২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ০৬:০৫:২৯ পূর্বাহ্ন


নিজের আশ্রমের দুই শিষ্যাকে ধর্ষণ, ধর্মগুরু রাম-রহিম খোশমেজাজে
তমাল দাস :
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-১০-২০২২
নিজের আশ্রমের দুই শিষ্যাকে ধর্ষণ, ধর্মগুরু রাম-রহিম খোশমেজাজে নিজের আশ্রমের দুই শিষ্যাকে ধর্ষণ, ধর্মগুরু রাম-রহিম খোশমেজাজে


নিজের আশ্রমের দুই শিষ্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে ২০ বছরের জেল হয়েছে। কিন্তু হরিয়ানার ধর্মগুরু ডেরা সাচ্চা সৌদার প্রধান গুরমিত রাম রহিমের ক্ষমতা অসীম। জেল থেকে প্রায়ই প্যারোলে মুক্তি পান গুরুজি। এখন চল্লিশ দিনের জন্য প্যারোলে মুক্ত। জেলের বাইরে খোশমেজাজেই আছেন গুরুজি।

প্যারোলে মুক্তির সুযোগ নিয়ে অনলাইনে ভক্তদের সঙ্গে মিলিত হওয়া তো আছেই, দীপাবলি উপলক্ষে ইউটিউবে রিলিজ হয়েছে গুরুজির মিউজিক ভিডিও। কথা, সুর সবই গুরুজির।

এই দফায় মুক্তি পেয়ে পালিতা কন্যা হানিপ্রীতের নামও বদলে দিয়েছেন গুরুজি। হানিপ্রীতের নতুন নাম রুহানি দিদি। আদর করে রুহুদি নামে ডাকছে ভক্তবৃন্দ। হরিয়ানার পাঁচকুলা এবং অন্যত্র দাঙ্গায় যুক্ত থাকার অভিযোগে রাম-রহিমের এই পালিতা কন্যাকেও দু’বছর জেলে কাটিয়ে আসতে হয়েছে।

ডেরা সাচ্চা সৌদার প্রধান হরিয়ানা ছাড়াও পাঞ্জাব, রাজস্থান এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়। সেই গুরুর এখন দ্বিতীয় পরিচয় হল, দুই শিষ্যাকে ধর্ষণের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। হরিয়ানার একটি আদালত তাকে কুড়ি বছরের কারাবাসের সাজা দিয়েছে। তবে মাঝে মধ্যে প্যারলে মুক্তি পান গুরু রাম রহিম। হরিয়ানার বিজেপি সরকার তার জন্য জেড প্লাস সিকিউরিটি বরাদ্দ করেছে। এখন ৫৬ জনের কম্যান্ডো বাহিনী ঘিরে রাখে তাকে। বরাদ্দ হয়েছে বুলেট প্রুফ গাড়ি।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে প্যারোলে মুক্ত থাকাকালে কোনও আসামি কি মিউজিক ভিডিও রিলিজ করতে পারে? আইন এই ব্যাপারে অস্পষ্ট। তবে ডেরা সাচ্চা সৌদার প্রধানকে নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে তার ঘনঘন প্যারোলে মুক্তি নিয়ে।

গুজরাতে বিলকিস বানোর ধর্ষকদের যাবজ্জীবন সাজা রদ করে মুক্তি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যের বিজেপি সরকার। সেই ১১ ধর্ষকও পুরোপুরি মুক্তি পাওয়ার আগে গড়ে এক হাজার দিন জেলের বাইরে ছিল প্যারোলে মুক্তির সুযোগ নিয়ে। এই সাময়িক মুক্তিদানের ক্ষমতা পুরোপুরি রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত। ধর্ষণের অভিযোগে কুড়ি বছর কারাবাসের সাজা পাওয়া গুরমিত রাম রহিমকে এর আগেও প্যারলে মুক্তি দিয়েছে হরিয়ানার বিজেপি সরকার।

হরিয়ানার হিসারে সম্প্রতি একটি অনলাইন বক্তৃতা শুনতে হাজির ছিলেন রাজ্যের ডেপুটি স্পিকার। ছিলেন কারনালের মেয়র রেণুবালা-সহ আরও কয়েকজন বিজেপি নেতা। গুরমিতের উত্তরপ্রদেশের বাগপতের বারনাওয়া আশ্রম থেকে অনলাইন সৎসঙ্গের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ধর্ষক গুরুদেবকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন বিজেপি নেতারা।

আসলে আগামী মাসে হরিয়ানায় পঞ্চায়েত ভোট। আছে বিধানসভার একটি আসনের উপনির্বাচনও। ডেরা সাচ্চা সৌদার প্রধান গুরমিতের ভক্তকূল বিশাল। বছর দুই আগে ধর্ষক বাবাকে পুলিশের গ্রেফতার এবং আদালত থেকে জেলে নিয়ে যেতে হরিয়ানার প্রশাসনকে কার্ফু জারি করতে হয়েছিল। মোতায়েন করতে হয় হাজার পুলিশ ও আধা সেনা। গুরমিতের শিষ্যরা পথ আটকাতে হিংসাশ্রয়ী হয়ে উঠেছিল। মারাও গেছিলেন কয়েক জন। 

এই দফায় ১৪ অক্টোবর ৪০ দিনের প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয় এই গুরুদেবকে। অনলাইন বক্তৃতা চলাকালে গুরমিতের সঙ্গে কথা বলেন বিজেপি নেতাদের অনেকেই। তাঁর আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন। বলেন, আপনার সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলতে উন্মুখ হয়ে আছি।