চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের বারবকুন্ড এলাকায় গত (২৮ জুলাই ২০২২) আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণ মামলার অন্যতম প্রধান ১০ মামলার আসামী দেলোয়ার হোসেনকে (৩৮) আটক করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
ভুক্তভোগী ভিকটিম বিবাহিত ও তার দুটি সন্তান রয়েছে। ভিকটিম চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানায় হাশেমনগরে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। ভিকটিমের স্বামী পুলিশ কর্তৃক আটক হয়ে জেল হাজতে ছিল। এই কারনে ভিকটিম তার সন্তানদের নিয়ে তার বাবার বাড়ী সীতাকুন্ড থানাধীন মুরাদপুরে চলে যায়। (২৮ জুলাই ২০২২) ভুক্তভোগী সংবাদ পায়, কতিপয় দুস্কৃতিকারী তার বাসায় ঢুকে মালামাল বের করে নিয়ে যাচ্ছে। ভিকটিম সংবাদ পেয়ে এসে দেখেন দরজা খোলা এবং মালামাল এলোমেলো অবস্থায় আছে। আসামীরা তার বাসা থেকে আনুমানিক ১ লাক ৫০ হাজার টাকার বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। ছিনিয়ে নেয়া মালামাল আনার জন্য ভিকটিম তার ভাগিনা ও ফুফাতো ভাই এর ছেলে সহ (২৮ জুলাই ২০২২) দিবাগত রাত সোয়া ১২টায় বাড়বকুন্ড ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন রাস্তাার উপর পৌছলে দুস্কৃতিকারীরা ভিকটিম, তার ভাগিনা ও ফুফাতো ভাই এর ছেলেকে মারধর করতে করতে সীতাকুন্ড থানাধীন বাড়বকুন্ড ইউনিয়নস্থ মকবুল রহমান জুট মিল সংলগ্ন রেল লাইনের একটি ঝুপড়ি ঘরে আটক রেখে ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং তার ভাগ্নি ও ফুফাতো ভাইকে লাঠি দ্বারা মারধর করে। এরপর আসামীরা ভিকটিমের ধর্ষনকালীন সময়ের ছবি তাদের মোবাইলে ধারন করে এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রাত ২টায় পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার আগে আসামীরা তাদের তিনটি মোবাইল ফোন এবং নগদ ১০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এরপর ভুক্তভোগীর বড়ভাই ঘটনাটি জেনে তাকে উদ্ধার করে সীতাকুন্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে সীতাকুন্ড মডেল থানায় ০৪জন নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ০১ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং- মামলা নং-৪০ তারিখঃ-২৯/জুলাই ২০২২ খ্রিঃ ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/ ২০০৩) এর ৯(৩)/৩০ তৎসহ ১৪৩/৪৪৮/৩৬৫/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩৭৯/৩৮০/৫০৬ পেনাল কোড।
মামলাটি স্পর্শকাতর হওয়ায়, মামলা রুজুর পর থেকে মামলার এজাহার নামীয় আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোয়েন্দা নজরধারী অব্যাহত রাখে। উল্লেখ্য মামলা রুজুুর পর থেকে একটানা অভিযান পরিচালনা করে মামলা রুজুর ১৩ ঘন্টার মধ্যে মামলার প্রধান আসামী ধর্ষক মোঃ সাদ্দাম হোসেন ও ৩ নং আসামী মোঃ জাহেদ অরফে মোস্তফা জাহেদদ্বকে গত ৩০ জুলাই ২০২২ খ্রিঃ তারিখ রাতে গ্রেফতার করা হয় এবং বাকী পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করার লক্ষ্যে র্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে, উক্ত গণধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় ২নং ও অন্যতম প্রধান আসামী মোঃ দেলোয়ার হোসেন চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন দক্ষিণ সোনায়ছড়ি এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ২:২০ মিনিটে বর্ণিত এলাকায় ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ দেলোয়ার হোসেন (৩৮), পিতা-মৃত রুহুল আমিন, সাং-বাড়বকুন্ড, থানা-সীতাকুন্ড, জেলা-চট্টগ্রাম‘কে আটক করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় ২নং পলাতক আসামী বলে স্বীকার করে।
উল্লেখ্য, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ দেলোয়ার হোসেন এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানায় গনধর্ষণ, ডাকাতি, অস্ত্র, বিস্ফোরক, বিশেষ ক্ষমতা আইন, মারামারি, চুরি ও সরকারী কাজে বাধাদানসহ সর্বমোট ১০টি মামলা পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীর সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।