আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে দ্বীনের ইলম বা জ্ঞান দান করেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে এমন কথা ঘোষণা দিয়েছেন। আর দ্বীনি ইলম শিক্ষা করা সবার জন্য ফরজ। ইমাম বুখারি ও মুসলিম রাহমাতুল্লাহি আলাইহি দ্বীনি ইলম শিক্ষা সংক্রান্ত হাদিসটি একসঙ্গে নিজ নিজ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন এভাবে-
হজরত মুআবিয়া ইবন আবু সুয়িান রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে দ্বীনের ইলম দান করেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)
আল্লাহ যে ব্যক্তি কল্যাণ ও উপকার কামনা করেন, তাকে আল্লাহ তাআলা ইমলামি শরিয়তের বিধানের আলেম ও বিচক্ষণ বানান। ফিকহ শব্দটি দুটি অর্থে ব্যবহৃত হয়-
এক. ইসলামি শরিয়তের বিস্তারিত দলিল (কোরআন ও সুন্নাহ) থেকে নির্গত কর্ম সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলীর বিধান সম্পর্কে থেকে জানা। যেমন- ইবাদত ও মুয়ামালাতের বিধান।
দুই. আল্লাহর দ্বীন সম্পর্কে সব জ্ঞান রাখা। তাতে ঈমানের উসুল, ইসলামের বিধান, হারাম-হালাল, আখলাক ও আদাব সবই শামিল করে।
হাদিসের উপকারিতাসমূহ
১. হাদিসটিতে দ্বীনি জ্ঞানের মহত্বকে প্রমাণ করে এবং তা শেখার প্রতি উৎসাহ প্রদান করে।
২. ফিকহ শব্দটি দুটি অর্থে ব্যবহার হয়, এক. যার মাধ্যমে শরিয়তের মূল উৎসমূহ তথা কোরআন ও হাদিস থেকে বিস্তারিত দলিল-প্রমাণসহ ব্যবহারিক জীবনের বিভিন্ন বিধি-বিধান জানা যায়। দুই. আল্লাহর দীন সম্পর্কে সামগ্রীক জ্ঞান রাখা। তাতে ঈমানের উসুল, ইসলামের বিধান, ইহসানের হাকিকত ও হারাম হালাল সবই রয়েছে।
৩. হাদিস থেকে প্রতিয়মান হয়, যে ব্যক্তি দ্বীনি জ্ঞান থেকে বিমুখ হয়, আল্লাহ অবশ্যই তার কল্যাণের ইরাদাহ করেননি।
৪. যে ব্যক্তি ইলমের প্রতি যত্ববান হয়, অবশ্যই আল্লাহ তাকে মহব্বত করেন। কারণ, আল্লাহ তাকে ইলম লাভ ও ফিকহের জ্ঞান অর্জনের তাওফিক দেওয়ার দ্বারা তার কল্যাণের ইরাদা করেছেন।
৫. দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের কারণে তার প্রশংসা করা হবে। আর যে দ্বীন ছাড়া অন্য কোনো জ্ঞান অর্জন করে তবে তার প্রশংসাও করা হবে না; নিন্দাও করা হবে না। তবে হ্যাঁ, যদি তা কোন ভালো কাজের উপকরণ হয় তবে তা প্রশংসিত হবে। আর যদি খারাপ কাজের হয় তাহলে তা নিন্দনীয় হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীনি ইলম অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।