'মা কালী সিগারেট টানছেন'- পরিচালক লীনা মনিমেকালাইের তথ্যচিত্রের পোস্টারে এমন দৃশ্য ধরা পড়েছে। যে পোস্টারকে অসংবেদনশীল আখ্যা দিয়ে হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাগেবে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে বিষয়টি ইতিমধ্যেই সেই গণ্ডি পার করে রাজনীতির আঙিনায় ঢুকে পড়েছে। লীনা-র ওই বিতর্কিত পোস্টার টুইট ইতিমধ্যেই মুছে দিয়েছে টুইটার কর্তৃপক্ষ, এমনকী কানাডার টরোন্টোতে অবস্থিত ‘আগা খান' মিউজিয়ামে প্রদর্শিত লীনার পোস্টারও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দেশের নানান প্রান্তে লীনার নামে দায়ের হয়েছে এফআইআর। প্রতি মুহূর্তে হুমকি পাচ্ছেন এই তামিল পরিচালক। এতো কিছুর মাঝেই বৃহস্পতিবার টুইটারে নতুন ছবি পোস্ট করলেন লীনা। এই ছবির সঙ্গে একটি মাত্র শব্দ যোগ করেছেন তিনি-(অন্য কোথাও)। এই ছবিতে কী রয়ছে? তাতে দেখা যাচ্ছে ভারতের কোনও এক শহরতলি বা গ্রামের রাস্তায় শিব-দূর্গার বেশধারী দুই বহুরূপী ধূমপান করছে। গ্রামে-গঞ্জের খুব পরিচিত চিত্র এটি।
লীনার এই টুইট বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলেছে, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। নেটিজেনদের একাংশ ক্ষুব্ধ লীনার এই ছবি দেখে, তাঁরা লিখেছেন অহেতুক দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা এটি। কেউ লিখেছেন, বিতর্ক জিইয়ে রাখতে এমন করছেন পরিচালক। তবে অনেকেই বলেছেন, এত আক্রমণ সত্ত্বেও অকুতোভয় পরিচালক আত্মপক্ষ সমর্থনেই ওই টুইট করেছেন।
ট্রোলারদের জবাব দিয়ে তিনি এই ছবি রি-টুইট করে ফের লেখেন, ‘বিজেপির বেতনভুক ট্রোল আর্মিদের কোনও ধারণাই নেই গ্রামীণ ভারতের যাত্রা শিল্পীরা কী ভাবে তাঁদের অনুষ্ঠানের পর অসবরযাপন করেন। এই ছবিটি আমার ফিল্মের অংশ নয়। বরং গ্রামীণ ভারতের একটি সাধারণ রাস্তার ছবি। এটা গ্রামীণ সংস্কৃতি, যাকে নিজেদের হিংসাত্মক মনোভাব দিয়ে ধ্বংস করে দিতে চায় সঙ্ঘ পরিবার। হিন্দুত্ব কখনও ভারত হতে পারে না।’
বিতর্ক প্রসঙ্গে এক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে লীনা জানিয়েছেন, ‘মনে হচ্ছে ভারত- বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্র থেকে সবচেয়ে বিরাট হেট মেশিনে পরিত হয়েছে। সকলে আমাকে সেন্সার করতে চাইছে। আমার কোথাউ নিজেকে এই মুহূর্তে সুরক্ষিত মনে হচ্ছে না’।
প্রত্যেক ব্যক্তির নিজের মতো করে ভগবানকে উপসনা করবার অধিকার আছে বলে মনে করেন লীনা। তিনি আরও জানান, তিনি তামিলনাড়ুতে বড় হয়েছেন। তাঁর সংস্কৃতিতে বলে মা কালী পাঁঠার রক্তে রান্না করা মাংস খান, দেশি মদ পান করেন এবং বিড়ি টানেন। নিজের সংস্কৃতির বাইরে গিয়ে কোনও কাজ করেননি তিনি, এমনই দাবি লীনার।