সেই জমিগুলোতে বন্যার পানি নামার সাথে সাথে বর্ষাকালীন ধান কাটার আগেই জমির ‘জো’ বুঝে জমিতে সরিষার বীজ বোনা শুর করেন কৃষক। ফলে এই অঞ্চলে এখন বছরে একই জমিতে ফসল উৎপাদন হচ্ছে তিনবার। 

সরেজমিনে উপজেলার শেরকোল আগপাড়ার মাঠে গিয়ে দেখা যায় মাঠের পর মাঠ সরিষার ক্ষেত। হলুদ ফুল থেকে ধীরে ধীরে সবুজ দানায় পরিনত হচ্ছে।  এই মাঠে প্রায় আড়াইশত একর জমিতে বিনা চাষে সরিষার চাষ হয়েছে। সরিষার বাম্পার ফলনে অধিক লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষক। এসময়ে চলনবিলের অন্য এলাকায় আগাম জাতের সরিষা কাটা মাড়াই শুরু হলেও এই মাঠের সরিষার জাত(রাই সরিষা) র্দীঘ মেয়াদী হওয়ায় এসব সরিষা ঘরে তুলতে এখনও ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগবে বলে স্থানীয় কৃষকরা জানান। শেরকোল আগপাড়ার  রাসেল,শিবু ও লালন নামের সরিষা চাষী  জানান, বর্ষাকালীন স্বর্ণা ধান কাটার আগে অর্থাৎ কার্তিক মাসের ১৫ তারিখ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে মাটির ‘জো’ বুঝে আমরা এই মাঠে গত কয়েক বছর ধরে বিনা চাষে রাই সরিষার চাষ করছি। এতে অল্প খরচে অনেক লাভবান হয়েছি। এবছরও ফলন ভালো হয়েছে। আমরা আশা করছি এবারও লাভবান হবো। কৃষকরা জানায়, হাল চাষের খরচ না থাকায় প্রতি বিঘা জমিতে বীজ,সার,কীটনাশক ,শ্রমিক সহ কাটা মাড়াই করে ফসল ঘরে তুলতে তাদের সম্ভাব্য খরচ হবে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা সরিষার ফলন যদি ৭ থেকে ৮ মণ হয় এবং বর্তমান প্রতিমণ সরিষার বাজার  ২হাজার ৫শত  থেকে ২ হাজার ৮শত টাকা ঠিক থাকে তাহলে প্রতিবিঘা সরিষা বিক্রয় হবে ১৮ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা এবং  খরচ বাদে প্রতি বিঘায় তাদের লাভ হবে ১৪ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকা। কৃষকরা জানায়, সরিষা কাটা মাড়াই পর এসব জমিতে তিল,পাট ও মাশকালাই এর চাষ করবেন। বিনা চাষের কারনে একদিকে যেমন  খরচ কম হচ্ছে অন্য দিকে তেমনি সঠিক সময়ে চাষ করায় বছরে একই জমিতে তিনটি ফসল থেকে আগের চেয়ে দ্বিগুন আয় করছেন কৃষক।  

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ সেলিম রেজা বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩ হাজার ৮শত ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এর মধ্যে শেরকোল আগপাড়ার মাঠে প্রায় আড়াইশত একর জমিতে বিনা চাষে রাই সরিষার চাষ হয়েছে। আগাম জাতের সরিষা কাটা মাড়াই প্রায় শেষের দিকে তবে রাই সরিষা কাটা মাড়াই ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে শুরু হবে। চলনবিল এলাকায় আগে এক থেকে দুই ফসল চাষ হতো ওই সব জমিতে এখন তিন ফসল উৎপাদন হচ্ছে। আমরা কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করছি। গতবার সরিষা চাষে কৃষক লাভবান হয়েছে। আমরা আশা করছি এবারও তারা লাভবান হবেন। 

রাজশাহীর সময়/এইচ