সহসাই চালু হচ্ছে না ঢাকা-নিউ ইয়র্ক বিমান


মিনারা হেলেন ইতি , আপডেট করা হয়েছে : 09-08-2022

সহসাই চালু হচ্ছে না ঢাকা-নিউ ইয়র্ক বিমান

সহসাই চালু হচ্ছে না ঢাকা-নিউ ইয়র্ক রুটে বিমান চলাচল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)-এর ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র না থাকায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঢাকা-নিউ ইয়র্ক রুটে বিমান চলাচল সম্ভব হচ্ছে না বলে এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রস্থ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোঃ শহীদুল ইসলাম। 

তিনি জানান, ঢাকা-নিউ ইয়র্ক রুটে পুনরায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়মিত ফ্লাইট চালুর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন বিভাগের বিমান ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহকারী সচিব অ্যানি পেটসঙ্কের সঙ্গে সাম্প্রতি তিনি একটি বৈঠক করেছেন। গত ৩০ জুলাই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় বলে এক টুইট বার্তায় জানান রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলাম। টুইটে রাষ্ট্রদূত শহীদুল লিখেন, ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে পুনরায় বিমানের ফ্লাইট চালু করতে শনিবার (৩০ জুলাই) মার্কিন পরিবহন বিভাগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহকারী সচিব অ্যানি পেটসঙ্কের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পিটুপি ও বিটুবি সম্পর্ক বাড়াতে পুনরায় এ গুরুত্বপূর্ণ রুটে ফ্লাইটটি চালুর বিষয়ে বৈঠকটি ফলপ্রসূ ছিল। এভিয়েশন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে কোনো দেশের এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারে না। এই ছাড়পত্র না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে নিউ ইয়র্কের সঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে। তবে এরই মধ্যে নিউ ইয়র্ক রুটে ফ্লাইট চালু করতে বিমান ফেডারেল এভিয়েশনের সঙ্গে একটি চুক্তি সই করেছে।

দীর্ঘদিন ঢাকা-নিউ ইয়র্ক রুটে বিমানের ফ্লাইট বন্ধ থাকলেও গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাতীয় পতাকাবাহী বিমানের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সফরে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি চার্টার্ড ফ্লাইটে নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি (জেএফকে) বিমান বন্দরে অবতরণের পর জাতিসংঘের সাধারন অধিবেশনে যোগদান করেন।

এদিকে, দীর্ঘ ১৪ বছর বন্ধ থাকার পর ২০২০ সালে ঢাকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ফ্লাইট পরিচালনার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। করোনার কারণে বেশ কয়েকবার পিছিয়েছে ফ্লাইট চালুর এ উদ্যোগ। অবশেষে স্থবির হওয়া প্রক্রিয়া আবারও শুরু হয়েছে। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা দেখতে ঢাকায় গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। চলত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি তারা বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সঙ্গে বৈঠক করেন।

বেবিচকের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলটি ২ মার্চ পর্যন্ত বিমানবন্দরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। সফরকালে তারা ফ্লাইট অপারেশন ব্যবস্থা, যাত্রী নিরাপত্তা, বিমানবন্দরের কর্মীদের ডিউটির পদ্ধতি, স্ক্যানিং, গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংসহ সব ধরনের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশের নিরাপত্তাব্যবস্থার মান আগের চেয়ে তুলনামূলক ভালো। দ্রুতই এ ফ্লাইট চালু করার বিষয়ে আশাবাদী বেবিচক ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

ঢাকা-নিউ ইয়র্ক রুটটি ড্রিমলাইনার এয়ারক্রাফট দিয়ে পরিচালনার কথা ভাবছে বিমান। জ্বালানি সাশ্রয়ী এ এয়ারক্রাফটে তাদের রাজস্ব বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে লোকসানের মুখে ২০০৬ সালে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে ফ্লাইট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। পরে আবার ফ্লাইট চালুর চেষ্টা করে তারা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফ্লাইটের নিরাপত্তা সংক্রান্ত নানা দুর্বলতা দেখিয়ে সেগুলো সংশোধনের পরামর্শ দেয়। নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করে ২০২০ সালের উইন্টার সিডিউলে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ফ্লাইট পরিচালনার প্রক্রিয়া শুরু করে বিমান। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।

গত বছর জাতিসংঘ অধিবেশন চলাকালীন সময়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ভবিষ্যতে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে পুনরায় ফ্লাইট শুরু করবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশন এবং অন্যান্য উচ্চপর্যায়ের সাইডলাইন ইভেন্টে প্রধানমন্ত্রীর সামগ্রিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে লোট নিউ ইয়র্ক প্যালেসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সুখবর হচ্ছে, মার্কিন ফেডারেশন এভিয়েশন অথরিটি বাংলাদেশ বিমানকে যেহেতু (১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ রোববার নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি এয়ারপোর্টে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমানের ফ্লাইট) অবতরণের অনুমতি দিয়েছে। সুতরাং তিনি আশা করেন বিমান ভবিষ্যতে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে তার কার্যক্রম শুরু করতে পারবে। বিমানের এই রুট চালু হলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিরা খুব খুশি হবেন।’

ড. মোমেন বলেন, ‘ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে বিমানের ফ্লাইট চলাচল বেশ কয়েক বছর ধরে স্থগিত রয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিমানের বহরে অনেকগুলো আধুনিক মডেলের উন্নত উড়োজাহাজ যুক্ত করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেশন এভিয়েশন অথরিটির সঙ্গে বাংলাদেশের একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটি ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে আবার ফ্লাইট চালুর বিষয়ে আশার একটি কারণ।’


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]