ট্রাকচাপায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্র মাহবুব হাবিব হিমেল নিহতের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। তার এ আশ্বাসের পর ক্যাম্পাসে প্রথম জানাজার নামাজ শেষে হিমেলের মরদেহ শেরপুরের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, নিহতের পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহতের বোনকে চাকরি দিতে হবে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাল্টাতে হবে, প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং হিমেল নিহতের ঘটনাকে হত্যাকান্ড হিসেবে বিচার করতে হবে।
উপাচার্য জানিয়েছেন, এরইমধ্যে হিমেলের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা হস্তান্তর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভুক্তভোগী পরিবারটিকে ধাপে ধাপে আরও সহযোগিতা করা হবে। হিমেলের মায়ের আজীবন চিকিৎসা খরচ বিশ্ববিদ্যালয় বহন করবে। এছাড়া আহত দুই ছাত্রের চিকিৎসার সব খরচও বিশ্ববিদ্যালয় দেবে। এর আগে শিক্ষার্থীদের মৌখিক আশ্বাস দিয়ে উপাচার্য বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স কমিটির সঙ্গে বসে যা যা করা দরকার করবো। ট্রাক মালিক ও ঠিকাদারের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ আদায় করবো। ট্রাকচালক ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।
এদিকে, ট্রাকচাপায় মাহমুদ হাবিব হিমেল নিহত হওয়ার ঘটনায় ট্রাক চালক ও তার সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা এলাকা থেকে ট্রাক চালক টিটু (৩৬) ও কালুকে (৩৫) আটক করা হয়।
অন্যদিকে, রাত ২টার দিকে উপাচার্য বাসভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সামনে প্রক্টর ড. লিয়াকত আলীকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন উপাচার্য। ওইসময় সেখানে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভ চলাকালে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা এদিকে ট্রাকচাপায় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ সামগ্রী আনা নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত ৫টি ট্রাক ও নির্মাণাধীন ভবনের বেশ কয়েক জায়গায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ছাড়াও সহস্রাধিক বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী তারা নির্মাণাধীন ভবনের বিভিন্ন অংশে ভাঙচুর চালায়।
মঙ্গলবার পৌনে ১১টায় লাশটি রামেক হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায় হয়। সকালে হিমেলের লাশ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের এনে সহপাঠিদের দেখিয়ে পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জামে মসজিদে জানাজা শেষে তার গ্রামের বাসা নাটোরে সদর কাপড়পট্টিতে এলাকায় জানাজা শেষে দাফন করা হবে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হলেও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে রাতেই ক্যাম্পাস থেকে পুলিশ সরিয়ে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রাজশাহীর সময় /এএইচ