এক শ্রেণির মানুষ হবে যারা নেকির মালিক হয়েও নিঃস্ব হবে। কেউ কারো হক নষ্ট করেছে। কেউ কারো প্রতি জুলুম করেছে। কাউকে গালি দিয়েছে। এসব ব্যক্তির নেকি যখন শেষ হয়ে যাবে এবং অন্যের গুনাহ নিজেদের ওপর আসবে; তখন তারা প্রকৃত নিঃস্ব হয়ে যাবে। হাদিসের দিকনির্দেশনা থেকে তা প্রমাণিত। এ সম্পর্কে কী এসেছে হাদিসে?
অন্যায়-অত্যাচার করা হারাম এবং অন্যায়ভাবে নেওয়া জিনিস ফেরত দেওয়া জরুরি। যারা কারো প্রতি অন্যায়ভাবে অত্যাচার বা অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করবে, তারাই হবে পরকালে প্রকৃত নিঃস্ব। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তোমরা কি জান, নিঃস্ব কে?’ তাঁরা (সাহাবায়ে কেরাম) বললেন, ’আমাদের মধ্যে নিঃস্ব ওই ব্যক্তি, যার কাছে কোনো দিরহাম এবং কোনো আসবাব-পত্র নেই।’
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ’আমার উম্মতের মধ্যে (প্রকৃত) নিঃস্ব তো সেই ব্যক্তি, যে কেয়ামতের দিন নামাজ, রোজা ও জাকাতের (নেকি) নিয়ে উপস্থিত হবে। (কিন্তু এ নেকি গুলো নষ্ট হয়ে যাবে)। এর সাথে সাথে সে এ অবস্থায় আসবে যে, সে কাউকে গালি দিয়েছে । কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করেছে, কারো মাল (অবৈধভাবে) ভক্ষণ করেছে। কারো রক্তপাত করেছে এবং কাউকে মেরেছে।
এরপর এ (অত্যাচারিত/ক্ষতিগ্রস্তদের) কে তার নেকি দেওয়া হবে, এ (অত্যাচারিত/ক্ষতিগ্রস্তদের) কে তার নেকি দেওয়া হবে। পরিশেষে যদি তার নেকিসমূহ অন্যান্যদের দাবি পূরণ করার আগেই শেষ হয়ে যায়, তবে তাদের পাপরাশি নিয়ে তার উপর নিক্ষেপ করা হবে। এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’ (রিয়াদুস সালেহিন, মুসলিম, তিরমিজি, মুসনাদে আহমাদ)
সুতরাং অন্যের অধিকারের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। কারো প্রতি জুলুম করা যাবে না। কাউকে গালি দেওয়া যাবে না। কাউকে মারা যাবে না। রক্তপাতের মতো ভয়াবহ গুনাহের কাজও করা যাবে না। যারা এসব কাজ করবে, পরিণামে তাদের নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, দান-সাদকাসহ সব নেকি শেষ হয়ে যাবে। এমনকি তাতে এসব কাজের বিনিময় শেষ না হলে গুনাহের বোঝা মাথায় নিতে হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পরকালে প্রকৃত নিঃস্ব হওয়া থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। হাদিসের বর্ণনার আলোকে সতর্ক হওয়ার তাওফিক দান করুন। হারাম ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।