২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৯:২৯:১২ অপরাহ্ন


যে ১১ দোয়ায় হেদায়েত দেবেন আল্লাহ
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-১১-২০২২
যে ১১ দোয়ায় হেদায়েত দেবেন আল্লাহ ফাইল ফটো


হেদায়েত আল্লাহ তাআলার মহা নেয়ামত। আল্লাহ তাআলা বান্দাকে উদ্দেশ্য করে তাঁর কাছে হেদায়েত চাওয়ার কথা বলেছেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে হেদায়েত চায় আল্লাহ তাআলা তাকে হেদায়েত দান করবেন। আল্লাহর কাছে হেদায়েত পাওয়ার জন্য ১০টি দোয়া রয়েছে। যেসব আবেদনে আল্লাহ বান্দাকে হেদায়েত দান করবেন। এ সম্পর্কে হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত আবু যর আল গিফারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহান আল্লাহর কাছে থেকে বর্ণনা করেন-

يَا عِبَادِي! كُلُّكُمْ ضَالٌّ إلَّا مَنْ هَدَيْته، فَاسْتَهْدُونِي أَهْدِكُمْ

‘হে আমার বান্দাগণ! আমি যাকে হেদায়েত (সঠিক পথের সন্ধান) দিয়েছি সে ছাড়া তোমরা সকলে পথভ্রষ্ট। সুতরাং তোমরা আমার কাছে হেদায়েত চাও; আমি তোমাদের হেদায়েত দান করবো।’ (মুসলিম)

কোরআন-সুন্নাহ ঘোষিত হেদায়েত পাওয়ার ১০ দোয়া তুলে ধরা হলো-

১. اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ

উচ্চারণ : ‘ইহদিনাস সিরাত্বাল মুসতাক্বিম।’

‘(হে আল্লাহ!) আমাদেরকে সরল পথ দেখাও।" (সুরা ফাতিহা)

২. اللَّهُمَّ إِنِي أَسْأَلُكَ الهُدَى، وَالتُّقَى، وَالعفَافَ، والغنَى‎

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল হুদা ওয়াততুক্বা ওয়াল আফাফা ওয়াল গিনা।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে সুপথ, আল্লাহ ভীতি,  চরিত্রের নির্মলতা ও অভাব মুক্তির প্রার্থনা করছি।’ (তিরমিজি)

৩. اللَّهُمَّ أَلْهِمْنِي رُشْدِي، وَأَعِذْنِي مِنْ شَرِّ نَفْسِي

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা আলহিমনি রুশদি, ওয়া আয়িজনি মিন শাররি নাফসি।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাকে হেদায়েত দান করো এবং নফসের অনিষ্ট থেকে আমাকে রক্ষা করো।’ (তিরমিজি) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত হুসাইন ইবনে আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুকে দুটি বাক্য দ্বারা দোয়া করতে শিখিয়েছিলেন।

৪. رَبِّ أَعِنِّي وَلاَ تُعِنْ عَلَىَّ وَانْصُرْنِي وَلاَ تَنْصُرْ عَلَىَّ وَامْكُرْ لِي وَلاَ تَمْكُرْ عَلَىَّ وَاهْدِنِي وَيَسِّرِ الْهُدَى لِي

উচ্চারণ :  রাব্বি আয়িননি ওয়ালা তুয়িন আলাইয়া। ওয়ানসুরনি ওয়া লা তানসুর আলাইয়া। ওয়ামকুর লি ওয়ালা তামকুর আলাইয়া, ওয়াহদিনি ওয়া ইয়াসসিরিল হুদা লি।’

অর্থ : ‘হে আমার রব! আমাকে সাহায্য করো এবং আমার বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্য করো না। আমাকে সহযোগিতা করো এবং আমার বিরুদ্ধে কাউকে সহযোগিতা করো না। আমার জন্য কৌশল এঁটো, আমার বিরুদ্ধে কৌশল এঁটো না। আমাকে হেদায়েত দান করো, আমার জন্য হেদায়েতের পথ সহজতর করো (ইবনে মাজাহ)

৫. ‏ اللَّهُمَّ رَبَّ جِبْرَائِيلَ وَمِيكَائِيلَ وَإِسْرَافِيلَ فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ أَنْتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ اهْدِنِي لِمَا اخْتُلِفَ فِيهِ مِنَ الْحَقِّ بِإِذْنِكَ إِنَّكَ تَهْدِي مَنْ تَشَاءُ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ ‏‏ ‏

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা রব্বা জিবরাঈলা ওয়া মিকাঈলা ওয়া ইসরাফিলা ফাত্বিরাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি আলিমাল গাইবি ওয়াশ্ শাহাদাতি আন্তা তাহকুমু বাইনা ইবাদিকা ফিমা কানু ফিহি ইয়াখতালিফুন; ইহদিনি লিমা উখতুলিফা ফিহি মিনালহাক্বি বিইজনিকা, ইন্নাকা তাহদি মান তাশাউ ইলা সিরাতিম মুস্তাক্বিম। (মুসলিম)

অর্থ: হে আল্লাহ! জিবরিল, মীকাল ও ইস্রাফীলের রব, আকাশসমূহ ও পৃথিবীর স্রষ্টা, গায়েব ও উপস্থিত সকল বিষয়ে সর্বজ্ঞ। তোমার বান্দাগণ যে সব বিষয়ে মতভেদ করে তুমি তার মীমাংসা কর, সত্য থেকে দূরে সরে যে সব বিষয়ে মতভেদ করা হয় সেগুলিতে তোমার সহায়তায় আমাকে সঠিক পথ নির্দেশনা দাও। নিশ্চয় তুমি যাকে ইচ্ছা সঠিক পথ প্রদর্শন কর।’ (মুসলিম)

৬. اَللّٰهُمَّ اهْدِنِيْ وَسَدِّدْنِيْ - اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ الْهُدٰى وَالسَّدَادَ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মাহদিনী ওয়া সাদ্দিদনি, আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল হুদা ওয়াস-সাদাদ।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাকে হেদায়েত দান কর, আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত কর। হে আল্লাহ! তোমার কাছে হেদায়েত ও সঠিক পথ কামনা করছি।’ (মুসলিম)

৭. اللَّهُمَّ ثَبِّتْنى وَاجْعَلْنى هَادِيًا مَهْدِيًّا

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা সাব্বিতনি ওয়াঝআলনি হাদিয়াম মাহদিয়া।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাকে স্থির রাখুন ও হেদায়েতকারী ও হেদায়েত প্রাপ্ত বানান।’ (মুসলিম)

◈ দুআ: ৮

اللهمَّ اهْدِني فيمن هديتَ, وعافِني فيمن عافيتَ, وتولَّني فيمن توليتَ, وبارِكْ لي فيما أعطيتَ, وقِنِي شرَّ ما قضيتَ, فإنك تقضي ولا يُقْضَى عليك, وإنَّهُ لا يَذِلُّ من واليتَ, ولا يَعِزُّ من عاديتَ, تباركتَ ربنا وتعاليتَ, لا مَنْجَا منك إلا إليكَ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মাহদিনী ফি মান হাদাইত। ওয়া আফিনি ফিমান আফাইত। ওয়া তাওয়াল্লানি ফিমান তাওয়াল্লাইত। ওয়া বারিকলি ফি মা আত্বাইত। ওয়া ক্বিনি শাররা মা ক্বাদ্বাইত। ফাইন্নাকা তাক্বদ্বি ওয়া লা ইউক্বদ্বা আলাইক। ওয়া ইন্নাহু লা ইয়াজিল্লু মাঁউ ওয়া লাইত। ওয়া লা ইয়াইয্‌যু মান আদাইত। তাবারাকতা রাব্বানা ওয়া তাআলাইত। লা মানজা মিনকা ইল্লা ইলাইক।’

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি যাদেরকে হেদায়েত করেছ, আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত কর। তুমি যাদের নিরাপদ রেখেছ আমাদের তাদের দলভুক্ত কর। তুমি যাদের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছ, আমাদের তাদের দলভুক্ত করো। তুমি আমাদের যা দিয়েছ তাতে বরকত দাও। তুমি যে অমঙ্গল নির্দিষ্ট করেছ তা থেকে আমাদের রক্ষা করো। নিশ্চয়ই তুমি ফয়সালা করো; তোমার ওপরে ফয়সালা করার কেউ নেই। তুমি যার অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছ, সে কোনও দিন অপমানিত হবে না এবং তুমি যার সাথে শত্রুতা করেছ, সে কখনো সম্মানিত হতে পারবে না। হে আমাদের রব! তুমি বরকতময় ও সুমহান। তোমার পাকড়াও থেকে বাঁচার উপায় নাই তোমার আশ্রয় ছাড়া।’ (তিরমিজি) হজরত হাসান বিন আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বিতর সলাতে বলার জন্য এ দোয়াটি শিখিয়েছেন।

৯. ‎رَبَّنَا لاَ تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ

উচ্চারণ : রব্বানা লা তুযিগ কুলুবানা বাদা ইজ হাদাইতানা ওয়া হাবলানা মিল্লাদুনকা রহমাতান, ইন্নাকা আন্তাল ওয়াহহাব।

অর্থ : ‘হে আমাদের রব! আপনি হেদায়েত দেওয়ার পর আমাদের অন্তরসমূহ বাঁকা করবেন না এবং আপনার পক্ষ থেকে আমাদের রহমত দান করুন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ৮)

(হেদায়েত লাভের পর অন্তরের বক্রতা হতে মুক্তি চাওয়ার দুআ)

১০. اللَّهُمَّ مُصَرِّفَ القُلُوبِ صَرِّفْ قُلُوبَنَا عَلَى طَاعَتِكَ

উচ্চারণ : ‘ইয়া মুসাররিফাল কুলুব সাররিফ কুলুবানা আলা ত্বআতিকা।’

অর্থ : ‘হে হৃদয়সমূহের পরিবর্তনকারী! আমাদের হৃদয়গুলোকে আপনার আনুগত্যের দিকে ঘুরিয়ে দিন।’ (মুসলিম)

১১. ‎يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِى عَلَى دِينِكَ

উচ্চারণ : ইয়া মুকাল্লিবাল কুলুব, সাব্বিত কলবি আলা দ্বীনিকা।

অর্থ : ‘হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে তোমার দ্বীনের উপর সুদৃঢ় করে দাও।” (তিরমিজি)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সঠিক পথ ও হেদায়েত পাওয়ার জন্য মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি এ দোয়াগুলো পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।