চট্টগ্রামে ইয়াবার নেশায় অভ্যস্ত করে মাদক ব্যবসায় নিয়োজিত করার জন্য অপহরণ: অপহৃত ভিকটিম উদ্ধারসহ অপহরণকারী ও তার সহযোগী দুই নারী মাদক কারবারিকে ৩৭৫২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭।
অপহৃত ভিকটিম ১৫ বছর বয়সের এবং পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে। ভিকটিমের বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সে আর লেখাপড়া করেনি। আসামী মোঃ মনির হোসেন (৩৫) ভিকটিমের মায়ের সম্পর্কে ভাগিনা হয়। সেই সুবাধে সে প্রায়ই ভিকটিমদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করত। গত কয়েক মাস পূর্বে মনির হোসেন তার পূর্বের ৩টি স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও ভিকটিমকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়।
ভুক্তভোগীর মা মনিরের বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় এবং তার নাবালিকা মেয়ের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ কিংবা উত্যক্ত না করার জন্য নিষেধ করে। এতে মনির ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিমের মাকে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করে বলে যেকোন সময় তার মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত (২২ জুলাই ২০২২) দুপুর অনুমান ১টায় ভিকটিম বাসা হতে কাজের জন্য বের হলে আসামী মনির পূর্বপরিকল্পিতভাবে ভিকটিমকে ফুসলিয়ে একটি প্রাইভেটকারযোগে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। ভিকটিম সন্ধ্যা পর্যন্ত বাসায় ফিরে না আসায় তার মা সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে চট্টগ্রাম জেলার ডবলমুরিং থানায় নিখোজ সংক্রান্তে একটি জিডি করেন যার জিডি নং-১২৭২, তারিখ-২২ জুলাই ২০২২।
এরপর ভিকটিমের মা তার বোনের নিকট হতে জানতে পারেন আসামী মনির হোসেন তার সহযোগী মোঃ রাকিবের সহায়তায় ভিকটিমকে অপহরণ করেছে। ওই ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হতে চট্টগ্রাম জেলার ডবলমুরিং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং- ৩১, তারিখ: ২৮ জুলাই ২০২, ধারা: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ০৭/৩০ এবং বিষয়টি র্যাব-৭, চট্টগ্রামকে অবহিত করেন।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ভিকটিমকে উদ্ধার এবং অপহরনের সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ সেপ্টেম¦র ২০২২ রাত অনুমান ৩.০৫ মিনিটে কুমিল্লা জেলার কোতায়ালী দৌলতপুর এলাকার একটি ফ্লাট বাসা হতে উক্ত অপহরণের সাথে জড়িত প্রধান আসামী মনির হোসেন(৩৫), পিতা-আব্দুল হামিদ, সাং-হায়দারাবাদ, থানা-বাঙ্গরা বাজার, জেলা-কুমিল্লা এবং তার অপর ২ সহযোগী সকিনা আক্তার অরফে ফারজানা(৩০) ও শিমুল আক্তার(৪০)কে মোট ৩,৭৫২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করা হয় এবং অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা স্বীকার করে , আসামী মনির হোসেন তার সহযোগী মোঃ রাকিবের সহায়তায় ভিকটিমকে বিভিন্ন ধরণের লোভ-লালসা ও মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে ২মাস পূর্বে চট্টগ্রাম হতে অপহরণ করে কুমিল্লায় নিয়ে আসে এবং একটি ফ্লাটে আটকে রেখে মাদকাসক্ত করে মাদক পাচারের কাজে ব্যবহার করার চেষ্টা করে।
গ্রেফতারকৃত অপহরণকারী ও মাদক ব্যবসায়ী তার দুই সহযোগী মহিলা মাদক ব্যবসায়ীদেরকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে কুমিল্লা কোতোয়ালী থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে এবং উদ্ধারকৃত ভিকটিমকে ডবলমুরিং থানায় পূর্বের রুজুকৃত মামলায় হস্তান্তর করা হয়েছে।