২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ০৬:৪৭:৩৬ পূর্বাহ্ন


রাজশাহীর আঞ্চলিক শিক্ষা অফিস ঘেরাও করেছেন কলেজের শিক্ষকরা
রাতুল সরকার
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-১১-২০২২
রাজশাহীর আঞ্চলিক শিক্ষা অফিস ঘেরাও করেছেন কলেজের শিক্ষকরা রাজশাহীর আঞ্চলিক শিক্ষা অফিস ঘেরাও করেছেন কলেজের শিক্ষকরা


রাজশাহীর আঞ্চলিক শিক্ষা অফিস ঘেরাও করেছেন কলেজের শিক্ষকরা। বুধবার (৯ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে আঞ্চলিক শিক্ষা দপ্তরের প্রধান ফটক ঘিরে মানববন্ধন শুরু করেন তারা।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) রাজশাহী অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক ড. কামাল হোসেন ও সহকারী পরিচালক ড. আবু রেজা আজাদের অপসারণের দাবিতে এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সমাবেশে বক্তারা রাজশাহী অঞ্চলের কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারীদের এমপিও, পদোন্নতি এবং উচ্চতর স্কেল পেতে ব্যাপক অনিয়ম এবং হয়রানির অভিযোগ আনেন ড. কামাল হোসেন ও ড. আবু রেজা আজাদের বিরুদ্ধে। শিক্ষকরা অবিলম্বে এই দুই কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেছেন।

বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী সমিতি ফেডারেশনের আয়োজনে এই কর্মসূচিতে রাজশাহী অঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা অংশ নেন। মানববন্ধন চলাকালীন সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির রাজশাহী জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা।

এ সময় তারা বলেন, পরিচালক ও সহকারী পরিচালকের সকল অনিয়মের সঙ্গী মাউশি সহকারী প্রোগ্রামার ডলি রানী পাল। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসদাচরণের অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে মাউশি। এরপর বরিশাল অঞ্চলে তাকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়। কিন্তু বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করেননি তিনি। তাকে আগের জায়গায় ফেরাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন পরিচালক ও সহকারী পরিচালক।

অনিয়ম-দুর্নীতিতে সহযোগীর শাস্তি হলেও পরিচালক-সহকারী পরিচালকের শাস্তি না পাওয়ায় ক্ষোভ জানান শিক্ষকরা।

জানা যায়, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ডলি রানী পালকে শাস্তিমূলক বদলির সুপারিশ করে গত ১৯ অক্টোবর সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেসিপ) প্রকল্পের যুগ্ম গ্রোগ্রাম পরিচালককে চিঠি দেন মাউশির সহকারী পরিচালক (কলেজ-২) তানভীর হাসান। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ সেপ্টেম্বর তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে সেসিপ।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই রাজশাহী আঞ্চলিক পরিচালক অধ্যাপক ড. কামাল হোসেন ও সহকারী পরিচালক ড. আবু রেজা আজাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে নড়েচড়ে বসে দুর্নীতি দমন কমিশন। গত বছরের ১০ ডিসেম্বর মাউশিকে পুরো বিষয় তদন্তের জন্য চিঠি দেয় দুদক। 

দুদকের কাছে অভিযোগ ছিল, রাজশাহী অঞ্চলে এমপিওর নামে আড়াই হাজার শিক্ষকের কাছে গড়ে ৫০ হাজার টাকা করে ঘুষ নেয়া হয়েছে। 

চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করে মাউশি। সরেজমিন তদন্ত করে সুস্পষ্ট মতামতসহ ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা ছিল।

এরপর পরিচালক ও সহকারী পরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, অসদাচরণ, এমপিওভুক্তি, পদোন্নতি ও উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনিয়ম এবং হয়রানির অভিযোগ করেন বাংলাদেশ সরকারি শিক্ষক সমিতির রাজশাহী অঞ্চলের সভাপতি ও সম্পাদক।

এই বছরের ৩০ মার্চ মাউশির মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন শাখার পরিচালক অধ্যাপক আমির হোসেনের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি হয়। গত ১২ এপ্রিল রাজশাহীতে এসে সরেজমিন তদন্ত করে যায় কমিটি। গত ২৪ আগস্ট তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করে।