চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কার ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আয়াত হোসেন (১৫) নামে আরেক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১২ জনে।
আয়াত হোসেন হাটহাজারীর শুক্কুর আলীর ছেলে। সে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
গত শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুরে মিরসরাই উপজেলার বড়তাকিয়া রেলক্রসিংয়ে রেললাইনে উঠে পড়া একটি মাইক্রোবাসকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেস ট্রেন ধাক্কা দেয়। এতে ১১ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহত ছয়জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মাইক্রোবাসের এক আরোহী অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার হন।
দুর্ঘটনায় নিহত ১১ জনের সবাই মাইক্রোবাসের আরোহী ছিলেন। তারা সবাই হাটহাজারী উপজেলার চিকনদণ্ডি ইউনিয়নের খন্দকিয়া ও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দা। এদের মধ্যে ৯ জন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র। খন্দকিয়া যুগীরহাট এলাকার আরএনজে কোচিং সেন্টারের বিদায়ী শিক্ষার্থীদের নিয়ে চার শিক্ষক পিকনিকের উদ্দেশে মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝর্ণা এলাকায় গিয়েছিলেন।
এ ঘটনায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার অধীন সীতাকুণ্ড পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে বড়তাকিয়া রেলক্রসিংয়ে গেটম্যানের দায়িত্বে থাকা সাদ্দাম হোসেনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। তার বিরুদ্ধে মামলায় অবহেলাজনিত মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়।
দুর্ঘটনার পরপরই রেলওয়ে পুলিশ সাদ্দামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল। মামলা দায়েরের পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরদিন বিকেলে সাদ্দামকে আদালতে হাজিরের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। রেল কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, রেলগেটের লাইনম্যান দুর্ঘটনার সময় সেখানে ছিলেন না। গেটে ব্যারিয়ারও ফেলা ছিল না। এর ফলে মাইক্রোবাসটি রেললাইনে উঠে যায়। তখন ট্রেন ধাক্কা দেয়। যদি ব্যারিয়ার ফেলা হতো তাহলে মাইক্রোবাসটি রেললাইনে উঠতে পারত না।
দুর্ঘটনার সময় গেটম্যান মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন এবং দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি মসজিদ থেকে ছুটে আসেন বলেও দাবি করেছিলেন কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় সাদ্দাম রেলগেটে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়া ও ব্যারিয়ার না ফেলার বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন।