অসমের ভয়াবহ বন্যায় মৃত বেড়ে ৮১


রিয়াজ উদ্দিন: , আপডেট করা হয়েছে : 22-06-2022

অসমের ভয়াবহ বন্যায় মৃত বেড়ে ৮১

অসমে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। সোমবার ,একদিনে রাজ্যে মারা গেছেন আরও অন্তত ১১ জন। এ নিয়ে অসমের বন্যা ও ভূমিধসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১। বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছেন রাজ্যের ৩২ জেলার প্রায় ৪৭ লাখ বাসিন্দা। প্লাবিত হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার গ্রাম। 

বন্যার কারণে তলিয়ে গেছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, ভেসে গেছে গৃহপালিত পশু। রাজ্যের বিভিন্ন অংশে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ৩২ জেলার অন্তত ৪৫ লক্ষের বেশি মানুষ বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এদিকে অসমের সামগ্রিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রও। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “অসমের সামগ্রিক বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে একটি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলকে অসমে পাঠানো হবে। দলের সদস্যরা অসম এবং মেঘালয় দুটি রাজ্যের বন্যার সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন।“

বর্ষায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় দুটি রাজ্য। এদিকে অসম বন্যা নিয়ে এক টুইট বার্তায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, অসমের বন্যা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ইতিমধ্যেই সেখানে এনডিআরএফ দল এবং সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুপুরী অসমের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এর আগে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কাছ থেকে রাজ্যের ব্যপারে খোঁজ খবর নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

আসামের সাতটি জেলায় টানা চার দিন ধরে বন্যায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে নামানো হয়েছে সেনা। রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা দফতর সূত্রের খবর গত কয়েকদিনে বন্যায় আটকে পড়া প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জাতীয়সড়ক এবং পাঁচটি রাজ্যসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত । বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। লামডিং-বদরপুর এলাকায় ৫০টির বেশি স্থানে ভুমিধসের কারণে ত্রিপুরা, মণিপুর, মিজোরাম এবং দক্ষিণ আসামের বিস্তীর্ণ অংশে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

অসমের পাশাপাশি মেঘালয়েও বন্যার কারণে এখনও পর্যন্ত ২৮ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিদ্যুৎ ও মোবাইল সংযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আসাম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, পাঁচ হাজারের বেশি গ্রামে প্রায় ৪৮ লক্ষ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ শিবিরে রয়েছে ২ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। সোমবার কাছাড়, দাররাং, ডিব্রুগড়, হাইলাকান্দি, হোজাই, কামরুপ, লখিমপুর ও নগাঁও জেলায় বন্যার জলে ডুবে দুই শিশুসহ ১০ জন মারা গেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় অসমে যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, তারমধ্যে রয়েছে ২ পুলিশ কর্মী। এমনই জানানো হয়েছে বিপর্য মোকাবিলাকারী বাহিনীর তরফে। জানা যাচ্ছে, কপিলি নদীর জল বাড়তে শুরু করায় স্থানীয়দের উদ্ধার করছিলেন ওই ২ পুলিশ কর্মী। উদ্ধার কাজের সময় আচমকা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তাঁদের মৃত্যু হয়। অসামের বিশেষ ডিজিপি জিপি সিং এক টুইট বার্তায় এখবর জানান। প্রশাসন সূত্রে খবর, ৩২টি জেলা বন্যা কবলিত। ব্রহ্মপুত্র নদের জলস্ফীতির পর ৫ হাজারের বেশি গ্রাম প্লাবিত। বিপুল ক্ষতির মুখে চাষের। প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর চাষের জমি এখন পানিতে ডুবে রয়েছে।



Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]