২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ০৫:১২:০৪ অপরাহ্ন


নর্দমায় জমে থাকে ব্যবহৃত কন্ডোম, বার্মিংহামের যৌনপল্লিতে সকালেও হাঁটা দায়
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-১০-২০২২
নর্দমায় জমে থাকে ব্যবহৃত কন্ডোম, বার্মিংহামের যৌনপল্লিতে সকালেও হাঁটা দায় ফাইল ফটো


সাতসকালই ‘কেনাবেচা’ শুরু হয়ে যায় বার্মিংহামের কুখ্যাত যৌনপল্লিতে। খদ্দেরদের খোঁজে রাস্তায় নেমে পড়েন দালালেরা। নর্দমায় উপচে পড়ে কন্ডোম। বিয়ারের ফাঁকা ক্যান। জমে থাকে মাদকের সিরিঞ্জ। দিনের আলোয় খদ্দেরদের নিয়ে ফোনবুথের ভিতরে ঢুকে পড়েন যৌনকর্মীরা। এ সবের জেরে সোহো স্ট্রিটের রাস্তাঘাটে চলাফেরা করাই নাকি দায় হয়ে ওঠে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে বার্মিংহামের নাম অবশ্য বেশ পরিচিত। ইংল্যান্ডের এই শহরে রয়েছে এজবাস্টনের মতো স্টেডিয়াম। তবে শহরের কেন্দ্রে রয়েছে ‘অন্ধকারময়’ সোহো স্ট্রিটও।

সোহো স্ট্রিটের স্থানীয়দের দাবি, সকাল ৮টা হতে না হতেই যৌনপেশার সঙ্গে জড়িত লোকজনের দখলে চলে যায় এ রাস্তার অলিগলি। গাড়ি পার্কিংয়ে ঢুকে ব্যবসা শুরু করেন যৌনকর্মীরা। লাইব্রেরির ঘুপচি কোণও বাদ পড়ে না।

তিতিবিরক্ত স্থানীয়দের দাবি, ঘুম ভাঙতেই দেখা যায়, আশপাশের সমস্ত নর্দমা ভরে উঠেছে আবর্জনায়। ব্যবহৃত কন্ডোম, মদের ফাঁকা ক্যান ছাড়াও মাদকের সিরিঞ্জের পাহাড় জমে গিয়েছে।

সোহো স্ট্রিট জুড়ে যৌনকর্মী বা দালালেরা ছাড়াও দল বেঁধে ঘুরে বেড়াতে থাকেন মত্ত লোকজন। এমনই দাবি এলাকার বাসিন্দা থেকে স্থানীয় দোকানিদের। সেই সঙ্গে আনাগোনা হয় অপরাধীদেরও।

দিনের আলোয় নাকি চলতে থাকে মাদক কেনাবেচা। প্রকাশ্যেই নাকি চলে মাদক সেবন। এ সবের জেরে স্থানীয় দোকানিদের বিক্রিবাটায় অসুবিধা হয় বলে দাবি।

দীপক পটেল নামে সোহো স্ট্রিটের এক দোকানি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, গত কয়েক বছরে এ রাস্তায় ব্যবসা করাই দায় হয়ে গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘গত পাঁচ-ছ’বছরের বেশি সময় ধরে সোহো স্ট্রিটে গজিয়ে ওঠা যৌনপল্লির জেরে এখানকার পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে।’’

সাতসকালেই যৌনকর্মীদের জ্বালায় তাঁদের ব্যবসায় প্রভাব পড়ছে বলে দাবি দীপকের। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি দিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে যৌনকর্মীদের দাপটে আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়। এমন আগেও ছিল। রাস্তায় কন্ডোম পড়ে থাকে। সকালবেলায় এক বার এই রাস্তায় হেঁটেই দেখুন না!’’

সকালবেলায় সোহো স্ট্রিটে দোকান খোলার আগে নিজেদেরই রাস্তার আবর্জনা সাফ করতে হয় বলে জানিয়েছেন দীপক। তাঁর কথায়, ‘‘চারপাশে কন্ডোম বা তার প্যাকেট অথবা সিরিঞ্জ পড়ে থাকে। প্রতি দিন এখানে এসে আবর্জনা সাফ করাটা তো রোজকার কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’

সোহো স্ট্রিটের এ হেন অবনতি দেখে ব্যথিত স্থানীয় বাসিন্দা ড্যানিয়েল চাঁদ। পরিবার নিয়ে এখানে বসবাস তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘এই এলাকার পরিস্থিতি ক্রমশই বিগড়ে যাচ্ছে। যৌনপেশার সঙ্গে সঙ্গে ভিক্ষাবৃত্তি আর মাদকের রমরমা রয়েছে।’’

ড্যানিয়েলের কথায়, ‘‘দিনের বেলাতেও এলাকায় যৌনবৃত্তি চলে। ওঁরা (যৌনকর্মীরা) এখানে দাঁড়িয়ে থাকেন। মাঝেমধ্যে ফোনবুথেও ঢুকে পড়েন। খদ্দেরদের যাতায়াত লেগেই থাকে। এমনকি হ্যান্ডসওয়র্থ লাইব্রেরির পাশে একটি ছোট ঘুপচি জায়গাতেও যৌনবৃত্তি চলে।’’

সোহো স্ট্রিটের এই সমস্যাগুলি নিয়ে প্রশাসন উদাসীন বলে দাবি ড্যানিয়েলের। তাঁর মন্তব্য, ‘‘প্রশাসন শুধু বড় বড় কথাই বলে। কাজের কাজ কিছু হয় না।’’