নির্যাতনে রাবি শিক্ষার্থীর কানের পর্দা ফাটাল ছাত্রলীগ নেতা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহার নির্যাতনে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সামছুল ইসলামের বাঁ কানের পর্দা ফেটে গেছে।

শুক্রবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক কান ও গলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুব্রত কুমার রাবি ছাত্রের কানের পর্দা ফাটার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে, গত ১৯ আগস্ট বিকেল ৩টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলে ওই শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা। 

ঘটনার পর থেকে সামছুল কানে শুনছিলেন না। বুধবার (২৪ আগস্ট) রাতে কানের ব্যথা নিয়ে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর বৃহস্পতিবার তিনি পরীক্ষার প্রতিবেদন পান। প্রতিবেদন অনুযায়ী ওই রোগীর কানের পর্দা ছেঁড়া। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সামছুল ইসলাম জানান, বুধবার রাতে হঠাৎ কানে ব্যথা অনুভূত হয়। অসহ্য ব্যথা নিয়ে রাতেই তিনি রাজশাহী মেডিকেলের নাক কান ও গলা বিভাগের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হন। পরে চিকিৎসক কিছু পরীক্ষা দেন। বাইরে গিয়ে তিনি সেগুলোর পরীক্ষা করান। 

প্রতিবেদন দেখে চিকিৎসক জানান, তার বাঁ কানের পর্দা ফেটে গেছে। তিনি এখনও শুনতে পারছেন না। এ ছাড়া মারধরের কয়েক দিন পর তিনি শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছেন। 

এ ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযোগের একটি অংশে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহা হুমকি দিয়ে তাকে বলেন, কাউকে বললে আবরারের যে অবস্থা হয়েছে, সেই অবস্থা হবে। এরপর টানা দুই দিন অর্থনীতি বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক মিলে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্তের শাস্তির দাবি জানান। ভুক্তভোগীর নিরাপত্তার দাবিও তোলা হয়। বর্তমানে তদন্ত কমিটি তদন্ত করছে।

এদিকে বুধবার সামছুল ইসলাম অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ তুলে নেওয়ার আবেদন করেন। সেখানে তিনি বলেন, ভাস্কর সাহা তার কাছে কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত ও ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। সেই সঙ্গে ভাস্কর তাকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হয়েছেন। মানবিক দিক বিবেচনা করে ভাস্করকে তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন। ভাস্করের বিরুদ্ধে তার এখন কোনো অভিযোগ নেই। এ অবস্থায় প্রশাসনের কাছে তার ভবিষ্যতের নিরাপত্তা দেওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি। সময় টিভি।