কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে এসএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব মো. লুৎফর রহমানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সুমন আলী রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আজহার আলী প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানের তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আজহার আলী বলেন, আজ রিমান্ড আবেদনের শুনানি ছিল। প্রশ্ন ফাঁসের মামলায় লুৎফর রহমানের তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলাম আমরা। বিজ্ঞ আদালত শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও যারা জড়িত আছেন তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ সেপ্টেম্বর এসএসসির ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্ন ফাঁসের ‘গুজব’ ওঠায় নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ট্যাগ কর্মকর্তা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আদম মালিক চৌধুরী বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপক কুমার দেব শর্মার নজরে আনেন। এরপর পরীক্ষা শেষে তারা কেন্দ্র সচিব ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানের কক্ষে গিয়ে এ নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। প্রথমে তিনি (প্রধান শিক্ষক) সদুত্তোর দিতে না পারলেও পরে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন যে, তার কাছে পরবর্তী পরীক্ষার প্রশ্ন রয়েছে। পরে তিনি সকলের উপস্থিতিতে তার রুমের বুক সেলফের নিচের তাক থেকে একটি কাপড়ের ব্যাগের ভেতর প্যাকেটে থাকা কয়েকটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বের করে দেন।
মামলার বাদী এবং ওই কেন্দ্রের ট্যাগ কর্মকর্তা এজাহারে উল্লেখ করেন, ব্যাগের ভেতর থেকে গণিত (আবশ্যিক), উচ্চতর গণিত, রসায়ন, কৃষি, জীববিজ্ঞান ও পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ের প্রশ্নপত্রের প্যাকেট বের করা হয়। এর মধ্যে একটি প্যাকেট ছাড়া বাকি সব প্যাকেটের মুখ খোলা ছিল। তখন ট্যাগ কর্মকর্তার নির্দেশে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাঈদ মো. আতিক নুর উল্লেখিত বিষয়ের প্রশ্নপত্র সমূহ জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করেন এবং কেন্দ্র সচিব ও প্রধান শিক্ষককে হেফাজতে নেন।
দায়েরকৃত মামলায় প্রধান শিক্ষকের সহযোগী হিসেবে ছিলেন ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুল ইসলাম রাসেল, ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা যুবায়ের হোসেন, সোহেল রানা, হামিদুর রহমান, অফিস সহকারী সুজন মিয়া ও অফিস সহকারী আবু হানিফ। সাতজনের মধ্যে ছয়জনই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। একজন এখনো পলাতক রয়েছেন।