গত ৫০ বছরে এমন ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি কখনও হয়নি পাকিস্তানে। এবার অতিবর্ষণের কারণে যে অবস্থা তৈরি হয়েছে তা পাকিস্তানকে গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
এখনও পর্যন্ত সরকারি সূত্রে খবর, ৯৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বন্যায়। মৃতদের মধ্যে ৩৪৩টি শিশু। গোটা পাকিস্তানে তিন কোটি মানুষ ভিটেহারা হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে সরকারি রিপোর্টে। জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে ইসলামাবাদ।
সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বালুচিস্তানে। সেখানে বন্যার বলি ২৩৪। খাইবার পাকতুনখাওয়া প্রদেশে বন্যায় মারা গেছে ১৮৫ জন। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে বন্যা কবলিত হয়ে প্রাণ গেছে ১৬৫ জনের। পাক অধ্যুষিত কাশ্মীরেও বন্যার প্রকোপ ব্যাপক। সেখানে মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের।
পাকিস্তানের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে শুধু ১-২৩ অগস্ট পর্যন্ত ১৬৬.৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ২৪১ শতাংশ বেশি। পাকিস্তান সরকার বিত্তশালীদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, বন্যারত্রাণে মুক্তহস্তে দান করার জন্য। ইসলামাবাদ মনে করছে, নাগরিক উদ্যোগ ছাড়া শুধু সেনাবাহিনী আর বিপর্যয় মোকাবিলা দল দিয়ে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানো সম্ভব নয়।
এমনিতেই পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। তারমধ্যে এই বন্যা মরার উপর খাড়ার ঘা হিসেবেই মনে করছেন অনেকে। কারণ বন্যার কারণে চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সেদেশে। সেইসঙ্গে বিরাট অঙ্কের সম্পদও নষ্ট হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কত সময় লাগবে তার ঠিক নেই। এরমধ্যে বৃষ্টি থামারও কোনও শুভ সঙ্কেত দিতে পারেনি আবহাওয়া দফতর। তারা বলেছে সেপ্টেম্বরের গোড়া পর্যন্ত বৃষ্টিপাত চলবে। ফলে নতুন করে বহু এলাকা বন্যা কবলিত হতে পারে সেই আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।