পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভুলভাবে ইনজেকশন প্রয়োগে শিশুর অঙ্গহানির অভিযোগ


আর কে আকাশ (পাবনা প্রতিনিধি): , আপডেট করা হয়েছে : 02-08-2022

পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভুলভাবে ইনজেকশন প্রয়োগে শিশুর অঙ্গহানির অভিযোগ

পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভুলভাবে ইনজেকশন প্রয়োগ ও চিকিৎসার অবহেলায় শিশুর অঙ্গহানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী শিশুর পিতা জাহিদুল ইসলাম জাহিদ পাবনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন।

জাহিদুল ইসলাম জাহিদ এ বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, আমার ১বছর বয়সী শিশু মো. তাসিম মোল্লা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে গত ১০ জুন পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া (উদরাময়) ওয়ার্ডে ভর্তি করি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত ১২ জুন সকালে ডাক্তারের পেসক্রিপসন নির্দেশনা অনুযায়ী কর্তব্যরত নার্স আমার বাচ্চাকে ইনজেকশন পুশ করে। ইনজেকশনটি রগে (রক্ত নালীতে) প্রয়োগ না করে নার্স মাংসপেশিতে ভুল প্রয়োগ করে। ইনজেকশন পুশ করার পর থেকেই বাচ্চার ডান হাত ফুলতে থাকে এবং বাচ্চা ব্যাথার যন্ত্রনায় চিৎকার-আর্তনাদ করতে থাকে। বাচ্চার ব্যাথা ও কান্নার কারণে ডিউটিরত নার্সদেরকে বারবার দেখালে তিনি বলেন, ঠিক হয়ে যাবে। ইনজেকশন পুশ করার স্থানে (ডান হাত) ক্রমান্বয়ে লালাভ-বেগুণী বর্ণ ধারণ করে এবং আমার বাচ্চা অনবরত ব্যাথার যন্ত্রনায় কাঁদতে ও ছটফট করতে থাকে। আমার স্ত্রী বার বার নার্সদের ডেকে দেখালে তারা বলে, ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে। তৎকালীন কর্তব্যরত ডাক্তারকে দেখালে তিনি ক্ষত স্থানে বরফ দিতে বলেন এবং নাপা সিরাপ খাওয়াতে বলেন।

১৩ জুন কর্তব্যরত ডাক্তারকে দেখালে তিনি পেসক্রিপসনে একটি মলম লিখে দেন এবং লাগাতে বলেন। ১৪ জুন তারিখে কর্তব্যরত ডাক্তারকে দেখালে তিনি আমার বাচ্চাকে শিশু ওয়ার্ডে রেফার করে দেন। বাচ্চার অনবরত ক্রন্দনে আমরা বারবার কর্তব্যরত ডাক্তার-নার্সদের শরণাপন্ন হচ্ছিলাম। তারা সবাই ঠিক হয়ে যাবার মিথ্যা আশ্বাস দেন।

১৮ জুন কর্তব্যরত ডাক্তারকে দেখালে ডাক্তার শিশুকে রক্ত দিতে বলেন। আমরা শিশুকে ১ ব্যাগ রক্ত দেই এবং রাত ১২টার দিকে হাসপাতাল ত্যাগ করি। 

২১ জুন হাসপাতালে টিকিট কেটে ইমারজেন্সিতে ডা. নীতিশ স্যারকে দেখালে তিনি শিশুকে আবারও রক্ত দিতে বলেন। এ পর্যন্ত প্রতিটি ডাক্তারই বলেন, ঠিক হয়ে যাবে, কিন্তু কেউই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি।

৪ জুলাই হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. ওমর ফারুক মীর’র কার্যালয়ে অভিযোগ জানাতে গেলে সেসময় তার কক্ষে থাকা কর্মকর্তারা আমাকে পুলিশের ভয় দেখায় এবং আমার হাসপাতাল কর্তৃক প্রদত্ত রোগী ভর্তির ফরম মূল কপি রেখে ফটোকপি দেয়। এসময় আমার বাচ্চাকে ইউরো মেডিক্যাল কনসালটেশনে ডা. জাহেদী হাসান রুমীকে দেখাতে বলে। আমি শিশুকে ডা. জাহেদী হাসান রুমীর চেম্বারে দেখালে তিনি ঢাকার শিশু হাসপাতাল (নিটর, ঢাকা) রেফার করেন। আমরা ৬ জুলাই শিশুকে ঢাকার শেরেবাংলাস্থ পঙ্গু হাসপাতালে দেখালে তারা হাতে সার্জারির মাধ্যমে ডান হাতের ৩টি আঙ্গুল কেটে ফেলতে বলেন। পরর্তীতে ২৯ জুলাই পাবনার শিমলা হাসাপাতালে অপরেশনের মাধ্যমে ৩টি আঙ্গুল কেটে ফেলা হয়।

এসময় তিনি বলেন, আজ আপনার অবুঝ সন্তানের সাথে এমন হলে আপনি কি করতেন? শুধু আমার শিশু সন্তান নয়, পাবনা জেনারেল হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ-চিকিৎসক-নার্সদের এরকম অবহেলায় প্রতিদিন অসংখ্য রোগী দুর্ভোগ ও অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন। কিন্তু তা দেখার কেউ নেই।

তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের নিকট ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]