জুমার দিন মুমিনের করণীয়


অনলাইন ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 05-08-2022

জুমার দিন মুমিনের করণীয়

জুমার দিন মহান আল্লাহ তাআলা এ মর্মে নির্দেশ দেন যে- হে ঈমানদারগণ! জুমার দিন যখন তোমাদের নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা দ্রুতগতিতে আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) ধাবিত হও আর বেচা-কেনা (ওই সময় দুনিয়ার সব কাজ) ছেড়ে দাও। তোমরা যদি জ্ঞানী হওয়া তবে এটাই তোমাদের জন্য উত্তম। অতপর যখন নামাজ শেষ হয়ে যাবে তখন (সঙ্গে সঙ্গে) জমিনে (নিজ নিজ কাজে অংশগ্রহণে) ছড়িয়ে পড়। আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) অন্বেষণে লেগে যাও। আর আল্লাহকে বেশি বেশি করে স্মরণ করতে থাক; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা : আয়াত ৯-১০)

মুমিন মুসলমান কোরআনুল কারিমের এ আয়াত দুটি দ্বারা যেসব কাজ নিজেদের জন্য আবশ্যক মনে করবে। তাহলো-

১. একজন মুমিনকে জুমার নামাজের জন্য মনে প্রাণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিত। তাই আজান শোনামাত্র সব কাজ রেখে দ্রুত মসজিদের দিকে ধাবিত হওয়া জরুরি।

২. আজান শোনার পর কোনো ঈমানদারের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য অথবা দুনিয়ার কোনো কাজেই ব্যস্ত হওয়ার সুযোগ নেই। আজানের পর দুনিয়ার যে কোনো কাজে ব্যস্ত হওয়ার অর্থই হচ্ছে- আল্লাহ থেকে গাফেল হয়ে খাঁটি দুনিয়াদার হয়ে যাওয়া। যা ইসলামে কোনোভাবেই বৈধ নয়।

৩. মুমিনের পূণ্যের রহস্য হলো- সে দুনিয়ায় আল্লাহর বান্দাহ ও গোলাম হয়ে থাকবে আর আল্লাহর পক্ষ থেকে যে কোনো ডাক এলেই একজন প্রভুভক্ত ও অনুগত গোলাম হিসেবে নিজের সব চিত্তাকর্ষক ও দুনিয়ার সব উন্নতির পথে অগ্রসর হওয়াকে দু-পায়ে ঠেলে আল্লাহর ডাকে সাড়া দেবে। আর এতেই প্রমাণিত হয় যে-

‌‘দ্বীনের প্রয়োজনে দুনিয়ার উন্নতি ও স্বার্থ ত্যাগ করা ধ্বংস বা অকৃতকার্যতা নয়। বরং দুনিয়ার উন্নতির আশায় দ্বীন ধ্বংস করাই প্রকৃত ধ্বংস ও ব্যর্থতা।’

৪. দুনিয়ার ব্যাপারে এ  মনোভাব ঠিক নয় যে, মানুষ দ্বীনদার হতে গিয়ে দুনিয়া বিমুখ হয়ে যাবতীয় কাজ ছেড়ে দেবে। নিজেকে অকেজো প্রমাণিত করবে। ‘না’, বরং কোরআন এ মর্মে নসিহত করছে যে-

‘মুমিন বান্দা নামাজ থেকে অবসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আল্লাহর জমিনে তার অনুগ্রহ (রিজিক) তালাশে ছড়িয়ে পড়বে।’

আল্লাহ তাআলা দুনিয়ায় মানুষের জন্য জীবিকা অর্জনের যেসব উপায়-উপকরণ দান করেছেন, সেসব তেকে পূর্ণ উপকারিতা গ্রহণ করতে নিজেদের যোগ্যতাকে কাজে লাগাবে। আল্লাহর দেয়া অনুগ্রহ তথা জীবিকা সংগ্রহ করবে। আর মুমিনের জন্য এটা ঠিক নয় যে-

‘‌সে নিজের প্রয়োজন পূরণের জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবে। আবার এটাও ঠিক নয় যে, নিজের অধিনস্থদের প্রয়োজন পূরণে ত্রুটি বা অবহেলা করবে। আর তারা অস্থিরতা ও হতাশার শিকার হবে।'

মনে রাখতে হবে

মুমিন মুসলমানকে দুনিয়ার ধাঁধাঁয় ও কাজে এমনভাবে জড়িয়ে পড়া যাবে না যে, মহান আল্লাহর নির্দেশ থেকে গাফেল হয়ে যেতে হয়। মহান আল্লাহ জুমার নামাজ পড়ার যে নির্দেশ দিয়েছেন তা পালনে অমনোযোগী হয়ে যেতে হয়। জুমার দিন আজান শোনার পর দ্রুত মসজিদে না গিয়ে দুনিয়ার যে কোনো কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়।

বরং মুমিন মুসলমানের উচিত, আল্লাহর নির্দেশ মেনে আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জুমার নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে সুন্নাহ মোতাবেক মসজিদে উপস্থিত হবে। কেননা মুমিনের জীবনের প্রধান পুঁজি ও প্রকৃত সম্পদই হলো- মহান আল্লাহর স্মরণ ও তার নির্দেশ মেনে চলা। তাইতো হজরত সাঈদ ইবনে জুবাইর রাহমাতুল্লাহি আলাইহি যর্থার্থ বলেছেন-

‘শুধু মুখে তাসবিহ, তাহমিদ, তাহলিল, তাকবির উচ্চারণ করার নামই মহান আল্লাহর জিকির বা স্মরণ নয় বরং আল্লাহর আনুগত্যে নিজের জীবন গঠন করার নামই আল্লাহর জিকির বা স্মরণ।’

সুতরাং মহান আল্লাহর নির্দেশ মেনে জুমার নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে দ্রুত মসজিদে গিয়ে উপস্থিত হওয়া এবং নামাজ আদায় করার পাশাপাশি জুমা পরবর্তী কাজে অংশগ্রহণও আল্লাহ তাআলার নির্দেশ পালন তথা আনুগত্যের অন্তর্ভূক্ত।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত আয়াতের নির্দেশ পালন এবং নামাজ পরবর্তী কাজে যোগদান করে ইসলামের বিধান পালনে যথাযথ আনুগত্য করার তাওফিক দিন। আমিন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]