২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৪:২৯:৫৩ অপরাহ্ন


তান্ত্রিকের’ পরামর্শে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করলো গৃহশিক্ষক
তমাল দাস :
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-১০-২০২২
তান্ত্রিকের’ পরামর্শে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করলো গৃহশিক্ষক তান্ত্রিকের’ পরামর্শে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করলো গৃহশিক্ষক


বয়স বেড়েই চলেছে বিয়ে হচ্ছে না। ‘তান্ত্রিক’-এর পরামর্শ  অনুযায়ী অমাবস্যার রাতে তাঁর পায়ে কোনও নাবালিকার রক্তবস্ত্র অর্পণ করতে হবে। তা জোগাড় করার জন্য দ্বিতীয় শ্রেনির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে সবুজ দে  (৩০) নামের এক গৃহশিক্ষক।

রবিবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বনমালীপুরে এ ঘটনাটি ঘটে। তান্ত্রিকের নাম গুরুপদ মাঝি। বেলিয়াতোড়ের নারায়ণগঞ্জের মাঝি পাড়ায় এটি মনসা মন্দিরে গুরুপদ তান্ত্রিক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন তুকতাক চর্চা করে থাকে বলে জানা গেছে।

সবুজ দে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করার পর নিজের বাড়িতেই গ্রামের ছেলেমেয়েদের টিউশন পড়ায় সে। বেশ কিছুদিন ধরেই তার বিয়ের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছিল। কিন্তু বয়স বেড়ে গেলেও কিছুতেই সম্বন্ধ পাকা হচ্ছিল না। অবশেষে আত্মীয়দের মুখ থেকে সে তান্ত্রিক গুরুপদ মাঝির সন্ধান পায়। গুরুপদ সবুজকে জানায়, মা মনসা তার উপর রুষ্ট।  ১ হাজার টাকা দক্ষিণার বিনিময়ে সে সবুজকে নিদান দেয়। মায়ের মন পেতে গেলে অমাবস্যার রাতে তাঁর পায়ে কোনও নাবালিকার রক্তবস্ত্র অর্পণ করতে হবে।

সেই মতোই কালীপুজোর রাতে মায়ের পায়ে নাবালিকার রক্তে ভেজানো বস্ত্র নিবেদন করার সিদ্ধান্ত নেয় সবুজ। সেই কাজের জন্য সে নিশানা করে তারই কাছে পড়তে আসা দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে। গত ২৩ অক্টোবর অন্য ছাত্রছাত্রীদের বেশ কিছুটা আগে ছেড়ে দেয় সবুজ। কিন্তু আটকে রাখে ওই নাবালিকাকে। তারপর তাকে ধর্ষণ করে সাদা কাপড় ভিজিয়ে নেয় তার রক্তে। 

এদিকে রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি ফেরার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই নাবালিকা। বাবা-মার কাছে সব কথা খুলে বলে সে। তাকে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৪ অক্টোবর নাবালিকার পরিবার  বিষ্ণুপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সবুজ দেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

রবিবার গ্রেফতার করা হয় তান্ত্রিক গুরুপদ মাঝিকেও।

সোমবার তাকে আদালতে তোলা হবে। অভিযুক্ত গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। রবিবার তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশের কাছে সব ঘটনা নিজের মুখেই স্বীকার করেছে সবুজ। সে জানিয়েছে, নির্যাতিতা ছাত্রীকে সে চকলেটের লোভ দেখিয়ে এবং মা মনসার বিশেষ খেলা দেখানোর নাম করে সেদিন বাড়িতে আটকে রেখেছিল। গ্রেফতার তান্ত্রিক গুরুপদ মাঝির ব্যাপারে পুলিশ জানিয়েছে, ওই মনসা মন্দিরে দীর্ঘদিন ধরেই ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল সে। তুকতাক, বশীকরণ থেকে শুরু করে এই ধরনের বিভিন্ন কার্যকলাপের সিদ্ধহস্ত ছিল গুরুপদ। অনেক দূরদূরান্ত থেকেও সমস্যা সমাধানের জন্য তার কাছে লোকজন আসত বলে জানা গেছে। তার প্ররোচনাতেই নাবালিকাকে ধর্ষণ করে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সবুজ।