ভাইয়ের হত্যার প্রতিশোধ নিতে যুবলীগ কর্মী খুন !


স্টাফ রিপোর্টার: , আপডেট করা হয়েছে : 25-09-2022

ভাইয়ের হত্যার প্রতিশোধ নিতে যুবলীগ কর্মী খুন !

ভাইয়ের হত্যার প্রতিশোধ নিতে জামিনে বের হয়ে মিরসরাই এর জোরারগঞ্জে যুবলীগ কর্মী শহীদুল ওরফে আকাশকে নির্মম ও নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা। হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারী এবং ১নং আসামী মামুনসহ তিনজন আটক করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম। 

গত (১৯ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ এলাকার যুবলীগ কর্মী মোঃ শহিদুল ইসলাম আকাশকে কতিপয় দুস্কৃতিকারী নির্মম ও নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। নিহত শহিদুল এবং তার বাবা চট্টগ্রাম জেলার জোরাগঞ্জ থানাধীন চিনকিরহাট এলাকায় একটি ফার্নিচার এর ব্যবসা পরিচালনা করতো। প্রতিদিনের মত ঘটনার দিন শহিদুল এবং তার বাবা ফার্নিচারের দোকানে ব্যবসা পরিচালনা করছিল।ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে মোঃ মামুন এবং তার সহযোগীরা বিভিন্ন অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দোকানে এসে মোঃ শহিদুল ইসলামকে গালাগাল করতে থাকে। শহিদুল ইসলামের প্রতিবাদ করা মাত্রই আসামী মোঃ মামুন তাকে টেনে দোকানের বাইরে নিয়ে যায় এবং কিরিচ দ্বারা মাথার পিছনে গভীর জখম করে। 

এ সময় শহিদুল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আসামী মোঃ মোতালেব তার হাতে থাকা ধামা দ্বারা শহিদুলকে গলায় এবং থুতনীতে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। এক পর্যায়ে শহিদুলের পিতা তার ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে আসামী মামুন তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় এবং দোকানের সামনে রাস্তার উপর তার বুকের উপর বসে হুমকি দেয় যদি সে বেশি নড়াচড়া করে তবে তাকে জবাই করে দিবে। এরপর দুস্কৃতিকারীরা তাদের হাতে থাকা ছুরি, কিরিচ এবং বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দ্বারা শহিদুলকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে গুরুতর জখম করে। এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজনকে এগিয়ে আসতে দেখে দুস্কৃতিকারীরা গুরুতর আহত অবস্থায় শহিদুলকে ফেলে রেখে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়।

এরপর শহিদুলকে গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত জখম অবস্থায় তার পিতা এবং বোন স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় প্রথমে মীরসরাই উপজেলা স্ব্যাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। এ বিষয়ে নিহত শহিদুলের বোন বাদী হয়ে গত (২১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানায় ১৪ জন নামীয় এবং ৭/৮ জনকে অজ্ঞাতনামা করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।  


জানা যায়, গত (৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯) চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ এলাকার মোঃ মামুনের ছোট ভাই আফজাল হোসেনকে ব্যবসায়ীক দ্বন্ধ ও রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কতিপয় দুস্কৃতিকারী কুপিয়ে হত্যা করে। ওই সময়ে মামুন এবং তার অপর এক ভাই ইকবাল নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের মামলায় জেল হাজতে ছিল। উল্লেখ্য, তাদের মধ্যে পূর্ব হতে পারিবারিক ও রাজনৈতিক দ্বন্ধ লেগেই থাকতো। পরবর্তীতে (১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২) মামুন জামিনে মুক্তি পায়। মুক্তি পেয়ে মামুন তার ভাইয়ের হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তার সহযোগী মোতালেব, রাজু, নেজাম, হামিদ, মুকেশসহ পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী (১৯ সেপ্টেম্বর) জেল হতে জামিনে মুক্তি পাওয়ার ৫ দিনের মাথায় যুবলীগ কর্মী শহীদুলকে নির্মম ও নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।  

যুবলীগ কর্মী মোঃ শহিদুল ইসলাম ওরফে আকাশের হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়ার পর আসামীরা আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যায়। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম ওই মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করার লক্ষ্যে গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) কিাল ৫টায় ১৭০০ মামলার ১নং এজাহারভুক্ত পলাতক আসামী মোঃ মামুন (২৫), পিতা-মিন্টু মিয়া, সাং-ইসলামপুরকে চট্টগ্রাম জেলার পাহাড়তলী থানাধীন সিডিএ মার্কেট এলাকা হতে এবং ৩নং পলাতক আসামী মুকেশ চন্দ্র দাস, অরফে সৌরভ দাস (২৪), পিতা-তপন কুমার দাস, সাং-পশ্চিম পরাগপু ও সন্ধিগ্ধ পলাতক আসামী মোঃ ইকবাল (২২), পিতা-মিন্টু মিয়া, সাং-ইসলামপুর, হিঙ্গুলী সর্বথানা-থানা-জোরারগঞ্জ, জেলা-চট্টগ্রামদ্বয়কে চাঁদপুর জেলা শহরের পুরান বাজার এলাকা হতে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টায় গ্রেফতার করে। জিজ্ঞসাবাদে আসামীরা স্বীকার করে, তারা বর্ণিত মামলার এজাহারভুক্ত এবং সন্দিগ্ধ পলাতক আসামী।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে সংশ্লিষ্ট থানায় মাধ্যমে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানায় র‌্যাব-৭, চট্ট্রগাম।© 



Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]