জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরছে নিম্ন আয়ের মানুষ


অনলাইন ডেস্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 15-07-2022

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরছে নিম্ন আয়ের মানুষ

নাড়ির টানে বাড়ি ফেরে ঈদ আনন্দ গায়ে মেখে হাতের মুঠোয় জীবন নিয়ে কর্মস্থলে ফিরছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বাস ভাড়া বেশি থাকায় তপ্ত রোদে মালবাহী ট্রাকের যাত্রী হয়ে ফিরছেন শিশু বৃদ্ধ বয়েসের নারী পুরুষরা।

ঝুঁকির কথা স্বীকার করে ট্রাক চালকরাও বলছেন অসহায় মানুষদের কর্মস্থলে পৌঁছাতে ঝুঁকি নিয়েই নিয়ে যাচ্ছেন তারাও। দিনভর বাসের টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছেন বন্যা কবলিত জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা কর্মস্থলে ফেরা মানুষগুলো।

নেত্রকোনা আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, শ্রাবণের সুনীল আকাশের নিচে রোদের প্রখরতায় ঘাম বেয়ে পড়ছে মাটিতে। এরই মাঝে ঈদুল আজহার ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরছেন নাসিমা আক্তার দম্পতি। কলমাকান্দার সিধলী গ্রামের বাড়িতে রেখে যাওয়া সন্তান ও স্বজনদের সাথে ঈদ করতে এসেছিলেন। দুজনেই চাকরি করেন গার্মেন্টসে। হাজার দশেক টাকায় বেতনে। বাড়ি আসার সময় পিকআপ ভ্যানে ৩০০ টাকা ভাড়ায় এসে ট্রাকে যাচ্ছেন ২০০ টাকা করে। অর্ধেক বেতন অফিসে রয়ে গেছে। চাকরি বাঁচাতে হলেও যেতে হবে।

তেমনি ৭০ বছর বয়সী জুলেখাও যাচ্ছেন মেয়ের সাথে। নাতি-নাতনি দেখে রাখেন। কোনো রকমে ছেলে মেয়েদের হাত ধরে টাকে উঠলেও রোদের জ্বালায় বারবার মুছে যাচ্ছিলেন ঘাম। এমন অনেকেই বলছেন কর্ম বাঁচাতেই ফেরার এই যুদ্ধ।

ইব্রাহীম নামের এক যাত্রী বলেন, এই গরমে স্ট্রোক করার মতো অবস্থা জেনেও ট্রাকে উঠেছেন তারা। ঈদে বাড়ি এসে সব টাকা শেষ কোন রকমে কর্মস্থলে গেলেই হলো।

এদিকে এক একটি ট্রাক বোঝাই করে দিলে শ্রমিক রফিকুল মিয়ার মতো ৫ থেকে ৭ জন ১০০০ টাকা পর্যন্ত পাবেন। তাই গাজীপুর চৌরাস্তা ডেকে ডেকে ২০০ টাকা জনপ্রতি যাত্রী তুলে দিচ্ছেন। বাসের টিকিট না পেয়ে ঝুঁকি এবং কষ্ট মাথায় নিয়েই হাসি মুখে ফিরছেন অনেকেই।

এদিকে টিকিট কাউন্টারে টিকিট না পেলেও বাইরে থেকে বেশি দামে টিকিট নিয়ে অনেকেই চলে যেতে পারলেও বিপাকে অধিকাংশ মানুষ।

বাধ্য হয়ে অনেকেই যাচ্ছেন ট্রাক এবং পিকআপ ভ্যানে। এদিকে বাস চালক জামাল উদ্দিন এবং টিকিট মাস্টার আব্দুর রউফ জ্যামের দোহাই দিয়ে সরকার নির্ধারণের চেয়ে কম টাকায় টিকিট বিক্রি করছেন বলে জানান।

শাহজালাল এন্টারপ্রাইজ কাউন্টারের টিকিট মাস্টার আব্দুর রউফ বলেন, কাউন্টারের বাইরে কে কত টাকায় বিক্রি করছে তা জানেন না তারা। তবে এখানে স্বাভাবিক সময়ে ৩০০ টাকা এবং এখন ৩৫০ করে নিচ্ছেন।

তবে জেলা মোটরযান কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মো. সাদেক মিয়া জানান, এক টাকাও বেশি নেয়া হচ্ছে না। যে করেই হোক শনিবার অফিস করাতে মানুষজনকে ঢাকা পৌঁছানের কথা জানালেন তিনি। প্রয়োজনে ঢাকা থেকে বাস আনিয়ে পাঠানো হবে এসব যাত্রী।

আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল সূত্রে জানা গেছে,  ঈদ উপলক্ষে ১০০ যাত্রীবাহী বাস চলাচল করছে নেত্রকোনা ঢাকা সড়কে। তার মধ্যে শাহজালাল ৫০টি এবং গ্রীন লাইনসহ অন্যান্য গেইটলক ৫০ টি। এছাড়াও ৭০টি লোকাল বাস চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে দিনভর অর্ধ শতাধিক ট্রাক যাচ্ছে শত শত যাত্রী বোঝাই করে ছেড়ে যায় নেত্রকোনা।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]