মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের গর্ভপাতের রায়কে আদালত এবং দেশের জন্য দুঃখজনক বলে মন্তব্য করলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, এই রায় আমেরিকাবাসীর সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। বিশেষ করে নারীদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করেছে যা কখনওই কাম্য নয়।
শুক্রবার এক রায়ে আমেরিকার শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, গর্ভপাতের অধিকার সংবিধান দেবে না। তা দেওয়া হবে কি হবে না, তা স্থির করবে স্থানীয় প্রদেশের প্রশাসন। সুপ্রিম কোর্টে এই রায়ের একটি খসড়া প্রস্তাব প্রকাশ্যে আসার পরেই দেশে জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। জানা গেছে, ২৬টি প্রদেশ এই রায় মেনে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি বিভিন্ন প্রদেশের বিবেচনার উপর ছেড়ে দিয়েছে।
রায় ঘোষণার পরেই দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, “চরম ও ভয়ঙ্কর পথ বেছে নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। নারীদের সংবিধান প্রদত্ত অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই রায় মর্মান্তিক ভুল, যা দেশকে আরও ১৫০ বছর পিছিয়ে নিয়ে গেল।” বাইডেন আরও বলেন, এই রায় শুধু নারীদের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে তাই নয়, সমকামীদের অধিকারও ক্ষুণ্ণ হতে চলেছে।
গর্ভপাতের ব্যাপারে আমেরিকায় একপ্রকার সাংবিধানিক অধিকার ছিল গত পঞ্চাশ বছর ধরে। ১৯৭৩ সালে রো বনাম ওয়েড মামলার ঐতিহাসিক রায়ে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট তাদের দেশের সাংবিধানিক ধারা ব্যাখ্যা করেছিল গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে। বলা হয়েছিল, গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত নেওয়া এক জন মহিলার সাংবিধানিক অধিকার। সেই অধিকার দেশজুড়ে আইনসিদ্ধ থাকবে।
৫০ বছর পর নাটকীয় ভাবে সেই রায়ই বদলে দিল মার্কিন সর্বোচ্চ আদালত। শুক্রবার ঐতিহাসিক শুনানির পর সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, রো বনাম ওয়েড মামলায় মার্কিন সংবিধানের অপব্যাখ্যা হয়েছে। ওই রায়ে বলা হয়েছিল, গর্ভের ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত করানো যেতে পারে। কিন্তু সংবিধানে এমন কোথাও কিছু বলা নেই যে এই অধিকার দেওয়া যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৩ সালে রায় ঘোষণার সময়ে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, মার্কিন সংবিধানে মহিলাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার দেওয়া হয়েছে। সুতরাং কোনও মহিলা চাইলে গর্ভপাত করাতেই পারেন।