লক্ষ্মীপুরে বাড়ির পাশের ডোবা থেকে সামিয়া আক্তার (১০) ও তার ভাই তাজমুল হোসেনের (৭) রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৬ জুলাই) দিবাগত রাতে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ তুলেছেন পরিবার।
এর আগে বিকেলে নৌকাযোগে তিন সন্তানকে নিয়ে বাড়ির পাশের একটি দোকানে সদাই কিনতে যান।
হঠাৎ নদীতে জোয়ার আসলে বড় সন্তানকে নিজের সঙ্গে রেখে দিয়ে সামিয়া ও তাজমুলকে বাড়ির উদ্দেশে নৌকায় উঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই তারা নিখোঁজ ছিল। তবে স্থানীয়দের মাঝে ঘটনাটি রহস্যেঘেরা।
সদর উপজেলার চররমনী ইউনিয়নের মেঘনা নদীর জেগে উঠা চর মেঘার নব্যার চরে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কৃষক সুজন ঢালি পরিবার নিয়ে নব্যার চরে বসবাস করেন। সম্প্রতি তার প্রতিবেশী আক্কাছ বেপারী ও বিলকিছদের সঙ্গে তার বিরোধ শুরু হয়। জমি নিয়ে একটি মামলাও চলমান রয়েছে। এর জের ধরে সুজনকে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছিল তারা। সেসব হুমকিতে পরিবার নিয়ে সুজনের আতঙ্কে দিন কাটতো।
শনিবার বিকেলে তিন সন্তান নিয়ে নৌকাযোগে বাড়ির পাশের একটি দোকানে সদাই করতে যান তিনি। এরপর বড় সন্তানকে তার সঙ্গে রেখে দিয়ে সামিয়া ও তাজমুলকে নৌকায় উঠিয়ে দিয়ে বাড়ির উদ্দেশে ছেড়ে দেন। এসময় নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি হতে শুরু করে। ডুবে যায় আশে পাশের বিস্তীর্ণ চর এলাকা। কিছুক্ষণ পর তাদের খোঁজ নিতে গিয়ে একপর্যায়ে বাড়ির পাশের একটি ডোবায় তাদের লাশ মেলে। এতে স্বজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোক নেমে আসে। এসময় নিহতদের শরীরে বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তক্ষরণের চিহ্ন রয়েছে। এতে ঘটনাটি নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়।
নিহতদের বাবা সুজন ঢালি গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করে জানান, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষের লোকজন তার সন্তানদের হত্যা করেছে। এ ঘটনার বিচার দাবি করেন তিনি।
বক্তব্য জানতে আক্কাছ বেপারীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন পলাশ কান্তি নাথ জানান, মরদেহগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড কিনা, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।