আততায়ীর গুলিতে মৃত্যু হয়েছে জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের। নারা শহরে প্রচার কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখাকালীন পিছন থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তেৎসুয়া ইয়ামাগামি। ৪১ বছর বয়সি ওই ব্যক্তিকে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গেছে, ইয়ামাগামি একজন প্রাক্তন সেনাকর্মী। কী কারণে শিনজোর উপর হামলা চালায় চালিয়েছে ওই ব্যক্তি, তা এখনও জানা যায়নি।
জাপানের অন্যতম জনপ্রিয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শিনজো। তাঁর উপর এই অতর্কিত হামলার ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন জাপানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। জাপানে রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা প্রায় ঘটে না বলেই চলে। বন্দুক ব্যবহারের বিষয়েও অত্যন্ত কড়া প্রশাসন। সেখানে এমন ধরনের ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা নিয়েই তাজ্জব দুনিয়া।
তবে জাপানের এই ঘটনাই প্রথম নয়। এর আগেও বিভিন্ন দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং রাজনীতিবিদদের উপর প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে।
মহাত্মা গান্ধী
১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি নয়াদিল্লির বিড়লা হাউসের প্রাঙ্গণে হত্যা করা হয়েছিল মহাত্মা গান্ধীকে। হিন্দু জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক সংস্থা আরএসএস-এর একজন প্রাক্তন সদস্য নাথুরাম গডসে খুন করেছিলেন তাঁকে।
ইন্দিরা এবং রাজীব গান্ধী
১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর নিজের দেহরক্ষীদের গুলিতে প্রাণ হারান ভারতের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। মায়ের মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ইন্দিরার ছেলে রাজীব গান্ধী। ১৯৯১ সালের ২১ মে চেন্নাইতে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয় তাঁর উপর। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ভারতের সপ্তম প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর।
বেনজির ভুট্টো
২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে রাওয়ালপিন্ডিতে নির্বাচনী প্রচারের কাজে গিয়েছিলেন পাকিস্তানস পিপলস পার্টির জনপ্রিয় নেত্রী বেনজির ভুট্টো। প্রচার চলাকালীন আত্মঘাতী হামলায় প্রাণ হারান ভুট্টো।
মুজিবুর রহমান
১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট। বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। বাড়িতে ঢুকে গুলি চালায় বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সদস্যরা। স্ত্রী, ভাই ও দুই পুত্রবধূ-সহ গুলি করে খুন করা হয় মুজিবুরকে।
জন এফ কেনেডি
১৯৬৩ সালে টেক্সাসের ডালাসে গাড়িতে থাকাকালীন আমেরিকার তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জন ফিটজেরাল্ড কেনেডির উপর দু’বার গুলি চালায় লি হার্ভে অসওয়াল্ড নাম এক ব্যক্তি। মৃত্যু হয় কেনেডির। ঘটনার দু’দিন পর একজন নাইট ক্লাবের মালিকের গুলিতে মারা যায় কেনেডির খুনি অসওয়াল্ডও। অনেকেই এই ঘটনার পিছনে বৃহত্তর চক্রান্তের আভাস পেলেও আদতে কিছুই প্রমাণ করা যায়নি।
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র
১৯৬৮ সালে প্রায় একইভাবে খুন হন আমেরিকার নাগরিক অধিকার কর্মী ও মন্ত্রী মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র। মোটেলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকার সময় তাঁর উপর গুলি চালায় জেমস আর্ল রে নামক এক আততায়ী।
আব্রাহাম লিঙ্কন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি ছিলেন আব্রাহাম লিঙ্কন। ১৮৬৫ সালের ১৪ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসির ফোর্ড থিয়েটারে নাটক দেখছিলেন তিনি। সঙ্গে কোনও নিরাপত্তারক্ষী ছিল না তখন। জন উইলক্স বুথ নাম এক ব্যক্তি পিছন থেকে উঠে এসে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালায় লিঙ্কনের মাথায়। সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যু হয় তাঁর।