সংঘর্ষরত দু’দেশের মধ্যে মৈত্রী ও শান্তির বার্তা দিতেই অস্ট্রেলিয়ার এক শিল্পী এক দৃশ্য কল্পনা করেছিলেন। আর তাই রঙ-তুলিতে ফুটিয়ে তুলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে রাস্তার ধারে একটি বাড়ির দেওয়ালে। দুই সেনা একে অপরকে জড়িয়ে রয়েছে। এক জন রাশিয়ার, অন্য জন ইউক্রেনের। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিটি ছড়িয়ে পড়তেই অশান্তি তীব্র হল। ইউক্রেন ক্ষোভ প্রকাশ করায় রাস্তা থেকে দ্রুত সরিয়ে দেওয়া হল ছবিটি।
মেলবোর্নের ওই মুরালের স্রষ্টা পিটার সিয়াটন জানিয়েছেন, তিনি শান্তিপূর্ণ পথে যুদ্ধ থামানোর বার্তা দিতে ওই ছবি এঁকেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ভাসিল মাইরোশনিচেঙ্কোর বক্তব্য, রাশিয়া যে ভাবে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাচ্ছে, সেই বাস্তবকে বিকৃত করার জঘন্য প্রচেষ্টা ছবিটি। মাইরোশনিচেঙ্কো টুইটারে সিয়াটনের আঁকা ছবিটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘সম্প্রতি মেলবোর্নের রাস্তায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের সেনার একে অন্যকে জড়িয়ে ধরার যে ছবি আঁকা হয়েছে, তা দেখলে সব ইউক্রেনীয়ের খারাপ লাগবে। ইউক্রেনের মাটিতে রুশ আগ্রাসন নিয়ে শিল্পীর কোনও ধারণা নেই। এটা ভেবে খুব খারাপ লাগছে যে, এই ছবি আঁকার আগে মেলবোর্নের ইউক্রেনীয়দের সঙ্গে কথাই বলা হয়নি।’’
ইউক্রেনের সমাজতত্ত্ববিদ ওলগা বইচাক জানান, এই মুরালে একটি মিথ্যা সমতার ধারণা দেওয়া হচ্ছে, আক্রান্ত ও আক্রমণকারীকে সমান করে দেখানো হয়েছে।
মেলবোর্নের রাস্তা থেকে ছবিটি মুছে দেওয়া হলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে তা। হাজারো লাইক, কমেন্ট, শেয়ারের বন্যা। এক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী বিদ্রুপ করে লিখেছেন, ‘‘শান্তির প্রচারও পশ্চিমের সভ্য দুনিয়ায় আইনবিরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। একে যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করলে এই দাঁড়ায়, ওরা আরও যুদ্ধ চায়... তবে আমরা তো অত সভ্য নই।’’
শিল্পী পিটার সিয়াটন অবশ্য এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। তবে পরে তিনি এ-ও বলেছেন, ‘‘আমার ধারণা, সকলে বিষয়টিকে এত খারাপ ভাবে নেয়নি।’’ কিছু দিন আগেই সারা রাত জেগে মেলবোর্নের কিংস ওয়ে-তে ছবিটি এঁকেছিলেন পিটার। নাম রেখেছিলেন ‘পিস বিফোর পিসেস’, অর্থাৎ ভেঙে টুকরো-টুকরো হয়ে যাওয়ার আগে শান্তি চাই।