জ্বালানির মূল্য কমানোর চিন্তাভাবনা সরকারের


অনলাইন ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 18-08-2022

জ্বালানির মূল্য কমানোর চিন্তাভাবনা সরকারের

সরকার জ্বালানি তেলের দাম কমানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমার বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে দ্রুতই জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা উচিত বলে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর্যালোচনায় মত দেওয়া হয়েছে।

গতকাল বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে 'বিদ্যমান অর্থনৈতিক ও জ্বালানি পরিস্থিতি' শীর্ষক সচিব পর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠকে এ মতামত এসেছে বলে সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বৈঠকে ৯ জন সচিবসহ বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার মহাপরিচালক ও চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি ছিলেন না বলে জানা গেছে।

জ্বালানির দাম বৃদ্ধির পর বিভিন্ন মহল থেকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকার। দাম কমানোর জন্য ব্যবসায়ী নেতারা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারদলীয় লোকজনও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির সমালোচনা করে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। অন্যদিকে বাম জোটের পক্ষ থেকে ২৫ আগস্ট অর্ধদিবস হরতালের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীও জ্বালানির মূল্য সমন্বয়ের আশ্বাস দিচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে সংশ্নিষ্ট সচিবদের বৈঠকেও জ্বালানির দাম কমানোর বিষয়টি উঠে এসেছে।

বৈঠক সূত্র জানায়, জ্বালানির দাম যেভাবে বাড়ানো হয়েছে, তাতে জনজীবনে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে সরকার বুঝতে পারছে। এ পরিস্থিতি খুব বেশিদিন টানতে হবে না বলে তাঁরা মনে করছেন- এই বার্তাটা যেন মানুষের কাছে ঠিকমতো যায়, তা নিশ্চিত করতে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ এবং বিদ্যুৎ বিভাগকে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে গণমাধ্যমে দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সঠিক চিত্র নিশ্চিত করতে সাংবাদিকদের প্রয়োজনীয় তথ্য খোলাখুলিভাবে সরবরাহ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পরপরই বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেশে জ্বালানির মজুত কতদিনের আছে; তার পর কী হবে; শ্রীলঙ্কার মতো হবে কিনা- এসব বিষয়ে খবর প্রকাশ করা হয়। বৈঠকে মত দেওয়া হয়, এতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। উদাহরণ দিয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, দেশে জ্বালানি তেলের মজুত দিয়ে ৪০ দিনের চাহিদা মেটানো সম্ভব। প্রতিনিয়ত জ্বালানি আসতে থাকে। তাই মজুত বাড়ে-কমে। কখনও হয়তো ২৫ দিনের মজুত থাকে, কখনও ৩৫ দিনের। এসব বিষয় সাধারণত গণমাধ্যমে তেমনভাবে সংবাদ হয় না। তবে শ্রীলঙ্কা পরিস্থিতির পর বাংলাদেশে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পর কোথাও কোথাও সংবাদ হয়েছে- মাত্র ৩০ দিনের মজুত আছে। এটা আমাদের দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতি। তবে এই সময়ে এ ধরনের সংবাদ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারে।

এ বিষয়গুলো যে আতঙ্কের নয়, তা যে দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতি- সাংবাদিকদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে তা তুলে ধরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জ্বালানি বিভাগকে। এসব বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অপর একটি সূত্র জানায়, বৈঠকে খাদ্য পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। খাদ্য সচিব বিদ্যমান খাদ্য পরিস্থিতি তুলে ধরে সংকটের আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন। বিপরীতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, খোলাবাজারে (ওএমএস) কম দামে চাল-গম বিক্রির কার্যক্রমে যাতে কোনো গাফিলতি না থাকে, তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। বিদ্যুতের ঘাটতি ও বর্ষায় বৃষ্টি কম হওয়ায় কৃষির সার্বিক উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা আছে। এ সংকট কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায়, তা খুঁজে দেখতে কৃষি সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, শিল্প মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যানসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরাও উপস্থিত ছিলেন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]