পূর্ব লাদাখ, অরুণাচল প্রদেশ, ডোকলামের পর এ বার ভারত মহাসাগরে চিনা নৌবাহিনীর তৎপরতা ধরা পড়ল উপগ্রহচিত্রে। বৃহস্পতিবার ম্যাক্সার প্রকাশিত ওই উপগ্রহচিত্র নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে ভারতের পক্ষে উদ্বেগজনক বলেই মনে করা হচ্ছে।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, নয়াদিল্লিকে ‘নিশানা’ করেই ভারত মহাসাগরে এই তৎপরতা চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র। সামরিক কৌশলগত দিক থেকেও জিবুতির ওই নৌঘাঁটির অবস্থান ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ। এডেন উপসাগর থেকে লোহিত সাগর হয়ে সুয়েজ খালমুখী জলপথের বাব-এল-মান্দেব প্রণালীতে অবস্থিত এই নৌঘাঁটি থেকে আফ্রিকা এবং এশিয়ার বিস্তীর্ণ অংশে উপস্থিতি জানান দেওয়ার জন্য জিবুতির নৌঘাঁটি ব্যবহার করতে পারবে চিনা নৌবাহিনী। ভারত মহাসাগরের পাশাপাশি আরব সাগরের জলসীমায় ঢুকে চাপে ফেলতে পারবে নয়াদিল্লিকে।
উপগ্রহচিত্র দেখে সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, ফ্রিগেট, কর্ভেট জাতীয় রণতরী ও ‘অ্যাম্ফিবিয়ান ল্যান্ডিং ভেহিকলস’ ব্যবহারের ব্যবস্থা রয়েছে ওই নৌঘাঁটিতে। নৌ-নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘কভার্ট শোরস’-এর বিশেষজ্ঞ এইচএল সাটন বলেন, ‘‘ঔপনেবেশিক জমানার বন্দরদুর্গের ধাঁচে ওই ঘাঁটিটি গড়া হয়েছে। অবস্থান এবং আয়োজন থেকে স্পষ্ট, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে হামলার উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে নৌঘাঁটিটিকে।’’
প্রসঙ্গত, গত এক দশক থেকেই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য জলপথে অবস্থিত বাব-এল-মান্দেব প্রণালী প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে চিন। তারই প্রথম ধাপে ৫৯ কোটি ডলার (প্রায় ৪,৭০৭ কোটি টাকা) ব্যয়ে ওই নৌঘাঁটি গড়েছে তারা। ২০১৬ সাল থেকে এটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। নয়াদিল্লির আপত্তি উড়িয়ে শ্রীলঙ্কায় হামবানটোটা বন্দরে চিনা গুপ্তচর জাহাজ ‘ইউয়ান ওয়াং-৫’ নোঙর করার পর চাপ বেড়েছে ভারতের উপর। এই পরিস্থিতিতে ভারত মহাসাগরে চিনের নয়া তৎপরতা কেন্দ্রের উদ্বেগের বলেই মনে করা হচ্ছে।