স্তন ক্যান্সারের ১০ সত্য, জেনে নিন


অনলাইন ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 27-06-2022

স্তন ক্যান্সারের ১০ সত্য, জেনে নিন

মহিলাদের ক্ষেত্রে সম্ভবত স্তন ক্যান্সারই সবচেয়ে ভীতিকর রোগ। কারণ এটা বেশি ঘটে এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এর কারণ অজানা রয়ে যায়। তবে বর্তমান লেখাটিতে এমন কিছু বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে, যা আপনাকে রোগটি সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে। আর এটা থেকেই আপনি খুঁজে পাবেন প্রতিরক্ষার উপায়। স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে এমন ১০টি বিষয় বা সত্য কথা হলো:

১. স্তন ক্যান্সার সাধারণ রোগ, তবে হূদরোগের মতো সাধারণ নয়- যদিও আমেরিকার মহিলাদের মধ্যে তাদের জীবদ্দশায় প্রতি ৯ জনের মধ্যে একজনের স্তন ক্যান্সার ধরা পড়ে, তবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয় এর চেয়ে বেশি।

২. স্তন ক্যান্সার এক ঘাতক রোগের নাম। আমেরিকার ক্যান্সার সোসাইটির এক জরিপে দেখা যায়, ২০০০ সালে খোদ আমেরিকাতেই স্তন ক্যান্সারে মৃত্যু হয়ে ৪০ হাজার ৮০০ জন মহিলা। আমেরিকার মহিলাদের ক্যান্সারে মৃত্যু হওয়ার দ্ব্বিতীয় প্রধান কারণ হলো স্তন ক্যান্সার। প্রথম প্রধান কারণ ফুসফুসের ক্যান্সার। এই ঘাতক রোগ স্তন ক্যান্সারে মৃত্যুবরণকারী মহিলাদের বয়স ৪০-৫৫ বছর।

৩. প্রত্যেক মহিলারই স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে- কিছু কিছু বিষয় মহিলাদের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এসব বিষয়ের মধ্যে রয়েছে ৫০ বছরের পর মেনোপজে প্রবেশ কিংবা কোনো সন্তান না নেয়া। তবে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত দুই-তৃতীয়াংশ মহিলারই রোগের কোনো ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় জানা যায় না।

৪. সাফল্যজনক চিকিৎসার জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়ই সর্বোত্তম পন্থা- গবেষকদের মতে, প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় এবং চিকিত্সা করালে প্রায় ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগীর বেঁচে থাকার মেয়াদ পাঁচ বছর বেড়ে যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়ের জন্য তাই ২০ বছর বয়স থেকেই মহিলাদের প্রতি মাসে নিজের স্তন নিজে পরীক্ষা করে দেখতে হবে। চিকিৎসকের কাছ থেকে আপনাকে জেনে নিতে হবে কিভাবে আপনি স্তন পরীক্ষা করবেন। ৪০ বছর এবং তার বেশি বয়স্ক মহিলাদের নিজের স্তন নিজে পরীক্ষা করাসহ বছরে একবার ম্যামোগ্রাম করাতে হবে। এসব পরীক্ষার মাধ্যমেই কেবল সম্ভব প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্তকরণ।

৫. ম্যামোগ্রাম স্তন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আপনাকে সাহায্য করে- গবেষণায় দেখা গেছে, ৫০ বছর বয়স্ক এবং তার চেয়ে বেশি প্রত্যেক মহিলার নিয়মিত ম্যামোগ্রাম করালে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পরিমাণ এক-তৃতীয়াংশ কমে যায়। তবে পরীক্ষাটি ব্যয়বহুল এবং এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞও কম। সব জায়গায় এ পরীক্ষার সুযোগ নেই।

৬. প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়ের স্তরগুলো অনুশীলন করতে খুব বেশি দেরি করবেন না- আপনার বয়স যত বাড়বে তত বাড়তে থাকবে আপনার স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি। ৪০ বছর বয়সের পর এই ঝুঁকি ব্যাপকভাবে বেড়ে যায় এবং ৫০ বছরের বেশি বয়সে ৮০ শতাংশ মহিলারই স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার মতো ঘটনা দেখা যায়। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়ের স্তরগুলো শিখে নিতে এবং তা অনুশীলন করতে দেরি করবেন না। যাদের বয়স বেশি হয়ে গেছে, তারাও আজ থেকেই অনুশীলন করা শুরু করুন। ম্যামোগ্রাম, ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা এবং নিজের স্তন নিজে পরীক্ষা করার প্রক্রিয়া ৭০ ও ৮০ বছর বয়সেও চালিয়ে যান।

৭. স্তন ক্যান্সার যেকোনো সময় আবার হতে পারে- একজন মহিলা কত আগে এ রোগের চিকিত্সা করিয়েছেন সেটা কোনো ব্যাপার নয়। আবার যেকোনো সময় রোগটি একই স্তনে কিংবা অন্য স্তনে দেখা দিতে পারে। তবে রোগটি যদি পুনরায় দেখা না দেয় তাহলে আপনার জীবন আরো দীর্ঘ হবে।

৮. সঠিক খাওয়াদাওয়া এবং ব্যায়াম স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়- যদিও স্বল্পচর্বি, উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার এবং নিয়মিত ব্যায়াম আপনাকে রোগ থেকে রক্ষা করার নিশ্চয়তা দেয় না তবে এসব খাবার ও ব্যায়াম আপনার স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

৯. ধূমপান না করলে আপনার স্তনের উন্নতি ঘটে- যদিও বেশির ভাগ গবেষণায় দেখা যায়নি ধূমপান স্তন ক্যান্সারের একটি কারণ, তবুও অনেক গবেষক লক্ষ করেছেন, ধূমপানের সাথে স্তন ক্যান্সারের একটি সম্পর্ক রয়েছে। কিছু কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, রোগ নির্ণয়ের পর কেবল ধূমপানের কারণেই তা সেরে উঠতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই স্তনের উন্নতির জন্য ধূমপান না করাই উত্তম।

১০. পুরুষদেরও স্তন ক্যান্সার হতে পারে – ন্যাশনাল অ্যালিয়েন্স অব ব্রেস্ট ক্যান্সার অর্গানাইজেশনের মতে, ২০০০ সালে ১ হাজার ৪০০ পুরুষের স্তন ক্যান্সার ধরা পড়েছে। প্রতি বছর আমেরিকায় স্তন ক্যান্সারে প্রায় ৪০০ জন পুরুষ মারা যায়।

রাজশাহীর সময়/এএইচ


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]