২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৮:২৫:৫৪ অপরাহ্ন


ভুল তথ্য দিয়ে সরকারী জমি পত্তন নেওয়ার অভিযোগ
হাফিজুল হক,সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০২-২০২২
ভুল তথ্য দিয়ে সরকারী জমি পত্তন নেওয়ার অভিযোগ ভুল তথ্য দিয়ে সরকারী জমি পত্তন নেওয়ার অভিযোগ


নওগাঁর পত্নীতলায় ভুল তথ্য দিয়ে সরকারী খাস খতিয়ানভুক্ত জমি পত্তন নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার অর্জুনপুর গ্রামের মৃত দোস্ত মোহাম্মদের ছেলে মোঃ ইয়াছিন আলীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন তার ভাই মোঃ মোজাম্মেল হক। 

মোজাম্মেল হক বলেন, উপজেলার অর্জুনপুর মৌজাস্থ ২৫৯ নং দাগে ০.১৬ শতক জমি ০১ নং খাস খতিয়ান ভুক্ত সম্পত্তি। আমি একজন ভূমিহীন হওয়ায় উক্ত সম্পত্তিতে র্দীঘদিন যাবৎ বসতবাড়ী  নির্মাণ করে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছি। পরবর্তীতে আমার ছোট ভাই ইয়াছিন আলী একই সম্পত্তির কিছু অংশে বসতবাড়ী  নির্মাণ করে বসবাস শুরু করে। এরপর গত ২০২০ সালে জানতে পারি ভূমি অফিসে ভুল তথ্য দিয়ে আমার দখলীয় বসতবাড়ী সহ ৩ টি দাগে ০.৩৬ শতক জমি পত্তন কেসের মাধ্যমে কবুলিয়ত দলিল সম্পাদন করে নেয় ইয়াছিন আলী। যার মধ্যে ২৫৯ নং দাগে ০.০৮ শতক জমির উপর আমার বসতবাড়ী রয়েছে। এমতাবস্থায় তার কবুলিয়ত দলিলটি আংশিক সংশোধন পূর্বক প্রদানকৃত সম্পত্তির মধ্যে আমার দখলীয় বসতবাড়ীর উক্ত দাগের ০.০৮ শতক সম্পত্তি আমার নামে কবুলিয়ত না করলে আমি আমার পরিবার গৃহহীন হয়ে যাবো।

জানাযায়, এবিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) পত্নীতলা, নওগাঁ বরাবর উক্ত কবুলিয়ত দলিল আংশিক সংশোধনের জন্য একটি আবেদন করে মোজাম্মেল হক। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে তদন্ত করে দিবর-শিহাড়া-নিমইল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা মোঃ সামসুদ্দীন সরকার ২৮ জুলাই ২০২০ সালে স্বাক্ষরিত একটি প্রতিবেদন সহকারী কমিশনার (ভূমি) পত্নীতলা, নওগাঁ বরাবর জমা দেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবেদনের আলোকে রেজিস্টার পত্র যাচাই সহ সরেজমিনে তদন্ত করা হয়। রেজিস্টার পত্র যাচাই অন্তে দেখা যায় অর্জুনপুর মৌজার ১ নং খাস খতিয়ান ভুক্ত নালিশী ২৫৯ নং দাগে ০.১৬ একর সম্পত্তি সহ ০.৩৬ একর সম্পত্তি বিবাদী বরাবর উপরোক্ত পত্তনী কেসের মাধ্যমে বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়। সরেজমিনে তদন্ত কালে বাদী  বিবাদী সহ স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় লোকজনের বক্তব্যে জানা যায়, আবেদনকারীর (মোজাম্মেল হকের)  বাড়ীটি পত্তন গ্রহনের পূর্ব হতে রয়ছে। তদন্ত কালে দেখা যায় নালিশী ২৫৯ নং দাগে ০.১৬ একর সম্পত্তির মধ্যে মোঃ মোজাম্মেল হকের ০.০৭২৫ একর সম্পত্তির উপর এবং মোঃ ইয়াছিন আলীর ০.৮৭৫ একর সম্পত্তির উপর বাড়ী  ঘর রয়েছে। পত্তন গ্রহীতা অফিসকে ভূল তথ্য পরিবেশনের মাধ্যমে মোজাম্মেল হকের বসত বাড়ী পত্তন নেওয়া মোটেই সমুচীন হয়নি। মোজাম্মেল হক একজন ভূমিহীন কৃষি পরিবার। পত্তনী কেসটি উপজেলা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংশোধন করা যেতে পারে বলে ওই প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়। পরবর্তীতে ৪০২৯/৮৯ নং পত্তনী কেস আংশিক সংশোধন বিষয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারী  ২০২১ এবং ০৮ ডিসেম্বর ২০২১ ইং পৃথক দুইটি তারিখ ধার্য থাকলেও ইয়াছিন আলী হাজির হয়নি বলে জানান মোজাম্মেল হক। পরবর্তী কালে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর পত্নীতলা সিনিয়র সহকারী  জজ আদালতে মোজাম্মেল হক এবং পত্নীতলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে বিবাদী  উল্লেখ করে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দাবী করে মামলা করেন ইয়াছিন আলী।

এবিষয়ে সোমবার বক্তব্যের জানার জন্য ইয়াছিন আলীর বাড়ীতে গেলে তাকে বাড়ীতে পাওয়া যায়নি। মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমি নওগাঁতে আছি ফিরে এসে সাক্ষাতে কথা বলবো। 

স্থানীয় ইউপির নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য হারুন অর রশিদ বলেন, দেশ স্বাধীনের আগে থেকে মোজাম্মেল ওই বাড়ীতে পরিবার সহ বসবাস করছে। পত্তনী কবুলিয়তটির সংশোধন করা না গেলে তাকে তার পরিবার সহ গৃহহীন থাকতে হবে। 

এবিষয়ে মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারী) পত্নীতলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ রাশেদুল ইসলামের কাছে মুঠো ফোনে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, নথি পত্র না দেখে বক্তব্য দেওয়া যাবেনা। নথি পত্র দেখে পরে জানানো হবে।

রাজশাহীর সময় /এএইচ