টেলিস্কোপে ধরা দিল নাসার ১৩০০ কোটি বছরের পুরনো গ্যালাক্সি


অথ্যপ্রযুক্তি , আপডেট করা হয়েছে : 12-07-2022

টেলিস্কোপে ধরা দিল নাসার ১৩০০ কোটি বছরের পুরনো গ্যালাক্সি

প্রায় ১,৪০০ কোটি বছর আগের কথা। এক অকল্পনীয় বিস্ফোরণের পরেই বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি হল। এই বিস্ফোরণের প্রচলিত নাম বিগ ব্যাং। তার পরেই তৈরি হল নক্ষত্র, গ্যালাক্সি ইত্যাদি। ব্রহ্মাণ্ডে মহা বিস্ফোরণের ঠিক পর পরই যে নক্ষত্রপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল তারই একটির নাকি হদিশ পেয়ে গেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা। ১৩০০ কোটি বছরের কাছাকাছি সময়কার গ্যালাক্সির ছবি তুলেছে নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ।

সুপ্রীচান গ্যালাক্সি নিয়ে হইচই পড়ে গেছে হোয়াইট হাউসে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, “নাসা অভূতপূর্ব কাজ করেছে। আমেরিকা ও গোটা মানব প্রজন্মের কাছে এটি ঐতিহাসিক দিন।” নাসাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও।

আমাদের সবচেয়ে কাছে থাকা সেই গ্যালাক্সিটির নাম ‘অ্যান্ড্রোমিডা’। যার অন্য নাম ‘এম-৩১’। আকারে তা অনেকটাই বড়। আমাদের মিল্কি ওয়েতে তারার সংখ্যা যেখানে বড়জোর ৮০ হাজার কোটি, সেখানে অ্যান্ড্রোমিডায় তারার সংখ্যা কম করে দেড় লক্ষ কোটি। নাসার খুঁজে পাওয়া গ্যালাক্সি আরও বড়। নক্ষত্রপুঞ্জকে ঘিরে রয়েছে বিশাল জ্যোতির্বলয়। নাসা বলছে, পৃথিবীর জন্মের রহস্য জানতে হয়ত আর বেশি দেরি নেই। ছায়াপথের গোপন কথা, নক্ষত্রমণ্ডলের জন্ম ইতিহাস সবই ধীরে ধীরে বায়োস্কোপের পর্দার মতো চোখের সামনে খুলে যাবে। মহাশূন্য ফুঁড়ে ব্রহ্মাণ্ড তৈরির রহস্য বের করে আনবে নাসার দূরবীন জেমস ওয়েব।

মহাকাশ গবেষণায় নতুন যুগের সূচনা করেছে নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। হাবল টেলিস্কোপের থেকেও এর দূরদৃষ্টি বেশি। হাবল যেখানে আলোক তরঙ্গ নিয়ে নাড়াচাড়া করে, জেমস ওয়েব সেখানে ‘বিগ ব্যাং’ বা মহাবিস্ফোরণের সূত্র খুঁজে আনবে।

পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য বিশাল অ্যান্টেনা রয়েছে জেমস ওয়েবের । শক্তি জোগাবে পেল্লায় সোলার প্যানেল। মহাশূন্যে পৌঁছেই সেগুলি খুলতে থাকবে এক এক করে। হাবল টেলিস্কোপ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে, জেমস ওয়েব একধাপ এগিয়ে সৌরমণ্ডলের কর্তা সূর্যকে প্রদক্ষিণ করবে। সূর্যের চোখা চোখা রশ্মির ফলা থেকে বাঁচতে এতে রয়েছে বিশাল সানশিল্ড। উৎক্ষেপণের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই টেলিস্কোপের সুবিশাল আয়না খুলে যাবে। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি মেলে গ্রহ-নক্ষত্র, ছায়াপথকে খুঁটিয়ে দেখবে জেমস ওয়েব।

প্রায় ১৩০০-১৪০০ কোটি বছর আগে বিগ ব্যাং-এর পর কীভাবে ব্রহ্মাণ্ড তৈরি হয়েছিল সে খবর খুঁজে আনার দায়িত্ব জেমস ওয়েবের। কীভাবে জন্ম-মৃত্যু হয় তারাদের, নক্ষত্রপুঞ্জের জন্ম ইতিহাস, গ্রহদের গোপন কথা, ছায়াপথের ফিসফিসানি সবই জেনে-বুঝে পৃথিবীতে খবর পাঠাবে নাসার দূরবীন। সেই জন্মের পর থেকে মহাকাশে য়ে ক্রমবর্ধমান বিবর্তন হয়ে চলেছে সেই ধারাকে পর পর সাজিয়ে বিশ্লেষণ করবে জেমস ওয়েব।

টাইম মেশিনে চেপেই ফিরে যাবে হাজার হাজার কোটি বছর আগে। সে সময় মহাশূন্যে কী কী ঘটনা ঘটেছিল তা জানার চেষ্টা করবে নাসার দূরবীন। সূর্যের চেয়েও ভারী ও রাক্ষুসে ব্ল্যাক হোলদের চিনবে। সে খবরও পাঠাবে পৃথিবীতে।

নাসার এই দূরবীনই হল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও জটিল প্রযুক্তির স্পেস সায়েন্স অবজারভেটরি। ইনফ্রারেড রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য নিয়ে কাজ করছে। ইনফ্রারেড আলো মানে সামান্য তাপ। ওই সামান্য তাপ শনাক্ত করতে টেলিস্কোপকে রাখতে হবে মাইনাস ২২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। নাসা জানিয়েছে, ৩০ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম ও পরিকল্পনায় এই টেলিস্কোপ তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। নাসার সঙ্গে এই প্রজেক্টে হাত মিলিয়েছে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]