২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০২:২৩:২৭ পূর্বাহ্ন


প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ২৮ হাজার ভুয়ো ফোন নম্বরের সন্ধান পেল পুলিশ
ইব্রাহীম হোসেন সম্রাট
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-১০-২০২২
প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ২৮ হাজার ভুয়ো ফোন নম্বরের সন্ধান পেল পুলিশ ফাইল ফটো


যত দিন যাচ্ছে, দেশে সাইবার জালিয়াতির ঘটনা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। নিত্যনতুন নানারকম ফন্দিফিকিরকে হাতিয়ার করে ইউজারদেরকে প্রতারিত করার জন্য জালিয়াতরা অনর্গল প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যার জেরে গড়ের মাঠ হচ্ছে অসংখ্য মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। মূলত ভুয়ো ফোন কল এবং এসএমএসের মাধ্যমে সহজসরল সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে থাকে হ্যাকাররা। সেক্ষেত্রে সম্প্রতি এক রিপোর্টে জানা গিয়েছে যে, হরিয়ানা পুলিশ হালফিলে ২৮,০০০ টি মোবাইল নম্বরের সন্ধান পেয়েছে, যেগুলি দুর্বৃত্তরা সাইবার জালিয়াতির জন্য ব্যবহার করছে। তবে এই বিপুল সংখ্যক মোবাইল নম্বরকে কাজে লাগিয়ে এখনও পর্যন্ত তারা কতজনকে প্রতারণা করেছে, সে সম্পর্কে আপাতত কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশের তরফে আপামর জনগণকে সুনিশ্চিত দেওয়া হয়েছে যে, খুব শীঘ্রই এই সমস্ত নম্বরগুলিকে ব্লক করা হবে, যাতে আগামী দিনে আর কেউ দুর্বৃত্তদের পাতা ফাঁদে পা দিতে না পারে৷

২৮,০০০ টি ভুয়ো মোবাইল নম্বরকে কাজে লাগিয়ে দেশের নানা প্রান্তের মানুষকে প্রতারণা করছে হ্যাকাররা

রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ২৮,০০০ টি মোবাইল নম্বরের মধ্যে ২৭,৮২৪ টি নম্বরকে সনাক্ত করা হয়েছে ১৯৩০ সাইবার ক্রাইম হেল্পলাইন নম্বর এবং cybercrime.gov.in ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। এই জাল নম্বরগুলিকে দেশের কোন কোন জায়গায় সর্বাধিক পরিমাণে ব্যবহার করা হয়েছে, সেকথাও রিপোর্টটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বিপুল সংখ্যক ভুয়ো নম্বরের মধ্যে গুরুগ্রামে ৭১৪২ টি, ফরিদাবাদে ৩৮৯৬ টি, পঞ্চকুলায় ১৪২০ টি, সোনিপতে ১৪০৮ টি, রোহতকে ১০৪৫ টি, হিসারে ১২২৮ টি, এবং আম্বালায় ১১০১ টি নম্বর ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ, উল্লিখিত জেলাগুলির বাসিন্দারাই যে হ্যাকারদের দ্বারা সর্বাধিক পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সেকথা বলাই বাহুল্য। তাই যারা উপরিউক্ত জায়গাগুলিতে থাকেন, তাদেরকে তো সতর্ক হতেই হবে; সেইসাথে দেশের আপামর জনগণেরও বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন থাকা একান্ত আবশ্যক।

হ্যাকারদেরকে বাগে আনতে IMEI নম্বরের ওপরেও নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ

উল্লেখ্য যে, এই সমস্ত ভুয়ো মোবাইল নম্বরকে ব্লক করার পাশাপাশি এগুলিকে যথোপযুক্তভাবে চিহ্নিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট আইএমইআই (IMEI) নম্বরগুলির ওপরেও নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। কোন মোবাইল ফোনে এই নম্বরগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা জানাই হল মূলত এই নজরদারির প্রধান উদ্দেশ্য। এর ফলে কোন কোন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে হ্যাকাররা সহজসরল সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করছে, আগামী দিনে তা তো জানা যাবেই; সেইসাথে কোন কোন জায়গায় এই ধরনের জালিয়াতির ঘটনা সর্বাধিক পরিমাণে ঘটছে, সে বিষয়েও সমস্ত তথ্য পুলিশের হাতের মুঠোয় চলে আসবে। এর সুবাদে নম্বরগুলিকে ব্লক করা এবং জালিয়াতদের সন্ধান পাওয়াও অনেকটা সহজ হয়ে যাবে।

হ্যাকারদের হাত থেকে বাঁচতে চাইলে চোখকান খোলা রেখে চলা খুবই জরুরি

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, ভুয়ো ফোন নম্বরকে কাজে লাগিয়ে জালিয়াতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪৭ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। গোটা দেশের নানা জায়গায় এই ধরনের ঘটনা পরিলক্ষিত হয়েছে, তাই সকল দেশবাসীর এই বিষয়টি সম্পর্কে সতর্ক হওয়া খুবই জরুরি। উল্লেখ্য যে, পুলিশ ইতিমধ্যেই এই সমস্ত অভিযোগগুলিকে কেন্দ্র করে সরেজমিনে তদন্ত করা শুরু করেছে। আর সবচেয়ে আনন্দের খবর হল, সহজসরল সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে তথা তাদেরকে ঠকিয়ে হ্যাকাররা যে টাকা আদায় করেছিল, তার মধ্যে থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই পুলিশ জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে। সবমিলিয়ে বলতে গেলে, একটুখানি সতর্কতা অবলম্বন করলেই কিন্তু অনায়াসে হ্যাকারদেরকে পরাস্ত করা সম্ভব; তাই বর্তমান ডিজিটাল যুগে সুরক্ষিত তথা নিরাপদ থাকতে হলে সকলকে অবশ্যই চোখকান খোলা রেখে চলতে হবে।